দাম কমার ন্যূনতম সীমা তুলে নেওয়ার ‘গুজবে’ ক্রেতাসংকট

শেয়ারের দরপতন ঠেকাতে বেঁধে দেওয়া দাম কমার ন্যূনতম ২ শতাংশ সীমা বা সার্কিট ব্রেকার তুলে নেওয়া হচ্ছে—এমন খবরে শেয়ারবাজারে গতকাল রোববার আবারও বড় ধরনের দরপতন হয়েছে।

দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স এদিন ৬৭ পয়েন্ট বা প্রায় ১ শতাংশ কমে গেছে। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচকটিও কমেছে ১৬৫ পয়েন্ট বা প্রায় ১ শতাংশ।

গত মাসের শেষে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরুর পর শেয়ারবাজারে বড় ধরনের দরপতন শুরু হয়। মাত্র কয়েক দিনের বড় পতনে ডিএসইর প্রধান সূচকটি কমে সাড়ে ৬ হাজার পয়েন্টে মনস্তাত্ত্বিক সীমার নিচে নেমে যায়। পাশাপাশি লেনদেনও কমে যায়। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন সব শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা। ব্যক্তিশ্রেণির সাধারণ বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী—সবাই বলতে গেলে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন। এমন এক পরিস্থিতিতে বাজারের পতন ঠেকাতে ৯ মার্চ থেকে শেয়ারের দাম কমার সর্বনিম্ন সীমা কমিয়ে ২ শতাংশে বেঁধে দেওয়া হয়। অর্থাৎ এক দিনে কোনো শেয়ারের দাম ২ শতাংশের বেশি কমতে পারবে না। আগে দিনে শেয়ারের দাম সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারত। সেই সীমা কমিয়ে ২ শতাংশ করার কারণে ৯ মার্চ থেকে বড় ধরনের দরপতন থামে। বাজার একটু একটু করে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে।

এ অবস্থায় গতকাল একটি সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়, শেয়ারের দাম কমার ২ শতাংশের সর্বনিম্ন সীমা (সার্কিট ব্রেকার) তুলে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এ খবরেই সপ্তাহের প্রথম দিনে বাজারে বড় ধরনের দরপতন হয়। যদিও পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) পক্ষ থেকে ২ শতাংশ সীমা তুলে নেওয়ার বিষয়টিকে পুরোপুরি গুজব বলে অভিহিত করা হয়েছে।

জানতে চাইলে বিএসইসির কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘শেয়ারের দাম কমার সর্বনিম্ন সার্কিট ব্রেকার তুলে নেওয়ার কোনো সিদ্ধান্ত বিএসইসি নেয়নি। এমনকি এটি তুলে নেওয়ার কোনো পরিকল্পনাও আপাতত আমাদের নেই। এ সীমা তুলে নেওয়ার যে খবরটি বাজারে ছড়িয়ে পড়েছে, তা পুরোপুরি ভিত্তিহীন ও গুজব।’

একাধিক ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বড় দরপতনের কারণে অনেক শেয়ারের দাম বেঁধে দেওয়া সর্বনিম্ন সীমায় নেমে আসে। তাতে বেশ কিছু শেয়ারের ক্রেতাসংকট দেখা দেয়।

বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘এর মধ্যে আমরা ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, সম্পদ ব্যবস্থাপক কোম্পানি, ডিলার, মার্চেন্ট ব্যাংকসহ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের বাজারে আরও বেশি সক্রিয় করতে নানা উদ্যোগ নিয়েছি।