ডিএসইর অংশীদার চীনের জোটের সহায়তা মূল্যায়নের নির্দেশ

দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) কৌশলগত অংশীদার চীনা জোটের দেওয়া আর্থিক ও কারিগরি সহায়তাসংশ্লিষ্ট প্রতিশ্রুতির মূল্যায়ন করা হচ্ছে। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ডিএসইকে এ মূল্যায়ন করতে বলেছে। গত বৃহস্পতিবার এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা দেওয়া হয়।

২০১৮ সালে চীনের দুটি এক্সচেঞ্জের সমন্বয়ে গঠিত জোটের কাছে প্রায় হাজার কোটি টাকায় ডিএসইর ২৫ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করা হয়।

চীনের সেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জ ও সাংহাই স্টক এক্সচেঞ্জের সমন্বয়ে গঠিত জোট ২০১৮ সালের ডিএসইর কৌশলগত অংশীদার হয়। ২০১৮ সালে চীনের দুটি এক্সচেঞ্জের সমন্বয়ে গঠিত জোটের কাছে প্রায় হাজার কোটি টাকায় ডিএসইর ২৫ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করা হয়। এসব শেয়ারের প্রতিটি ২১ টাকা দামে বিক্রি করা হয়। শেয়ার বিক্রির সেই টাকা ইতিমধ্যে ডিএসইর শেয়ারধারী সদস্যদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।

ডিএসইর কৌশলগত অংশীদার হতে চীনের জোটটি শেয়ারবাজারের উন্নয়নে কারিগরি ও আর্থিক নানা সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। এসব প্রতিশ্রুতি দুই পক্ষের চুক্তিতেও উল্লেখ করা হয়।

ডিএসইর কৌশলগত অংশীদার হতে চীনের জোটটি শেয়ারবাজারের উন্নয়নে কারিগরি ও আর্থিক নানা সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। এসব প্রতিশ্রুতি দুই পক্ষের চুক্তিতেও উল্লেখ করা হয়। সেসব প্রস্তাবনার অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চেয়েছে বিএসইসি। এ-সংক্রান্ত চিঠিতে বলা হয়, শেয়ার ক্রয়ের চুক্তিতে চীনের জোটটি মূল্য সংযোজন বা ভ্যালু এডিশন হিসেবে কারিগরি ও আর্থিক কিছু সহায়তার কথা বলেছিল। এসব প্রস্তাবনা কতটুকু বাস্তবায়িত হয়েছে, তার একটি মূল্যায়ন প্রতিবেদন সাত কার্যদিবসের মধ্যে বিএসইসিতে জমা দিতে বলা হয় বিএসইসির চিঠিতে। ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালককে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।

এর আগে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জের শেয়ার দ্রুত শেয়ারবাজারে আনার উদ্যোগ নেওয়ার জন্য স্টক এক্সচেঞ্জ দুটিকে নির্দেশনা দেয় বিএসইসি। এ জন্য পথনকশা তৈরি করে বিএসইসিতে জমা দেওয়ার জন্য ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। জানা গেছে, শেয়ার ছাড়ার বিষয়ে চূড়ান্ত পথনকশা জমা দিতে দুই স্টক এক্সচেঞ্জ নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছে সময় চেয়ে আবেদন করেছে।

কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের জন্য নির্ধারিত ২৫ শতাংশ শেয়ার চীনের জোটের কাছে বিক্রি করেছিল ডিএসই। তবে ডিমিউচুয়ালাইজেশনের পুরো প্রক্রিয়াটি এখনো সম্পন্ন হয়নি। কারণ, ডিএসইর ৩৫ শতাংশ শেয়ার এখনো অবিক্রীত।

২০১০ সালে শেয়ারবাজারে ধসের পর সরকার গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে সরকার স্টক এক্সচেঞ্জের ডিমিউচুয়ালাইজেশনের উদ্যোগ নেয়। ২০১৩ সালে সেটি বাস্তবায়িত হয়। তারই অংশ হিসেবে কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের জন্য নির্ধারিত ২৫ শতাংশ শেয়ার চীনের জোটের কাছে বিক্রি করেছিল ডিএসই। তবে ডিমিউচুয়ালাইজেশনের পুরো প্রক্রিয়াটি এখনো সম্পন্ন হয়নি। কারণ, ডিএসইর ৩৫ শতাংশ শেয়ার এখনো অবিক্রীত।

আরও পড়ুন

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, চীনের জোটটি ডিএসইর সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সময় অনেকগুলো প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, যার বড় অংশই ছিল কারিগরি সহায়তার। কিন্তু গত চার-পাঁচ বছরের এসব প্রতিশ্রুতির কোনো বাস্তবায়ন হয়নি। এমনকি চীনের প্রতিশ্রুত সহায়তা পেতে স্টক এক্সচেঞ্জটির পক্ষ থেকেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ফলে স্টক এক্সচেঞ্জটির গুণগত মানের খুব বেশি উন্নতিও হয়নি। তাতে যে উদ্দেশ্যে কৌশলগত বিনিয়োগকারীকে স্টক এক্সচেঞ্জের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছিল, সেটিও অর্জিত হয়নি। যদিও চীনের জোটের পক্ষে একজন প্রতিনিধি ডিএসইর পর্ষদে রয়েছে। এমন পরিস্থিতি ডিমিউচুয়ালাইজেশনকে পুরোপুরি কার্যকর করতে ধাপে ধাপে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে কৌশলগত বিনিয়োগকারীর সহায়তার বিষয়ে মূল্যায়ন প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছে।