ফারমার্স ব্যাংকের মতো পুনর্গঠন চায় পিপলস লিজিংয়ের আমানতকারীরা
আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে ব্যর্থ হয়ে ফারমার্স ব্যাংক যেভাবে পদ্মা ব্যাংক হিসেবে পুনর্গঠন হয়েছে, ঠিক একই প্রক্রিয়ায় পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের পুনর্গঠন চান আর্থিক প্রতিষ্ঠানটির আমানতকারীরা। বাংলাদেশ ব্যাংক নিবন্ধিত এই আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানতকারীরা দীর্ঘদিন ধরে টাকা ফেরত পাচ্ছেন না। একপর্যায়ে অবসায়নের উদ্যোগ নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক, পরে আদালতের নির্দেশে পুনর্গঠন শুরু হয়েছে।
আজ জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন আমানতকারীরা। এ সময় তাঁরা পিপলস লিজিং তদারকিতে ব্যর্থতার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিচার ও পিপলস লিজিংয়ের অন্যতম মালিক প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারকে দেশে ফিরিয়ে এনে টাকা উদ্ধারের দাবি জানায়। টাকা ফেরত পেতে সরকারের উচ্চপর্যায়ের হস্তক্ষেপ চান পিপলস লিজিংয়ের আমানতকারীরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আমানতকারীদের পক্ষে প্রধান সমন্বয়ক আতিকুর রহমান আতিক বলেন, ‘আমরা মনে করি, বাংলাদেশ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ একান্ত প্রয়োজন। পিপলস লিজিংয়ে ব্যক্তি ও ক্ষুদ্র আমানতকারীদের আমানতের অর্থ দ্রুত ফিরিয়ে দিয়ে তাকে রক্ষা করুন।’
আতিকুর রহমান আতিক আরও বলেন, ‘বর্তমান সরকার যেভাবে ফারমার্স ব্যাংকের অবসায়ন না করে পদ্মা ব্যাংক নামে পুনর্গঠন করেছে এবং বিসিআই ব্যাংককে অবসায়ন না করে ইস্টার্ণ ব্যাংক নামে পুনর্গঠন করে গ্রাহকের আমানত ফিরিয়ে দিয়েছে, ঠিক সেভাবেই পিপলস লিজিং পুনর্গঠনে সহযোগিতা করে দ্রুত গ্রাহকদের অর্থ ফেরত প্রদান করে সরকার তার নিজের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে এবং নিরীহ আমানতকারীদের অর্থ ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করবে বলে আমরা মনে করছি।’
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, পিপলসে জমানো টাকার সুদ থেকে অনেক বয়স্ক আমানতকারী সংসার খরচ চালাতেন; আবার অনেকে সন্তানদের শিক্ষা খরচ দিতেন বা চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহ করতেন। এখন সুদ পাওয়া যাচ্ছে না, আসলও মিলছে না। এর মধ্যে টাকা ফেরত না পেয়ে অনেকে মৃত্যুবরণ করেছেন। ক্যানসারে আক্রান্ত অনেকে চিকিৎসা করাতে পারছেন না। টাকা ফেরত পেতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও পিপলস লিজিংয়ে যোগাযোগ করেও সমাধান মিলছে না।
সংবাদ সম্মেলন শেষে আমানতকারীরা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন। এ সময় তাঁরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী, নির্বাহী পরিচালক শাহ আলমসহ জড়িতদের বিচার দাবি করেন। পিপলস লিজিং লুটের সময় তদন্ত সংস্থাগুলোর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তাঁরা।