ভারতে ৫০০ ও ১০০০ রুপির নোট বাতিল কাণ্ডে এখনো তুমুল তোলপাড় চলছে। বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি ও রাজ্যসভা উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এ দুটি নোট বদলাতে গিয়ে সর্বস্তরের মানুষ অস্বস্তি ও হাহাকারের মধ্যে রয়েছে। উদ্যোগ নিতে বাধ্য হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (আরবিআই)। এ নিয়ে দিল্লি হাইকোর্টে আজ মঙ্গলবার শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
তবে দেশটির কৃষকেরা আপাতত নিজেদের ভাগ্যবান ভাবতে পারেন। কারণ, নতুন রবিশস্যের মৌসুম সামনে রেখে তাঁরা বাতিল হয়ে যাওয়া ৫০০ রুপির নোট দিয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে বীজ কিনতে পারবেন। এ জন্য অবশ্য তাঁদের পরিচয়পত্র দেখাতে হবে বলে গতকাল সোমবার কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি বি ডি আহমেদ ও বিচারপতি জয়ন্ত নাথের সমন্বয়ে গঠিত একটি বেঞ্চ ৫০০ ও ১০০০ রুপির নোট বাতিলের বিরুদ্ধে দাখিল হওয়া আবেদনের ওপর শুনানি করবেন আজ।
পূজা মহাজন নামে এক নাগরিক উচ্চ আদালতে ওই আবেদন করেন। আবেদনে তিনি নতুন ২০০০ রুপির নোট বাজারে ছাড়ার বিষয়টিকে ‘অসাংবিধানিক ও আইনের শাসনের জন্য খারাপ দৃষ্টান্ত’ বলে আখ্যায়িত করে তা বন্ধ রাখার দাবি জানান।
একটি ডিজাইনার শোরুম পরিচালনাকারী পূজা মহাজন তাঁর আবেদনে দাবি করেন, সরকার নোট বাতিল করায় তিনি জীবিকা উপার্জনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এবং তাঁর মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে।
পূজা সরকারের বিরুদ্ধে দ্বৈত আচরণের অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, সরকার এক হাতে জনগণকে পুরোনো নোট ব্যাংকে জমা দিতে ডাকছে, আর অন্য হাতে আড়াই লাখ রুপির বেশি জমা দিলে বিচার করা হবে বলে ভয় দেখাচ্ছে।
এদিকে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (আরবিআই) ৫০০ ও ১০০০ রুপির নোট বাতিলের কারণে ক্ষুদ্রঋণগ্রহীতাদের জন্য ঋণ পরিশোধের সময়সীমা নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ৬০ দিন বাড়িয়েছে।
সমাজে কালোটাকার দৌরাত্ম্য কমানো ও অর্থনীতি দীর্ঘমেয়াদি লাভবান হবে—এমন যুক্তিতে ভারত সরকার ৮ নভেম্বর পুরোনো ৫০০ ও ১০০০ রুপির সব ধরনের নোট বাতিল ঘোষণা করে।
নোট বাতিলের ইস্যুতে ভারতের লোকসভা ও রাজ্যসভা উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বিরোধী দলগুলো গতকাল দফায় দফায় একযোগে বিক্ষোভ করেছে। তারা এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করতে রাজ্যসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিবৃতি দাবি করেছে। অন্যদিকে বিরোধীপক্ষের দাবি মানতে নারাজ সরকারি দল।