প্রবাসে আমরা এবং আমাদের কমফোর্ট জোন

ডেমোক্রেটিক পার্টির দপ্তরে বাংলাদেশি আমেরিকানরা। তাদের সঙ্গে তিনজন জনপ্রতিনিধি প্রার্থী স্টিভ উইকার্ট, জেনিফার পলিক ও ম্যাথু সেরা
ডেমোক্রেটিক পার্টির দপ্তরে বাংলাদেশি আমেরিকানরা। তাদের সঙ্গে তিনজন জনপ্রতিনিধি প্রার্থী স্টিভ উইকার্ট, জেনিফার পলিক ও ম্যাথু সেরা

এই লেখাটি মূলত আমরা যারা বাংলাদেশ থেকে দূরে থাকি তাদের উদ্দেশে লেখা। আশা করি প্রবাসে যারা থাকেন সবাই পড়বেন এবং বিষয়টি নিয়ে ভাববেন। 

আমি যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছি প্রায় একুশ বছর হতে চলল। দেশ থেকে এত দূরে থেকেও আমরা প্রবাসীরা সব সময়ই এক টুকরো বাংলাদেশকে বুকে ধারণ করি। বাংলাদেশের আনন্দে আনন্দিত হই আর দুঃখে হই ব্যথিত। নিজেদের মধ্যে সব সময় বাংলাদেশের সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতি নিয়ে আলোচনা করি। বাংলাদেশের বিশেষ দিবসগুলো প্রবাসের ব্যস্ত সময়ের মধ্যেও নিজেদের মতো করে আয়োজন করি। প্রবাসে জন্মানো আমাদের সন্তানদের হাত দিয়ে ভাত খাওয়ার অভ্যাস করাই। তাদের বাংলা গান, নাচ, কবিতা শেখাই। তাদের জন্য বাংলা স্কুলের ব্যবস্থা করি। বাংলা পত্রিকা প্রকাশ করি। বাংলাদেশ থেকে কোনো শিল্পী বা বিশেষ কোনো ব্যক্তিত্ব এলে, ছুটে যাই তাদের পরিবেশনা দেখতে বা তাদের সম্মানে কোনো আয়োজনে। রাত জেগে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের খেলা উপভোগ করি। বাংলাদেশ দল জিতলে সবাই একসঙ্গে আনন্দ করি। আবার হারলে সারাটা দিন মন খারাপ করে থাকি।
আমার আজকের লেখার বিষয় অন্য একটি প্রসঙ্গ, তার আগে কিছুটা ভূমিকা দিয়ে নিই।
এবারের যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে আমি একটি দলের প্রচারণায় যতটুকু পেরেছি স্বেচ্ছাশ্রম দিয়েছি। এর আগের অন্য কোনো নির্বাচনে নিজেকে সম্পৃক্ত করার প্রয়োজনীয়তা কখনোই উপলব্ধি করিনি। তবে একটি বিশেষ ঘটনা আমার নিজের চিন্তা-ভাবনা পরিবর্তন করতে বাধ্য করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে দলীয় প্রাইমারি নির্বাচনেরও বেশ আগে। দুই দলেরই একাধিক প্রার্থীরা তখন বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে নিজেদের প্রচারণা চালাচ্ছিলেন। এই সময় আমাদের লোকাল বাংলাদেশি একটি সংগঠন একজনকে একটি সম্মাননা পদক উপহার দেবে, সেটি তৈরি করার জন্য আমি একটি দোকানে যাই। এই দোকানটিতে আমি গত এক যুগ ধরে আমাদের অ্যারিজোনার সকল বাংলাদেশি সংগঠনের পক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের পুরস্কার হিসেবে ট্রফি-পদক তৈরির অর্ডার দিতাম। অনেক দিনের পুরোনো গ্রাহক হিসেবে সব সময়ই খুব খাতির পেতাম। দোকানের মালিক ছিলেন নারী। তার সঙ্গে আমার এমনই সখ্যতা যে সব সময় তিনি আমাকে তাদের কম্পিউটার কক্ষে আমন্ত্রণ জানাতেন। আমিও বিভিন্ন সময়ে সেখানে গিয়ে ছোটখাটো ভুল ত্রুটি শুধরে দিতাম। তিনি সেটি সাদরে গ্রহণ করতেন।
সেদিন তিনি ছিলেন না। আরেকজন সেদিন দায়িত্বে ছিলেন। আমি তাকে আগেও অনেকবার দেখেছি ও ভাবতাম, তিনি দোকানের একজন কর্মচারী। সেদিন আমাদের কাজটিতে কিছু সামান্য ভুল থাকায়, সেটি তাকে বলতে গেলাম। ভদ্রলোক আমার কথা একেবারে অগ্রাহ্য করে তেলেবেগুনে জ্বলে উঠলেন। আমার কাজটির ভুল সংশোধন তিনি করবেন না জানিয়ে দিলেন। এমনকি আমাদের কোনো বাংলাদেশি সংগঠনের ভবিষ্যতের কোনো কাজও এই দোকান আর কোনো দিন করবে না বলেও জানালেন। আমি খুবই অবাক হলাম। এ অবস্থায় মালিক কখন ফিরবেন তার কাছে জানতে চাইলাম। ভদ্রলোক জানালেন, তিনি তার স্বামী এবং তিনিই এই দোকানের মালিক। কাজেই তিনি যা বলবেন তাই-ই হবে এবং আমি যেন এই মুহূর্তে চলে যাই।
