৪০ তম বিসিএস পরীক্ষার্থীদের পরামর্শ

আগামী ৪ জানুয়ারি শুরু হচ্ছে ৪০তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা। হাতে আছে আর মাত্র কয়েকটা দিন। ইতিমধ্যে প্রস্তুতি যা নেওয়ার আপনারা নিয়ে ফেলেছেন। তাই প্রস্তুতি নিয়ে কোনো কথা না বলে কীভাবে সঠিক উপায়ে প্রস্তুতিটা কাজে লাগানো যায়, সেটা নিয়েই কয়েকটি কথা বলছি। 

■ লিখিত পরীক্ষার জন্য অগোছালো পড়ালেখার চেয়ে গুছিয়ে পড়ালেখা বেশি কাজের। তাই যা পড়েছেন সেটাকে মাথায় ধাপে ধাপে সাজিয়ে নিন। 

■ পরীক্ষার কথা ভেবে আলাদা চাপ নেওয়ার দরকার নাই। চাপ নিলে হিতে বিপরীত হতে পারে। সুতরাং স্বাভাবিক জীবনযাপন করুন।

■ হাত বা আঙুল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, এমন কাজ এড়িয়ে চলুন। কারণ, লিখিত পরীক্ষায় প্রিলিমিনারি পরীক্ষার মতো শুধু বৃত্ত ভরাট করলেই হয় না, অনেক লিখতে হয়। 

■ একটানা ৪-৬ ঘণ্টা লেখার জন্য মানসিক ও শারীরিকভাবে প্রস্তুত হোন। তা ছাড়া দ্রুত লেখার প্রস্তুতিও নিন। লিখিত পরীক্ষায় আপনি কী জানেন, সেটার চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো আপনি কী লিখলেন। 

■ বাসা থেকে বের হওয়ার সময় একটি ফাইলে কলম, অ্যাডমিট কার্ড, পেনসিল, স্কেল, ইরেজার, সার্পনার ইত্যাদি প্রয়োজনীয় জিনিস সঙ্গে নেবেন। 

■ মোবাইল ফোন বা ব্যাগ নিয়ে পরীক্ষার হলে প্রবেশ নিষিদ্ধ। নিজের উদ্যোগে কেন্দ্রের বাইরে যদি এসব জিনিস রাখার ব্যবস্থা না করতে পারেন, তাহলে এগুলো নিয়ে যাবেন না। 

■ গাণিতিক যুক্তি, গণিত, ফলিত গণিত, পদার্থবিদ্যা, ফলিত পদার্থবিদ্যা, পরিসংখ্যান, হিসাববিজ্ঞান, কম্পিউটার সায়েন্স, ইলেকট্রনিকস এবং ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ের পরীক্ষা ছাড়া অন্য সব পরীক্ষার দিন হলে ক্যালকুলেটর ব্যবহার নিষিদ্ধ।

■ হাতে সময় নিয়ে বাসা থেকে বের হবেন, যাতে যানজটে পড়লেও সময়মতো কেন্দ্রে পৌঁছাতে পারেন। একটু বেশি পড়ার জন্য বাসা থেকে ১০ মিনিট পর বের হওয়ার কারণে পরীক্ষার হলে দেরিতে পৌঁছালে আপনাকে যে টেনশন ভোগ করতে হবে, সেটা ওই দশ মিনিটে যা পড়েছেন তার চেয়েও বেশি কিছুকে ভুলিয়ে দেবে। 

■ পরীক্ষার হলে সময় দেখার জন্য দেয়াল ঘড়ি ও পিপাসা মেটানোর জন্য পানির ব্যবস্থা থাকবে। এটা নিয়ে আপনার চিন্তা না করলেও চলবে। 

■ ভালো প্রস্তুতি, ভালো পরীক্ষা বলে একটা কথা আছে। তবে কথাটা সব সময় সঠিক নয়। কারণ, ভালো পরীক্ষার জন্য ভালো প্রস্তুতি নেওয়ার পাশাপাশি পরীক্ষার হলে সময় ব্যবস্থাপনা করাসহ অন্যান্য অনেক কিছুই জরুরি। 

■ খাতা পাওয়ার পর রেজিস্ট্রেশন নম্বর, বিষয় কোড, বিষয়ের নাম, সেন্টার ইত্যাদি সঠিকভাবে পূরণ করবেন। হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দিতে ভুলবেন না। যাঁরা উভয় ক্যাডারে পরীক্ষা দেবেন, তাঁরা বাংলা পরীক্ষার দিন দুটি উত্তরপত্র পাবেন। সতর্ক থাকবেন যাতে প্যাঁচ না লাগে। 

■ লিখিত পরীক্ষা পাস করার পাশাপাশি নম্বর তোলার পরীক্ষা। কম নম্বর পেয়ে পাস করলে মৌখিক পরীক্ষা দিতে পারবেন কিন্তু ক্যাডার হতে পারবেন না। তাই যতটা সম্ভব নম্বর তোলার চেষ্টা করবেন।

■ যেকোনো বিষয়ের পরীক্ষাই বাংলা বা ইংরেজি যেকোনো ভাষাতেই উত্তর দিতে পারবেন। তবে একই পরীক্ষায় একটা প্রশ্ন বাংলা আবার আরেকটা প্রশ্ন ইংরেজিতে উত্তর দিতে পারবেন না। 

■ বেশি নম্বর তোলা যদি একান্তই সম্ভব না হয়, তাহলেও হতাশ হয়ে সব ছেড়ে দিয়ে আসবেন না। মৌখিক পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ হলে, ক্যাডার না পান, অন্তত নন-ক্যাডার একটা চাকরির আশা করতে পারবেন।

■ সব প্রশ্নের উত্তর করার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকবেন। 

■ পরীক্ষার হলে প্রশ্ন পাওয়ার পর পুরো প্রশ্নটা একনজর দেখবেন। পূর্ণমান অনুযায়ী সময় ভাগ করে নেবেন। যে প্রশ্নের জন্য যতটুকু সময় বরাদ্দ, সেই সময়ের মধ্যে উত্তর করা শেষ করতে চেষ্টা করবেন । 

■ যে প্রশ্নগুলোর উত্তর ভালো পারেন সেগুলো আগে লিখবেন। ১৫ নম্বরের একটা বড় প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেয়ে ৫ নম্বরের তিনটি ছোট প্রশ্নের উত্তর দেওয়া ভালো। তাতে নম্বর আসবে বেশি।

■ বেশি লিখলেই বেশি নম্বর পাবেন না। লেখা তথ্যবহুল হতে হবে। অতিরিক্ত খাতা নিলে সেটাতে পরীক্ষকের স্বাক্ষর আছে কি না, সেটা দেখে নেবেন।

সবার জন্য শুভকামনা।