সোনারগাঁয়ে এবার জামদানি শাড়ি বিক্রি বেশ বেড়েছে

ফাইল ছবি

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার জামদানিপল্লিগুলো এখন রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের এলাকার ক্রেতাদের পদচারণে মুখর। ফলে জামদানি কারখানার মালিক ও কারিগরদের মুখে এবারের ঈদ সামনে রেখে হাসি ফুটেছে। করোনার কারণে দুই বছর মালিকেরা যেমন লোকসানে ছিলেন, তেমনি কারিগরদের অনেকেই বেকার হয়ে পড়েছিলেন, আবার কারও কাজ কমে গিয়েছিল।

সরেজমিনে সোনারগাঁয়ের বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের জামদানিপল্লি এবং উপজেলার সাদিপুর ও জামপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন জামদানিপল্লিতে মালিক ও কারিগরদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ বছর রমজানের প্রথম থেকেই গত দুই বছরের তুলনায় জামদানি দ্বিগুণ বিক্রি হয়েছে। তাঁরা প্রথম আলোকে জানান, রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গার ক্রেতারা এসে নিজেদের পছন্দের শাড়ির কথা জানিয়ে অগ্রিম মূল্য দিয়ে যান। এরপর তাঁদের চাহিদা অনুযায়ী কারিগরেরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই জামদানি শাড়ি তৈরি করেন।

সোনারগাঁয়ের সাদিপুর ও জামপুর ইউনিয়নে ৫৫০টি জামদানি তাঁত রয়েছে। এ ছাড়া পাশের রূপগঞ্জ উপজেলার ১৭টি গ্রামে ৭৫০টি তাঁত রয়েছে। এ বছর এসব এলাকার বিভিন্ন জামদানিপল্লিতে কয়েক কোটি টাকার শাড়ি বিক্রি হয়েছে।

সোনারগাঁয়ের বরগাঁও গ্রামের জামদানি তাঁতি আমির হোসেন জানান, ঈদ সামনে রেখে এ বছর শাড়ির চাহিদা বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।

জামদানি শাড়ি কারখানার মালিক আবু তাহের জানান, সোনারগাঁ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের জামদানিপল্লি ছাড়াও উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নে তাঁর ২০টি তাঁত রয়েছে। তাঁর অধীনে ৫০ জন কারিগর শাড়ি বুননের কাজ করেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের তৈরি শাড়ির ক্রেতা মূলত ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ শহরের বাসিন্দা। তাঁরা নিজেদের পছন্দের ডিজাইন ও রংয়ের শাড়ির অর্ডার করে যান। এরপর নিদি৴ষ্ট সময়ের মধ্যেই সেই শাড়ি তৈরি করে খবর দেওয়া হলে ক্রেতারা কারখানায় এসে নিয়ে যান।

কয়েকটি কারখানার মালিক ও কারিগরদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, সোনারগাঁয়ের জামদানিপল্লিগুলোয় তৈরি হওয়া শাড়ির দাম প্রকারভেদে সাধারণত ১০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে এ বছর জামদানির প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি দেখা গেছে। ফলে সবার মুখে হাসি ফুটেছে।

সোনারগাঁয়ের বাইশটেকী গ্রামের জামদানিপল্লিতে ঢাকার শান্তিনগরের শারমিন সুলতানার সঙ্গে কথা হয়। তিনি জানান, প্রতিবছরই পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজনের জন্য পছন্দের রং ও ডিজাইনের শাড়ি তৈরি করিয়ে নেন।

সাদিপুর ইউনিয়নের আমগাঁও গ্রামের জামদানিপল্লিতে শাড়ি কিনতে আসা নারায়ণগঞ্জের আলমগীর হোসেন জানান, প্রতিবছর ঈদ
সামনে রেখে তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সরাসরি জামদানিপল্লিতে এসে শাড়ির অর্ডার করে নিয়ে যান।