আমার যুক্তরাষ্ট্রের একুশ বছরের জীবনে কখনোই আমি এ রকম অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হইনি। আমি দোকানটি থেকে বের হয়ে গেলাম। পরে বাসায় গিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করলাম, ওই লোকটি কেন কিছু শোনার আগেই হঠাৎ আমার ওপর ক্ষেপে গেলেন। সে সময় প্রেসিডেন্ট পদ পেতে ডোনাল্ড ট্রাম্প অন্তত চারবার আমাদের অঙ্গরাজ্য সফর করেছেন। প্রতিবারই বিপুল জনসমাগম হয়েছে। আর বিভিন্ন জায়গায় তিনি মুসলমান ও অভিবাসীদের বিরুদ্ধে বক্তৃতা দিচ্ছেন আর অল্পশিক্ষিত শ্বেতাঙ্গদের উসকানি দিচ্ছেন।
অনেক ভেবে আমি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছলাম, আজ আমার সঙ্গে যা হয়েছে, সেটি সম্ভবত ট্রাম্প এফেক্ট। এই সব অল্প শিক্ষিত শ্বেতাঙ্গ লোকজন হয়তো মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেন আমদের মতো অভিবাসীদের জন্যই তাদের উন্নতি হচ্ছে না। এতদিন তারা চুপ করে ছিল। কিন্তু এখন তাদের মনের কথা বলার জন্য একজন নেতার আবির্ভাব হয়েছে। আর তিনি হচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কাজেই ট্রাম্প নির্বাচনে জিতলে তাদের আর পায় কে? তখনো আশা ছিল, ট্রাম্প মনে হয় শেষ পর্যন্ত রিপাবলিকান পার্টির নমিনেশন পাবেন না। কিন্তু যখন পেয়েই গেলেন, তখন আমার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তটি নিতে এক সেকেন্ডও দেরি হয়নি-এই ট্রাম্প এফেক্ট ঠেকাতে আমাকে এবং আমার মতো সবাইকে মাঠে নামতে হবে। সেই চিন্তা থেকেই আমি আমার কমিউনিটিতে আমার অনেক বন্ধুবান্ধব ও তাদের আত্মীয়স্বজনদের উদ্বুদ্ধ করে ডেমোক্রেটিক পার্টি ও হিলারি ক্লিনটনের প্রচারে স্বেচ্ছাসেবা দিয়েছি।
দুর্ভাগ্যবশত হিলারি ক্লিনটন শেষ পর্যন্ত জিততে পারেননি। তবে আমরা আমাদের বাংলাদেশি কমিউনিটি থেকে নির্বাচনের আগের আড়াই মাসে ১৫টি স্বেচ্ছাসেবী সেশনের ব্যবস্থা করেছিলাম অ্যারিজোনার তিনটি লেজিসলেটিভ ডিস্ট্রিক্টে। আমরা সবাই মিলে (দেড় শ স্বেচ্ছাসেবক) প্রায় এক হাজার ঘণ্টা ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রচারে স্বেচ্ছাশ্রম দিয়েছি। প্রতিটি সেশনে আমরা ২০-৩০ জন করে স্বেচ্ছাসেবক অংশগ্রহণ করতাম। আমাদের কাজ ছিল ফোনে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলা, তাদের ভোট দিতে উৎসাহিত করা, ভোটারদের ঘরে ঘরে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা এবং ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া, প্রার্থী সম্পর্কে ভোটারদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেওয়া ইত্যাদি। আমাদের বাংলাদেশি কমিউনিটির অনেক স্কুলপড়ুয়া শিশু-কিশোররাও আনন্দের সঙ্গে এই স্বেচ্ছাসেবী কাজে অংশ নিয়েছিল।
