যুক্তরাষ্ট্রে কর্মসংস্থান কমতে শুরু করেছে
যুক্তরাষ্ট্রে কর্মসংস্থানের হার কমতে শুরু করেছে। ডিসেম্বর মাসে দেশটিতে নতুন কাজ পেয়েছেন মাত্র ১ লাখ ৯৯ হাজার মানুষ। এ নিয়ে টানা দুবার প্রত্যাশার চেয়ে কম কর্মসংস্থান হলো দেশটিতে।
তবে যুক্তরাষ্ট্রে বেকারত্বের হার অনেকটাই কমে ৩ দশমিক ৯ শতাংশে নেমে এসেছে। একই সঙ্গে মজুরিও বেড়েছে। দেশটির শ্রম মন্ত্রণালয় সূত্রে এই তথ্য পাওয়া গেছে। তবে ডিসেম্বর মাসের এই হিসাব অমিক্রনের প্রভাব তীব্র হওয়ার আগের। এর মধ্যে দেশটিতে এক দিনে ১০ লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। নতুন এই ঢেউয়ে তরুণ ও শিশুরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। ফলে চলতি জানুয়ারি মাসে তার প্রভাব অনুভূত হবে।
ব্যাংকক্রেট ডটকমের জ্যেষ্ঠ অর্থনৈতিক বিশ্লেষক মার্ক হ্যামরিক বলেন, ‘টানা দুই মাস আমরা বৈপরীত্যমূলক চিত্র পেলাম। তবে এই চিত্র অমিক্রনের পূর্ণাঙ্গ আঘাতের আগের বাস্তবতার। ফলে অমিক্রনের পূর্ণাঙ্গ চিত্র পেতে আমাদের জানুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।’
এ ছাড়া ডিসেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মসংস্থানের পরিমাণ প্রাক্-মহামারি সময়ের চেয়ে ৩৬ লাখ কম। কোভিড না এলে হয়তো চিত্রটা এ রকম হতো না। সামগ্রিকভাবে মনে হচ্ছে, অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের গতি ভালো।
নভেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্রে রেকর্ডসংখ্যক ৪৫ লাখ মানুষ চাকরি ছেড়েছেন। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, শ্রমবাজারের অবস্থা যে ভালো, এটি তারই নমুনা। প্রায় এক কোটি মানুষের কাজের সুযোগও আছে বলে জানিয়েছে দেশটির শ্রম মন্ত্রণালয়। বেকার ভাতার আবেদন গত ৫০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
নিউইয়র্কের ব্রুকলিনের ব্রাদার্স ব্যাগেলসের মালিক কনস্ট্যান্টিনোস সুয়োলস বিবিসিকে বলেন, ‘আমি এখনই তিনজন পূর্ণকালীন ও একজন খণ্ডকালীন কর্মী নিয়োগ দিতে পারি।’ কিন্তু গত সেপ্টেম্বর মাসে তাঁকে দোকান বন্ধ করে দিতে হয়। তিনি আরও বলেন, তখন একজন মানুষও তাঁর কাছে কাজের খোঁজ নিতে আসেননি। তিনি আরও বলেন, ‘৩৫ বছর ধরে ব্যবসা করছি, কিন্তু কখনো এই পরিস্থিতি দেখিনি।’
ডিসেম্বর মাসে সব খাতেই কমবেশি কর্মসংস্থান হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি কর্মসংস্থান হয়েছে হোটেল ও পর্যটন খাতে। বেকারত্বের হার ৪ দশমিক ২ শতাংশ থেকে কমে ৩ দশমিক ৯ শতাংশে নেমে এসেছে। এ ছাড়া আগের বছরের ডিসেম্বর মাসের তুলনায় গত ডিসেম্বরে ঘণ্টাপ্রতি মজুরি বেড়েছে ৪ দশমিক ৭ শতাংশ।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই পরিসংখ্যানকে ঐতিহাসিক আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ক্ষমতায় আসার পর গত এক বছরে তাঁর সরকার যত প্রণোদনা দিয়েছে, তার ওপর ভর করেই এই সাফল্য। তবে অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, ভবিষ্যতে প্রবৃদ্ধির হার নির্ভর করবে শ্রমিক প্রাপ্যতার ওপর।