সাক্ষাৎকার কোরবানির চামড়ার বাণিজ্য
চামড়া কেনাবেচা ভালো হবে
পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে দেশের বিভিন্ন স্থানে কাঁচা চামড়ার আড়তদার-ব্যবসায়ীরা চামড়া সংগ্রহের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। চামড়া যাতে নষ্ট না হয়, সে জন্য দ্রুত চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন তাঁরা। সার্বিক বিষয় নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন দেশের তিন অঞ্চলের তিনজন ব্যবসায়ী। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন প্রণব বল, মনিরুল ইসলাম ও শফিকুল ইসলাম।
প্রশ্ন :
প্রথম আলো কোরবানির পশুর চামড়া সংগ্রহে ট্যানারিগুলোর প্রস্তুতি কেমন?
শাহীন আহমেদ যেসব ট্যানারি ব্যবসা করছে, তারা সবাই প্রস্তুতি নিয়েছে। চামড়ায় সঠিক সময়ে লবণ দিয়ে সংরক্ষণের জন্য সব মোকাম ও আড়তে লবণ সংগ্রহ করা আছে। পাশাপাশি চামড়া ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যাপারী ও আড়তদারেরাও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। ইতিমধ্যে চামড়া কেনার জন্য প্রয়োজনীয় টাকা আমরা তাঁদের দিয়েছি। সব মিলিয়ে আমরা মনে করি, গত দুই বছরের তুলনায় চলতি বছর চামড়া সংগ্রহ, সংরক্ষণ, ক্রয়-বিক্রয় ভালো হবে।
প্রশ্ন :
প্রথম আলো সাভারের হেমায়েতপুরের চামড়া শিল্পনগরে প্রস্তুতি কেমন?
শাহীন আহমেদ চামড়া শিল্পনগরে প্রস্তুতি ভালো। সেখানকার কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোনাগারের (সিইটিপি) তিনটি ইপিএস এক সপ্তাহ করে বন্ধ রেখে সংস্কার করা হয়েছে। এতে সক্ষমতা বাড়বে। কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য একটি পুকুর খনন করা হয়েছে। আরও কিছু কারিগরি প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে এবার ভালোই হবে বলে আশা করা যায়।
প্রশ্ন :
প্রথম আলো গরুর চামড়ার যে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে, সেটি কি আরও বাড়ানোর সুযোগ ছিল?
শাহীন আহমেদ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রাসানিকের দাম ২৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। পাশাপাশি কনটেইনার ভাড়া কয়েক গুণ বেড়েছে। সব মিলিয়ে প্রক্রিয়াজাত চামড়ার উৎপাদন যে হারে বেড়েছে, সে হারে বিদেশি ক্রেতারা দাম বৃদ্ধি করেননি। সে কারণে আমরা চলতি বছর চামড়ার দাম বৃদ্ধি না করতে অনুরোধ করেছিলাম। তারপরও লবণযুক্ত গরুর চামড়া প্রতি বর্গফুটে ৭ টাকা ও খাসির চামড়ায় ৩ টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। আমাদের মনে হচ্ছে, দাম বেশি হয়েছে। তারপরও সার্বিক পরিস্থিতি বিচেনায় নিয়ে আমরা বাড়তি দাম মেনে নিয়েছি।
প্রশ্ন :
প্রথম আলো মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমানো সম্ভব?
শাহীন আহমেদ প্রান্তিক পর্যায়ে কোরবানিদাতারা যেন সঠিক সময়ে লবণ দিয়ে চামড়া সংরক্ষণ করেন, সে জন্য প্রচার–প্রচারণা চালাচ্ছে সরকার। লবণ দিয়ে চামড়া সংরক্ষণ করলেই কিন্তু মধ্যস্বত্বভোগীরা সস্তায় চামড়া কেনার সুযোগ পাবেন না। গরুর চামড়ায় ছয়-সাত কেজি লবণ দিতে হবে, খাসির চামড়ায় দেড় থেকে দুই কেজি লবণ দিলেই চলে। এই চামড়া ভাঁজ করে দুই মাস রেখে দিলেও সমস্যা হবে না। সঠিক দামে বিক্রি করতে শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কোরবানির প্রথম সাত দিন ঢাকার বাইরের চামড়া ঢুকতে দেবে না। ঢাকার চামড়াও বাইরে যেতে দেওয়া হবে না। সিদ্ধান্তটি খুবই ভালো হয়েছে। কারণ, পুরান ঢাকার পোস্তায় ঈদের এত পরিমাণ চামড়া চলে আসে যে তা লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করা তাদের সক্ষমতার বাইরে।