বকেয়া মজুরি ও কারখানা খুলে দেওয়ার দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের ফুটপাতে অবস্থান নিয়েছেন ঢাকা ইপিজেডে অবস্থিত বিদেশি মালিকানাধীন এ ওয়ান (বিডি) লিমিটেডের শ্রমিকেরা। এই কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে অংশ নিয়েছেন বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির নেতা–কর্মীরা।
এ ওয়ানের শ্রমিকেরা দাবি আদায়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আজ সোমবার সকালে পূর্বঘোষিত অবস্থান কর্মসূচি পালন শুরু করেন। এ কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার, সাধারণ সম্পাদক জুলহাসনাইন বাবু, দপ্তর সম্পাদক মুসা কলিমুল্লাহ, সমাজকল্যাণ সম্পাদক প্রদীপ রায় প্রমুখ।
তাসলিমা আখতার বলেন, শ্রমিকদের অনিশ্চয়তার মধ্যে রাখা অমানবিক। দ্রুত সময়ের মধ্যে কারখানা খুলে দিয়ে সবার চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া ও বকেয়া সব বেতন-ভাতা পরিশোধ করার উদ্যোগ নিতে হবে। অন্যথায় ইপিজেড আইন অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। তিনি বলেন, অবিলম্বে শ্রমিকদের দাবি পরিশোধের উদ্যোগ না নেওয়া হলে পরিণতি হবে ভয়াবহ।
এ ওয়ানের শ্রমিকেরা এখনো প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান করছেন। আজ রাত এখানেই থাকবেন। বকেয়া পাওনার বিষয়ে বেপজা কোনো ঘোষণা না দিলে কাল প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেবেন তাঁরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইতালীয় মালিকানাধীন এ ওয়ান (বিডি) কারখানায় গত জানুয়ারি থেকেই কাজ নেই। আর্থিক সংকটের কারণে মালিকপক্ষ শ্রমিকদের মজুরি দিতে না পারায় ১৮ এপ্রিল কারখানাটি বন্ধ করে দেয় ঢাকা ইপিজেড কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে ইজারা চুক্তিও বাতিল করা হয়। কারখানাটিতে কাজ করেন প্রায় ১ হাজার ১০০ পোশাকশ্রমিক। তাঁদের পাওনা ১৫-১৬ কোটি টাকা। অন্যদিকে কারখানাটির কাছে ইপিজেড কর্তৃপক্ষের বকেয়া প্রায় দুই কোটি টাকা।
জানতে চাইলে তাসলিমা আখতার সন্ধ্যা সাতটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, এ ওয়ানের শ্রমিকেরা এখনো প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান করছেন। আজ রাত এখানেই থাকবেন। বকেয়া পাওনার বিষয়ে বেপজা কোনো ঘোষণা না দিলে কাল প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেবেন তাঁরা।
কারখানাটি বিক্রি করে সব পাওনা পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে কারখানাটি নিলামে বিক্রির জন্য দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা হবে।
এ ওয়ানের শ্রমিকের পাওনার পরিশোধের অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা ইপিজেডের মহাব্যবস্থাপক আবদুস সোবহান প্রথম আলোকে বলেন, কারখানাটি চালু করার জন্য হংকংয়ের এক উদ্যোক্তার কাছে মালিকানা হস্তান্তরের চেষ্টা হয়েছিল। তবে সেটি সফল হয়নি। তাই কারখানাটি বিক্রি করে সব পাওনা পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে কারখানাটি নিলামে বিক্রির জন্য দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা হবে।
শ্রমিকদের পাওনাসহ অন্যান্য দায়দেনা পরিশোধের আগে কারখানার চেয়ারম্যান মিস্টার অ্যালেক্স যাতে বিদেশে চলে যেতে না পারেন, সে জন্য ইমিগ্রেশন পুলিশকে অবহিত করা আছে বলে জানান আবদুস সোবহান। তিনি বলেন, শ্রমিকেরা ৩ মাস ১৮ দিনের বকেয়া মজুরি পাবেন। সেই সঙ্গে পাবেন ক্ষতিপূরণ। রোজার ঈদের আগে প্রত্যেক শ্রমিককে ২০ হাজার টাকা করে পরিশোধ করা হয়।