হিলারি ক্লিনটনের পাশাপাশি আমরা অন্যান্য অনেক আঞ্চলিক নির্বাচনের প্রার্থীদের প্রচারেও কাজ করেছি। সেই সব প্রার্থীর বেশ কয়েকজনকে আমরা নির্বাচনে জেতাতেও সক্ষম হয়েছি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো অ্যারিজোনার সর্ববৃহৎ ম্যারিকোপা কাউন্টির শেরিফ ও কাউন্টি রেকর্ডার প্রার্থী। এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ পদে যথাক্রমে ২৪ ও ২৮ বছরের রিপাবলিকান প্রার্থী এবার হেরে যায় ডেমোক্র্যাটদের কাছে। আর হিলারি ক্লিনটন অ্যারিজোনার মতো কট্টর রিপাবলিকান অঙ্গরাজ্যে মাত্র সাড়ে তিন শতাংশ ভোটে পরাজিত হন। এখানে উল্লেখ্য, গত দুটি নির্বাচনে বারাক ওবামা নয় বা দশ শতাংশেরও বেশি ভোট ব্যবধানে অ্যারিজোনাতে রিপাবলিকান প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়েছিলেন। সেই হিসেবে হিলারি ক্লিনটন অ্যারিজোনায় অনেক ভালো ভোট পেয়েছেন। এখন থেকে চার বছর পর ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে যিনি প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন করবেন-তিনি অবশ্যই এই পরিসংখ্যানটি মাথায় রাখবেন।

বাংলাদেশি আমেরিকান স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে ফিনিক্সের মেয়র গ্রেগ স্ট্যান্টন, মারিকোপা কাউন্টির শেরিফ পদপ্রার্থী পল পেঞ্জন (নির্বাচিত) ও লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র এরিক গার্সেটি
বাংলাদেশি আমেরিকান স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে ফিনিক্সের মেয়র গ্রেগ স্ট্যান্টন, মারিকোপা কাউন্টির শেরিফ পদপ্রার্থী পল পেঞ্জন (নির্বাচিত) ও লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র এরিক গার্সেটি

নির্বাচনের আগের আড়াই মাসের প্রচারে কাজে প্রতিদিনই আমার বিভিন্ন পেশা, গোত্র, দেশ ও বর্ণের লোকের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে। আমি পার্টির বেশ অনেকগুলো সভায় সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছি। অনেকের সঙ্গে মিশেছি ও কথা বলেছি। বিভিন্ন রকম অভিজ্ঞতা হয়েছে। বেশির ভাগ লোকজনকেই আমার খুবই বন্ধুভাবাপন্ন ও আন্তরিক মনে হয়েছে। তারা আমার সম্পর্কে ও আমি যেদেশ থেকে এসেছি অর্থাৎ বাংলাদেশ সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতে চেয়েছে। তবে আবার অনেক লোকেরই দেখা পেয়েছি যারা হয়তো একটু অন্য রকম, যারা আমার সঙ্গে কথা বলতে ততটা আগ্রহী নয়। তবে এমন কাউকেই পাইনি যাদের আমাদের কমিউনিটি বা বাংলাদেশ সম্পর্কে ভালো ধারণা আছে। তখন ঈদ ছিল, অনেককে আমি প্রার্থীসহ ঈদের জামাতে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। তখন তাদের বলেছি যে আমি মুসলমান। তাদের প্রায় এক ঘণ্টা মুসলমানদের ঈদ সম্পর্কে বিস্তারিত জ্ঞান দিতে হয়েছিল। বেশ কয়েকজন প্রার্থী ঈদের জামাতে এসেছিলেন মুসল্লিদের সঙ্গে পরিচিত হতে। তবে একটি সভায় ঈদের দাওয়াত দিতে গিয়ে কয়েকজনের চেহারা পরিবর্তন হতেও দেখেছি।
এ বিষয়টি নিয়ে পরে আমি অনেক ভেবেছি। আমরা বাংলাদেশিরা গত ২৫-৩০ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে একটি বর্ধিঞ্চু অভিবাসী কমিউনিটি হিসেবে বসবাস করছি। অ্যারিজোনাতে আমাদের বাংলাদেশি কমিউনিটিতেও আমাদের অনেক কর্মকাণ্ড। কিন্তু এখানকার সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ জনগণ আমাদের কমিউনিটি ও আমাদের সম্পর্কে একেবারেই অজ্ঞ। তাদের অনেকে হয়তো আবার মুসলমান হিসেবে আমাদের থেকে একটু দূরে থাকতেই পছন্দ করছে। আমি নিশ্চিত এটি শুধুমাত্র অ্যারিজোনায় নয় বরং বেশির ভাগ এলাকার চিত্রটাই এ রকম। এটি কেন হবে?
