বাংলার সমৃদ্ধির জন্য ১৯২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি
রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইউক্রেনে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশি জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধির জন্য বিমা কোম্পানির কাছে ২ কোটি ২৪ লাখ মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি), যা ১৯২ কোটি টাকার কাছাকাছি। ইউক্রেন যুদ্ধে এটাই প্রথম বড় ধরনের সামুদ্রিক বিমার ক্ষতিপূরণ দাবি। খবর রয়টার্সের
ইউক্রেনে রুশ হামলা শুরুর পর কৃষ্ণ ও আজভ সাগরের ইউক্রেন সীমানায় মোট পাঁচটি জাহাজে মিসাইল হামলা হয়েছে। তার মধ্যে একটি জাহাজ ডুবে গেছে। ২ মার্চ ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে আটকে থাকা এমভি বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজে হামলার ঘটনা ঘটে। এতে নিহত হন জাহাজটির তৃতীয় প্রকৌশলী হাদিসুর রহমান।
রয়টার্স জানায়, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ইউক্রেনের সমুদ্রসীমায় পণ্যবাহী জাহাজের জন্য বিমার প্রিমিয়াম ১০০ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। বিমা পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এটা আরও বাড়িয়ে নেওয়ার জন্য গভীর পর্যবেক্ষণে আছে, যা শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হলে এই খরচ আরও বাড়িয়ে দেবে।
বিএসসি জাহাজটির ক্ষতিপূরণ পেতে বিমা কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে। সংস্থাটির একজন সিনিয়র কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এই খবর জানিয়েছে রয়টার্স।
বিএসসি জানায়, জাহাজটির যুদ্ধকালীন ঝুঁকি এড়াতে সংস্থাটির মাধ্যমে বিমা করা হয়েছিল, যা পরে লন্ডনের লয়েডের ব্রোকার টাইজারসের মাধ্যমে পুনঃ বিমাও করা হয়েছিল। জাহাজটির বিমার যে সীমা নির্ধারণ করা হয়েছিল, তাতে সাধারণ বিমার আওতায় ছিল ১০ শতাংশ এবং বাকি ৯০ শতাংশ ছিল টাইজারসের আওতায়। অবশ্য যোগাযোগ করেও টাইজারসের পক্ষ থেকে বিমা–সম্পর্কিত কোনো মন্তব্য পায়নি রয়টার্স।
বিমা দাবির নিষ্পত্তি হতে বেশ কিছুটা সময় লাগবে বলে রয়টার্সকে জানিয়েছে বিএসসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুমন মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের স্বার্থ বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।’
লন্ডনের সামুদ্রিক বিমার বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ঝুঁকি বাড়ায় জলপথে চলাচলের বিমার পরিধি বাড়ছে, যা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যখন যুদ্ধের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক জাহাজ চলাচলের ঝুঁকি বাড়ছে।
বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি সরকারি সংস্থা। এই সংস্থার সাধারণ পণ্যবাহী জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে পৌঁছায় গত ২৪ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন ভোরেই রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা শুরু করে। হামলার সপ্তম দিনে বাংলাদেশি জাহাজে রকেট হামলার ঘটনা ঘটে। তারপর বন্দরটির আশপাশের এলাকায় বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের সহায়তায় ৩ মার্চ জাহাজে থাকা ২৮ নাবিককে উদ্ধার করা হয়। পরে তাঁদের ইউক্রেনের বাংকারে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। ৯ মার্চ জাহাজটির নাবিক ও প্রকৌশলীরা দেশে ফেরেন।