১০ হাজার টাকার আবেদনে মিলবে ১৭০ টাকার শেয়ার

লটারির প্রথা উঠে যাওয়ায় শেয়ারের প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওতে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ অনেক বেড়ে গেছে। এ কারণে লটারির প্রথা উঠে যাওয়ার পর শেয়ারবাজারে আসা বিমা খাতের একটি কোম্পানির আইপিওতে প্রায় সাড়ে ৩৬ গুণ আবেদন জমা পড়েছে। এতে বিনিয়োগকারীরা জনপ্রতি শেয়ার পাবেন অতি নগণ্য পরিমাণে।

আজ সোমবার বিমা খাতের সোনালী লাইফ ইনস্যুরেন্সের আইপিও শেয়ার বণ্টন হবে। দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ আজ সকালে এ উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। সেখানে চূড়ান্ত হবে সোনালী লাইফের আইপিও আবেদনকারীদের মধ্যে কে কত শেয়ার পাবেন।

তবে ডিএসইর সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কোম্পানিটির আইপিও শেয়ারের জন্য যাঁরা ন্যূনতম ১০ হাজার টাকার আবেদন করেছেন, তাঁরা এ আবেদনের বিপরীতে পাবেন ১৭টি শেয়ার। অর্থাৎ ১০ হাজার টাকার সমমূল্যের শেয়ারের জন্য আবেদন করে প্রতিজন আবেদনকারী পাবেন ১৭০ টাকার সমমূল্যের ১৭টি শেয়ার। কোম্পানিটি আইপিওতে প্রতিটি শেয়ার ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে বিক্রি করেছে। সেই হিসাবে ১৭টি শেয়ারের দাম দাঁড়ায় ১৭০ টাকা।

ডিএসইর সূত্রটি আরও জানায়, সোনালী লাইফ ইনস্যুরেন্সের আইপিওতে ৩৬ দশমিক ৪৫ গুণ বেশি আবেদন জমা পড়ে। কোম্পানিটি আইপিওতে ১ কোটি ৯০ লাখ শেয়ার ছেড়ে ১৯ কোটি টাকার মূলধন সংগ্রহ করছে।

গত ১ এপ্রিল থেকে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) আইপিও প্রক্রিয়া থেকে লটারির প্রথা তুলে নেয়।

পাশাপাশি আইপিও আবেদনের ক্ষেত্রে সেকেন্ডারি বাজারে ন্যূনতম ২০ হাজার টাকা বিনিয়োগের শর্ত জুড়ে দেয়। লটারির প্রথা তুলে নেওয়ার পর সোনালী লাইফ ইনস্যুরেন্স ছিল প্রথম আইপিও। তাই কোম্পানিটির আইপিওতে আবেদনকারীদের মধ্যে কে কত শেয়ার পাচ্ছেন এবং আইপিওতে কত আবেদন জমা পড়ছে, তা নিয়ে ছিল শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের বেশ কৌতূহল।

লটারির প্রথা তুলে নেওয়ায় আবেদনকারীদের সবাই শেয়ার পাবেন—এ নিশ্চয়তা তৈরি হওয়ায় সোনালী লাইফের আইপিওতে আবেদন অনেক বেড়ে যায়। এ কারণে ১০ হাজার টাকার আবেদন করে ১ দশমিক ৭১ শতাংশ হারে বা ১৭টি শেয়ার পাবেন আবেদনকারীরা। যাঁরা ২০ হাজার টাকার আবেদন করেছেন, তাঁরা পাবেন ৩৪টি শেয়ার। এভাবে টাকার অঙ্কের ওপর ভিত্তি করে শেয়ার পাওয়ার সংখ্যাও বাড়বে।

নিয়ম অনুযায়ী, কোম্পানিটির আইপিওতে সর্বনিম্ন ১০ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকার শেয়ারের জন্য আবেদন করতে পেরেছেন বিনিয়োগকারীরা। যে আবেদন জমা পড়েছে, তাতে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকার শেয়ারের জন্য যিনি আবেদন করেছেন, তিনি পাবেন ৮৫টি বা ৮৫০ টাকার শেয়ার। একজন বিনিয়োগকারী যে টাকার শেয়ার পাবেন, সেই টাকার বাইরে বাকি টাকা ওই বিনিয়োগকারীকে ফিরিয়ে দেওয়া হবে।

জানা গেছে, সোনালী লাইফ ইনস্যুরেন্সের আইপিওতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের বাইরে সর্বোচ্চ শেয়ার বরাদ্দ পাবেন প্রবাসী বাংলাদেশি বা এনআরবি কোটায় আবেদনকারীরা। এ কোটায় আবেদনকারীরা ১০ হাজার টাকার আবেদনের বিপরীতে ৩৩টি বা ৩৩০ টাকার শেয়ার পাবেন। আর ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী কোটায় আবেদনকারীরা ১০ হাজার টাকার আবেদনের বিপরীতে পাবেন ২২টি বা ২২০ টাকার শেয়ার। তবে ভগ্নাংশের হিসাব থাকায় বরাদ্দকৃত শেয়ারের ক্ষেত্রে সামান্য একটু পরিবর্তন হতে পারে।