২০২১ সালে চা উৎপাদনে রেকর্ড
চা চাষের ইতিহাসে রেকর্ড উৎপাদন হয়েছে ২০২১ সালে। গত বছর দেশের ১৬৭টি চা-বাগান ও ক্ষুদ্রায়তন চা-বাগানে চা উৎপাদিত হয়েছে ৯ কোটি ৬৫ লাখ কেজি। এর আগে সর্বোচ্চ রেকর্ড ছিল ২০১৯ সালে। সেবার ৯ কোটি ৬০ লাখ কেজি চা উৎপাদিত হয়েছিল। গতকাল বুধবার বাংলাদেশ চা বোর্ডের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
২০২০ সালে মহামারির প্রথম বছরে চা উৎপাদনেও ধাক্কা লেগেছিল। তখন ৮ কোটি ৬৩ লাখ কেজি চা উৎপাদিত হয়। এক বছরের মাথায় উৎপাদন ১ কোটি ১ লাখ কেজি বেড়ে নতুন এ রেকর্ড হয়েছে। উত্তরাঞ্চলে সমতলের চা-বাগান ও ক্ষুদ্র চাষ থেকে সবচেয়ে বেশি সাফল্য এসেছে। ২০২০ সালে যেখানে ১ কোটি ৩ লাখ কেজি চা উৎপাদিত হয়েছিল, সেখানে এবার হয়েছে ১ কোটি ৪৫ লাখ কেজি।
বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম জানান, মহামারির সময়েও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় দেশের সব চা-বাগানের সার্বিক কার্যক্রম স্বাভাবিক ছিল। সরকারের আর্থিক প্রণোদনা, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ চা বোর্ডের নিয়মিত তদারকি, বাগানমালিক ও শ্রমিকদের নিরলস প্রচেষ্টায় এ অর্জন সম্ভব হয়েছে। পাশাপাশি সঠিক সময়ে ভর্তুকি মূল্যে সার বিতরণ, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চা নিলামকেন্দ্র চালু রাখা, চা-শ্রমিকদের মজুরি, রেশন ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা হয়েছে।
চা বোর্ডের চেয়ারম্যান জানান, উত্তরাঞ্চলে চা-চাষিদের চা আবাদবিষয়ক হাতেকলমে প্রশিক্ষণ ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সমতলের চা-বাগান ও ক্ষুদ্র চা চাষে উৎপাদন এ বছর ৪১ শতাংশ বেড়েছে।
চা-শিল্পে গত দুই দশকে দেশের ১৮টি বড় শিল্প গ্রুপ যুক্ত হয়েছে। পুরোনো চারা উঠিয়ে নতুন চারা লাগিয়েছে উদ্যোক্তারা। বিনিয়োগও বেড়েছে এ খাতে। তিন–চার বছর পর থেকে নতুন চারার ফলন পাওয়া যাচ্ছে। বাগানকেন্দ্রিক সংস্কার কার্যক্রম ধারাবাহিকভাবে বাড়তে থাকায় উৎপাদনে নতুন নতুন রেকর্ড হচ্ছে।
চা-বাগানের মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এম শাহ আলম প্রথম আলোকে বলেন, বছরের পর বছর ধারাবাহিকভাবে চা-বাগানে যে সংস্কার কার্যক্রম চলছে, তারই ফসল এ রেকর্ড উৎপাদন। নতুন চারা ও নতুন আবাদে উৎপাদন বেড়েছে। বছরের শুরুর দিকে চা উৎপাদনের প্রতিকূল আবহাওয়া থাকলেও পরে তা কেটে যায়। তাতেই রেকর্ড উৎপাদন সম্ভব হয়েছে।
এম শাহ আলম আরও বলেন, মৌসুমের শুরুতে নিলামে চায়ের ভালো দাম পাওয়া গেছে। তবে শেষ দিকে অনেক চায়ের প্রত্যাশিত দাম পাওয়া যাচ্ছে না। চায়ের ভালো দাম নিশ্চিত করা গেলে উৎপাদন বাড়বে।