এর মধ্যেই নির্বাচনের ফলাফল এল। ডোনাল্ড ট্রাম্প সকল হিসাব-নিকাশ ভুল প্রমাণ করে অপ্রত্যাশিতভাবে নির্বাচনে জিতে গেলেন। এখনো নির্বাচনের চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে। সামনে আরও চলবে। অধিকাংশ বিশ্লেষক নির্বাচনে ট্রাম্পের এই বিজয়ের জন্য অল্পশিক্ষিত শ্বেতাঙ্গ কর্মজীবী শ্রেণি, যারা মনে করেন তাদের চাকরি বিদেশে চলে যাচ্ছে অথবা অভিবাসীরা নিয়ে নিচ্ছে, তাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণকে একটি নিয়ামক হিসেবে দেখছেন। এই সব ভোটারদের অনেকেই নাকি আগের কোনো নির্বাচনে ভোট দেননি অথবা ডেমোক্র্যাট প্রার্থীদের দিয়েছিলেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প জেতার সঙ্গে সঙ্গে আমি যেটি নিয়ে ভয়ে ছিলাম অর্থাৎ ট্রাম্প এফেক্ট, চারদিকে সেটি শুরু হয়ে গেছে। প্রায় প্রতি দিনই বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য থেকে খবর আসছে, আরবিতে কথা বলার জন্য কোনো মুসলমানকে প্লেন থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে, হিজাব পরা কোনো নারীকে অপমান করা হয়েছে, হিসপানিক কলেজছাত্রের দরজায় তাকে দেশে ফিরে যাওয়ার ভুয়া নির্দেশ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে, এমনকি ছোটদের স্কুলের অশ্বেতাঙ্গ শিক্ষার্থীরাও এসব হীন কর্মকাণ্ড থেকে রেহাই পাচ্ছে না। একটি স্কুলের সকল অশ্বেতাঙ্গ শিক্ষার্থীদের সবাইকে দেশ ছাড়ার ভুয়া নোটিশ (ডিপোর্টেশন নোটিশ) হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর এসবই করছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের উসকানিতে উদ্বুদ্ধ শ্বেতাঙ্গ সাধারণ জনগোষ্ঠীরই কেউ কেউ—যারা অন্যদের ব্যাপারে সম্পূর্ণ অজ্ঞ।
নির্বাচন শেষ কিন্তু এই নির্বাচনের কাজে আমার ব্যক্তিগত যে অভিজ্ঞতা হলো সেটি আমাকে বেশ চিন্তার মধ্যে ফেলে দিল। আমরা বাংলাদেশিরা এত দিন ধরে এখানে আছি, আমরা কেন মূলস্রোতের বা মূলধারার সাধারণ জনগণ থেকে দূরে। আমরা জানি যুক্তরাষ্ট্র মূলত অভিবাসীদের ভূমি। আদিবাসী (নেটিভ আমেরিকান) বাদে সবাই আসলে এ দেশে অভিবাসী। তবে মূলস্রোতের জনগণ বলতে আমি বোঝাচ্ছি—যারা এ দেশে কয়েক প্রজন্ম ধরে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিসেবে অবস্থান করছেন, তাদের। আমার প্রশ্ন, মূলধারার জনগণের বেশির ভাগ কেন আমাদের অস্তিত্ব ও কর্মকাণ্ড সম্পর্কে কিছুই জানবে না? আমি এখানে শুধুমাত্র কোনো বিশেষ রাজনৈতিক দলের সমর্থকদের কথা বলছি না, বরং মূলস্রোতের সবাইকে বোঝাচ্ছি। অনেক চিন্তা ও এই বিষয়ে কিছু গবেষণা করে আমি কিছু বিষয় বুঝতে পেরেছি। সেটিই আসলে এই লেখাটির মূল বিষয়।
আমরা প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাদের নিজেদের গণ্ডির ভেতর এতই ব্যস্ত যে, অন্য কোনো কিছুর জন্য আমাদের তেমন কোনো সময়ই নেই। একটি উদাহরণ দিই। উইকেন্ডের শুরু শুক্রবার রাত থেকেই আমাদের বাংলাদেশিদের দাওয়াত বা অনুষ্ঠানগুলো শুরু হয়। চলে রোববার রাত পর্যন্ত। আমার মনে আছে, এমনও উইকেন্ড গিয়েছে যেখানে আমার সঙ্গে আমাদের বাংলাদেশি কমিউনিটির বেশ কয়েকজনের চারবার দেখা হয়েছে বিভিন্ন দাওয়াত বা অনুষ্ঠানে। অথচ আমরা আমাদের এ দেশীয় মূলস্রোতের প্রতিবেশীদের সঙ্গে ‘হাই’-‘হ্যালো’র বাইরে তেমন একটা কথাও বলি না। তাদের সঙ্গে সময় কাটানোতো অনেক দূরের কথা। আমাদের অনেকের প্রতিবেশী হয়তো জানেনই না, যে আমরা কারা, আমরা কোথা থেকে এসেছি, আমাদের চিন্তা ভাবনা, ধ্যান ধারণা কি। কারণ তাদের আমরা কখনোই আমাদের সঙ্গে মেশার সুযোগ করে দিইনি বা তাদের সঙ্গে মেশার কোনো চেষ্টাই আমরা করিনি।

নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির দপ্তরে বাংলাদেশি আমেরিকান স্বেচ্ছাসেবক শিশু-কিশোররা
নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির দপ্তরে বাংলাদেশি আমেরিকান স্বেচ্ছাসেবক শিশু-কিশোররা

দেখা যায় আমাদের সন্তানদেরও ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাও বেশির ভাগই আমাদের কমিউনিটিরই অন্য কারও সন্তান। মূলস্রোতের কোনো সমবয়সী যাদের সঙ্গে তারা স্কুলে বা কলেজে একসঙ্গে পড়ে, তাদের সঙ্গে একটা দূরত্ব থাকেই। এদের বেশির ভাগেরই দেখা যায় মূলস্রোতের বন্ধুদের সঙ্গে মিশতে বেশ অসুবিধেই হয়।
আমাদের কমিউনিটির অনুষ্ঠানগুলোতে আমরা পারতপক্ষে মূলস্রোতের সাধারণ জনগণকে আমন্ত্রণ জানাই না। কেউ মূলস্রোতের কাউকে কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে নিয়ে আসলেও সেই অনুষ্ঠানগুলো তারা হয়তো তেমন একটা উপভোগ করেন না। কারণ সেখানে কোনো ইংরেজি ধারাভাষ্য বা ইংরেজি ভাষায় উপস্থাপনা রাখা হয় না।
বর্তমানকালে ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলোর (যেমন ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদি) মাধ্যমে আপনি অন্যের সঙ্গে খুব সহজেই যোগাযোগ স্থাপন করতে পারেন। আপনার মনের চিন্তা ভাবনাগুলো অন্যের সঙ্গে শেয়ার করতে পারেন বা অন্যের স্ট্যাটাস, ছবি, লেখায় লাইক বা কমেন্ট করে আপনি তার সঙ্গে আপনার মতের মিল বা অমিল নিয়ে আলোচনা করতে পারেন। খুব সহজেই আমরা ফেসবুকে একে অন্যের বন্ধু হয়ে যেতে পারি। আমার ফেসবুক বন্ধু তালিকায় এমন অনেকেই আছেন যাদের সঙ্গে আমার কোনো দিনও দেখা হয়নি, আমি তাদের ভালো মতো চিনিও না। কয়েকজন হয়তো একেবারেই অপরিচিত। কিন্তু তাদের ফেসবুক আপডেট আমি পাই। তাদের চিন্তা ভাবনা সম্পর্কে ফেসবুকের মাধ্যমে আমার একটি ধারণা তৈরি হয়েছে। আবার তাদের অনেক ফেসবুক বন্ধু, কিন্তু আমার বন্ধু তালিকায় নেই, তাদের সম্পর্কেও অনেক ধারণা পাই।
