জাপানের অর্থনীতিকে প্রবৃদ্ধির ধারায় ফিরিয়েছেন আবে
জাপানের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন দেশটির সদ্য প্রয়াত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। ২০১২ সালে তিনি যখন দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন, তখন জাপান মন্দার কবলে। তাঁর দ্বিতীয় জমানায় জাপান প্রবৃদ্ধির ধারায় ফিরে আসে।
২০১২ সালে ক্ষমতায় এসেই তিনি খুবই সম্প্রসারণশীল মুদ্রানীতি গ্রহণ করেন। কার্যত তখন সুদ হার শূন্যের আশপাশে ছিল। লক্ষ্য ছিল মানুষ যেন সহজেই অর্থ পায়, তা নিশ্চিত করা। খবর বিবিসির।
এরপর অর্থনীতিতে বিভিন্নভাবে অর্থ সঞ্চালন করেন শিনজো আবে। তখন তিনি অবকাঠামোসহ বিভিন্ন খাতে সরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন। এ ছাড়া বেসরকারি খাতকে প্রণোদনা দিতে কর ছাড় দেন।
তৃতীয়ত, তিনি করপোরেট খাতে সংস্কারসহ আরও কিছু উদারপন্থী কাজ করেন। যেমন, শ্রমশক্তিতে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি, শ্রম বাজার উদারীকরণ এবং তার অংশ হিসেবে শ্রমবাজারের জাপ মোকাবিলায় বিদেশি শ্রমিকদের কাজের অনুমতি দেওয়া ইত্যাদি।
শিনজো আবের এসব নীতি কাজে এসেছে। জাপান দ্রুত প্রবৃদ্ধির ধারায় ফিরেছে। তবে শিনজো আবে যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিলেন, অর্থনীতি সে পর্যায়ে যেতে পারেনি।
কিন্তু ২০২০ সালে জাপান আবারও মন্দার কবলে পড়ে। ফলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, আবের অর্থনৈতিক নীতি প্রকত অর্থে কতটা টেকসই। কোভিড মহামারি সমালানোর ক্ষেত্রেও তার সরকারের ভূমিকা নিয়ে বিস্তর প্রশ্ন ওঠে, এবং তার জনপ্রিয়তা কমতে শুরু করে। সমালোচনা হয়, অভ্যন্তরীন পর্যটন বাড়াতে গিয়ে করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
সমালোচকরা আরও বলেন, নারীদের শ্রমবাজারের নিয়ে আসা বা স্বজনপ্রীতি কমাতে যেসব বব্যস্থা আবে নিয়েছিলেন, তাতে তেমন কাজ হয়নি।
তবে প্রশান্তমহাসাগরীয় অঞ্চলের দুই প্রান্তের দেশগুলোর মধ্যে ব্যবসা বাড়াতে ১১টি দেশের জোট থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকাকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর যেভাবে আবে এই জোটধরে রেখেছিলেন, সে জন্য দেশের বাইরে তিনি অনেক প্রশংসিত হন। এটি নতুন অর্থনৈতিক সম্ভাবনা দিশা দেখাচ্ছে বলেই বিশ্লেষকেরা মনে করেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর পর্বে আমেরিকার ছায়ায় রীতিমতো লালিত হয়েছে জাপান; বিশ্লেষকেরা বলেন, আবে তাকে আপন শক্তিতে দাঁড় করিয়েছেন।