জাহাজে হামলার প্রভাব শেয়ারের দামে

*গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫৮ পয়েন্ট বা প্রায় ১ শতাংশ কমে নেমে এসেছে ৬ হাজার ৬৩৯ পয়েন্টে।
*সূচকের পতনের চেয়ে বিনিয়োগকারীরা বেশি আতঙ্কিত লেনদেন কমে যাওয়ায়।
*ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৫ দিনের ব্যবধানে হাজার কোটি থেকে সাড়ে ৬০০ কোটিতে নেমেছে।

শেয়ারবাজারফাইল ছবি

ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে অবস্থানরত ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজে হামলার প্রভাব পড়েছে জাহাজটির মালিকানা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) শেয়ারের দামে। বাংলাদেশ সময় গত বুধবার রাতে ইউক্রেন-রুশ যুদ্ধে জাহাজটি হামলার শিকার হয়। তাতে মারা যান জাহাজের এক নাবিক। এরপর গত দুই কার্যদিবসে দেশের শেয়ারবাজারে বিএসসির শেয়ারের দাম কমেছে।

ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে বুধবার হামলার শিকার হয় বিএসসির জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধি। গত দুই দিনে তাদের শেয়ারের দাম কমেছে ৯ টাকা।

দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল রোববার দরপতনের শীর্ষ পাঁচ কোম্পানির মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে ছিল বিএসসি। গত বৃহস্পতিবার ও গতকাল এ দুই কার্যদিবসে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ৯ টাকা বা সাড়ে ৭ শতাংশ কমে নেমে এসেছে ১১২ টাকায়। এর মধ্যে গতকাল এক দিনেই কমেছে সোয়া ৫ শতাংশ বা ৬ টাকা ২০ পয়সা। আবার এক মাসের ব্যবধানে কোম্পানিটির শেয়ারের বাজারমূল্য কমেছে ৩১ টাকা বা প্রায় ২২ শতাংশ। তাতে কোম্পানিটির শেয়ারে বিনিয়োগ করে অনেক বিনিয়োগকারী বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়েছেন। এর মধ্যে যাঁরা শেয়ারবাজারের ঋণদাতা ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে এ শেয়ারে বিনিয়োগ করেছেন, তাঁরা আছেন বিপাকে। কারণ, শেয়ারের দাম পড়ে যাওয়ায় ঋণ সমন্বয়ের তাগাদা দিচ্ছে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। নিয়ম অনুযায়ী, ঋণ সমন্বয়ে ব্যর্থ হলে জোরপূর্বক বিক্রি বা ফোর্সড সেলের আওতায় পড়বেন বিনিয়োগকারীরা। এ আতঙ্কেই ভুগছেন এখন বিএসসির শেয়ারের ঋণগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা।

করোনার ধাক্কা কাটিয়ে বিশ্ব অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জাহাজ ভাড়া অনেক বেড়ে যায়। তাতে বিএসসির মুনাফায় বড় ধরনের উল্লম্ফন ঘটে। আর হঠাৎ করে বিএসসির মুনাফা অনেক বেড়ে যাওয়ায় কোম্পানিটির শেয়ারের প্রতি ব্যাপকভাবে আকৃষ্ট হন বিনিয়োগকারীরা। তাতে ছয় মাসের ব্যবধানে ডিএসইতে এটির ৫১ টাকার শেয়ারের দাম বেড়ে ১৪৮ টাকায় উঠে যায়। এখন ইউক্রেনে একটি জাহাজ হামলার মুখে পড়ায় শেয়ারের দামেও তার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। বিনিয়োগকারীরা ভাবছেন, জাহাজের ক্ষয়ক্ষতির কারণে বিএসসির আয় কমে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

এদিকে ইউক্রেনে রুশ হামলার পর দেশের শেয়ারবাজারে যে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে, তার রেশ এখনো কাটেনি। দরপতনের ধারা অব্যাহত রয়েছে বাজারে। তারই অংশ হিসেবে গতকালও প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫৮ পয়েন্ট বা প্রায় ১ শতাংশ কমে নেমে এসেছে ৬ হাজার ৬৩৯ পয়েন্টে। সূচকের এ পতনের চেয়ে বিনিয়োগকারীরা বেশি আতঙ্কিত লেনদেন কমে যাওয়ায়। ঢাকার বাজারে লেনদেন ১৫ দিনের ব্যবধানে হাজার কোটি থেকে সাড়ে ৬০০ কোটিতে নেমেছে।