বাজেটে এবার কাঁচা কাজুবাদাম আমদানিতে শুল্কহার কমানো হবে বলে আমরা উদ্যোক্তারা আশায় ছিলাম। তবে বাজেট ঘোষণার পর হতাশ হয়েছি। কারণ, বাজেটে কাঁচা কাজুবাদামের চেয়ে প্রস্তুত কাজুবাদামের শুল্কহার বেশি কমানো হয়েছে।
বাজেটের আগে প্রস্তুত কাজুবাদামের মোট করভার ছিল ৫৮ দশমিক ৬০ শতাংশ। সেখান থেকে কমিয়ে তা ১৮ দশমিক ৪০ শতাংশ করা হয়েছে। মূসক নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য কাঁচা কাজুবাদাম আমদানিতে করভার ছিল প্রায় ৩৫ শতাংশ। সেটি কমিয়ে ১৪ দশমিক ২০ শতাংশ করা হয়েছে। অর্থাৎ সবচেয়ে বেশি কমানো হয়েছে প্রস্তুত কাজুবাদামের করভার।
এখন বিদেশ থেকে কাঁচা কাজুবাদাম আমদানিতে প্রতি কেজিতে খরচ পড়ে ১২৫- ১৩৮ টাকা। সাড়ে চার কেজি কাজুবাদামের খোসা ছাড়ানোসহ সাত ধাপ পেরিয়ে এক কেজি খাওয়ার উপযোগী কাজুবাদাম পাওয়া যায়। নতুন শুল্কহারের ফলে প্রতি কেজি কাজুবাদাম তৈরিতে কারখানাগুলোর ৭৭৩-৮৫০ টাকা খরচ পড়বে। আর আমদানিকারকেরা সরাসরি আমদানি করলে খরচ পড়ছে ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা। এর অর্থ কাঁচামাল আমদানি করে কারখানা চালু করলে লোকসান গুনতে হবে।
দেশে কাজুবাদামের চাহিদা বাড়তে থাকায় ছয় বছর আগে নীলফামারীতে কাজুবাদাম কারখানা গড়ে তুলি। চট্টগ্রামের গ্রিনগ্রেইন কেশু ইন্ডাস্ট্রিজের পর এটি ছিল দেশের দ্বিতীয় কারখানা। গত কয়েক বছরে দেশে অনেকগুলো কারখানা গড়ে উঠেছে। এ খাতে প্রতিযোগিতা এত বেড়েছে যে দেশীয় ফলন আমরা চাহিদামতো পাচ্ছি না। এর মধ্যে কাঁচা কাজুবাদাম রপ্তানি হয়েছে। তাতে সংকট আরও বেড়েছে। চাহিদামতো দেশীয় ফলন না পাওয়ায় আমাদের কারখানা গত বছরের নভেম্বর থেকে বন্ধ রয়েছে। এখন নতুন শুল্কহারে আমদানি করে পোষানো যাবে না। অথচ প্রতি মাসে ১৪ টন করে কাজুবাদামের রপ্তানি আদেশ রয়েছে আমাদের। কারখানা বন্ধ অবস্থায় রপ্তানি শুরুর কথা এখন ভাবা যাচ্ছে না।
দেশে এখন ১২টির মতো কাজুবাদাম প্রক্রিয়াজাত কারখানা রয়েছে। বেশির ভাগই কাঁচামালের অভাবে বন্ধ রয়েছে। এগুলো চালু করতে দুটো উদ্যোগ নিতে হবে। এক. কাঁচা কাজুবাদামের শুল্ককর ন্যূনতম পর্যায়ে নামিয়ে আনতে হবে। দুই. প্রস্তুত কাজুবাদাম আমদানিতে রাজস্ব ফাঁকি বন্ধ করতে হবে।