ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ এখন ৭.৬৬%

ব্যাংক

করোনাভাইরাসের কারণে ঋণ পরিশোধ না করার প্রবণতা বেড়েছে ঋণগ্রহীতাদের মধ্যে। আবার বাংলাদেশ ব্যাংকের করা নিয়মের কারণে গত বছরজুড়ে ঋণ শোধ না করলেও কেউ খেলাপি হননি। এতেই দেশের ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ কমে ৭ দশমিক ৬৬ শতাংশে নেমে এসেছে। এর আগে কখনো খেলাপি ঋণ এত কম ছিল কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে ঋণ ছিল ১১ লাখ ৫৮ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৮৮ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। সেই হিসাবে ঋণের ৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ খেলাপি। খেলাপি ঋণের মধ্যে ৪২ হাজার ২৯২ কোটি টাকা রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর।

এদিকে খেলাপি ঋণ এত কমে যাওয়ার ব্যাংকারদের মধ্যে যতটা না স্বস্তি দেখা যাচ্ছে, তার চেয়ে বেশি অস্বস্তি কাজ করছে। কারণ, করোনা অনেককেই ঋণ পরিশোধে অনাগ্রহী করে তুলেছে। ব্যাংকাররা বলছেন, নতুন করে কোনো ঋণ খেলাপি হয়নি। আর খেলাপি থেকে কিছু আদায় হয়েছে। এতেই খেলাপি ঋণ কমে এসেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে ঋণ ছিল ১১ লাখ ৫৮ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৮৮ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। সেই হিসাবে ঋণের ৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ খেলাপি। খেলাপি ঋণের মধ্যে ৪২ হাজার ২৯২ কোটি টাকা রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর। বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ ৪০ হাজার ৩৬১ কোটি টাকা। আর বিশেষায়িত ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ২ হাজার ৩৮ কোটি টাকা ও বিদেশি ব্যাংকের ৪ হাজার ৬১ কোটি টাকা।

গত বছরের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৯৪ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা, যা ওই সময়ে মোট ঋণের ৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ। আর জুন শেষে ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৯৬ হাজার ১১৭ কোটি টাকা, যা ওই সময় পর্যন্ত বিতরণ করা ঋণের ৯ দশমিক ১৬ শতাংশ।

খেলাপি ঋণ এত কমে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক চেয়ারম্যান আনিস এ খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিয়ম করে কোনো ঋণকে খেলাপি হতে দেওয়া হয়নি। তাই খেলাপি ঋণ কম। এতে কোনো স্বস্তি নেই। যদি প্রকৃতপক্ষে খেলাপি ঋণ এত কম হতো, তাহলে ভালো লাগত। এখন যেসব ঋণ আদায় হবে না, তার জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে।’

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) পরিচালিত ‘ব্যাংকিং খাত তদারকি ও খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণ: বাংলাদেশ ব্যাংকের সুশাসনের সমস্যা ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক সাম্প্রতিক এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণ, ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা রক্ষা ও আমানতকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণে বাংলাদেশ ব্যাংকের তদারকি কার্যক্রমের ক্ষেত্রে দুই ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তার একটি হলো বাহ্যিক প্রভাব, অন্যটি অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ।