রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজার সংযোজনকারী উদ্যোক্তাদের এবার বাড়তি শুল্কসুবিধা দেওয়া হলো। তাতে রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজার বানানোর যন্ত্রাংশ আমদানিতে আগের চেয়ে কম শুল্ক দিতে হবে। প্রস্তাবিত বাজেটে এসব যন্ত্রাংশ আমদানিতে ১৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক বসানো হয়েছে। আগে এই হার ছিল ২৫ শতাংশ। যেসব যন্ত্রাংশ আমদানিতে শুল্ক কমানো হয়েছে তার মধ্যে অন্যতম কম্প্রেসর, ফ্রিজের দরজা ও বডি তৈরির যন্ত্রাংশ।

আমদানি শুল্ক কমানোর ফলে কাঁচামাল আমদানির পর যন্ত্রাংশ তৈরি করে যারা রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজার বানায়, সেসব প্রতিষ্ঠান আগের চেয়ে বেশি প্রতিযোগিতায় পড়বে। এর মানে, যারা রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজারের জন্য কম্প্রেসরসহ নানা যন্ত্রপাতি নিজেরা বানায়, তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বাংলাদেশে এ ধরনের চার-পাঁচটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, তিনটি সারণির মাধ্যমে রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজারের যন্ত্রাংশ তৈরির কাঁচামাল, ক্ষুদ্র যন্ত্রপাতি তৈরির যন্ত্রাংশ এবং প্রধান প্রধান যন্ত্রপাতি তৈরি যন্ত্রাংশের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। প্রথম সারণিতে রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজারের যন্ত্রাংশ তৈরির কাঁচামালে ৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক এবং দ্বিতীয় সারণির ক্ষুদ্র যন্ত্রপাতির তৈরির যন্ত্রাংশে ১০ শতাংশ আমদানি শুল্ক আগের মতোই আছে। তৃতীয় সারণির প্রধান প্রধান যন্ত্রপাতি তৈরির যন্ত্রাংশের ওপর আমদানি শুল্ক ২৫ থেকে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে।

আবার রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে দুই শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে ক্যাটাগরি-১-এর প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত বা আমদানি করা কাঁচামাল দিয়ে রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজারের সব অংশ প্রস্তুত অথবা প্রধান অংশসমূহ ও এক বা একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিজে প্রস্তুত করে এবং অবশিষ্ট অংশ স্থানীয় ভেন্ডর বা আমদানি করে এমন প্রতিষ্ঠানকে বোঝানো হয়েছে। অপর শ্রেণির প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত বা আমদানি করা বা স্থানীয় ভেন্ডর থেকে সংগৃহীত ক্ষুদ্র অংশ বা অংশবিশেষ দিয়ে বডি কেবিনেট এবং দুই বা ততধিক গুরুত্বপূর্ণ অংশ সংযোজন করে রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজার উৎপাদন করে এমন প্রতিষ্ঠানকে বোঝানো হয়েছে।

এ খাতের উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, এতে প্রকৃত উৎপাদকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। কারণ, বাজেটে ঘোষিত সুবিধার কারণে সংযোজনকারীরা বেশি সুবিধা পাবে।

তাতে ওই সব প্রতিষ্ঠান আর নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবে না। নিজেরাই সিংহভাগ মূল্য সংযোজন করে রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজার বানাতে উৎসাহিত হবে না।