সেদিন হঠাৎ মনে হলো, আরে! ফেসবুকতো একটা ভালো মাধ্যম যেটি দিয়ে আমরা মূলস্রোতের সাধারণ জনগণের কাছে পৌঁছতে পারি। নিশ্চয়ই আমার অনেক প্রবাসী ফেসবুক বন্ধু সেই কাজটি করছেন। আমি কিছুটা অনুসন্ধিৎসু হয়ে আমার বন্ধুদের মধ্যে যারা ফেসবুকে বেশ সরব-তাদের ফেসবুক বন্ধু তালিকা ঘুরে এলাম। কিন্তু যা দেখলাম তার জন্য আমি একদম প্রস্তুত ছিলাম না। হাতেগোনা মাত্র কয়েকজন ছাড়া আমার ফেসবুকের প্রবাসী বন্ধুদের কারও বন্ধু তালিকায় আমি একজনও মূলস্রোতের কাউকে খুঁজে পাইনি। আমার বন্ধু তালিকায় অনেক বিজ্ঞ, প্রতিভাবান, বিখ্যাত ব্যক্তি বা কমিউনিটির নেতা আছেন। আমি আশা করেছিলাম যে, তারা নিশ্চয়ই ফেসবুককে কিছুটা হলেও ব্যবহার করছেন মূলস্রোতের আমাদের পরিচয়টি প্রচার করার জন্য। এখানে একটি স্বীকারোক্তি দিতেই হয়, কিছুদিন আগ পর্যন্ত আমার নিজের ফেসবুক বন্ধু তালিকাতে বাংলাদেশি অথবা ভারতীয় বংশোদ্ভূত বন্ধুদের বাইরে খুব বেশি কেউ ছিল না।
তার মানে কি দাঁড়াল? আমরা প্রবাসী বাংলাদেশিরা বেশির ভাগই ফেসবুক শুধু ব্যবহার করি নিজেদের মধ্যে আলাপ করার জন্য। এখানেও আমরা কমফোর্ট জোনের বাইরে যাই না। ফ্রান্স, বেলজিয়াম বা ক্যালিফোর্নিয়ায় সন্ত্রাসী হামলা হলে আমরা হৃদয় বিদারক, সহানুভূতিশীল স্ট্যাটাস দিয়ে ফেসবুক কাঁপিয়ে দিই। কিন্তু একবারও ভাবি না, এই স্ট্যাটাসটা পড়ছি আমরা নিজেরাই, নিজেদের কমিউনিটির লোকেরাই, শুধু বাংলাদেশিরাই। কিন্তু যাদের সেই সহানুভূতি জানানোর দরকার ছিল, যাদের বোঝানোর দরকার ছিল, আমরাও সেই সন্ত্রাসবাদ ঘৃণা করি, আমরাও আহতদের বা নিহতদের স্বজনদের পাশে আছি, তারা কিন্তু জানলই না। কারণ তাদের কেউই আমাদের ফেসবুক বন্ধু তালিকায় নেই।
সেদিন এক বাংলাদেশি ভদ্রলোক বলছিলেন, অনেক বছর আগে একবার তার বাসায় বাংলাদেশ দূতাবাসের এক কর্মকর্তা বেড়াতে এসেছিলেন। তাকে বিদায় দেওয়ার সময় তিনি দেখেন তার অতিথির গাড়িতে কে বা কারা ডিম ছুড়ে মেরেছে। তিনি আন্দাজ করতে পারলেন কাজটি খুব সম্ভবত তার কোনো একটি প্রতিবেশীর। এর দুই-এক সপ্তাহের মধ্যে তিনি তার সব প্রতিবেশীদের প্রথমবারের মতো বাসায় দাওয়াত করলেন এবং কথা প্রসঙ্গে তাদের বাংলাদেশ সম্পর্কে একটি ধারণা দিলেন। এর কয়েক দিন পর সেই প্রতিবেশীদের একজন তার বাসায় এসে তার অতিথির গাড়িতে ডিম মারার জন্য ক্ষমা চাইল এবং জানাল, সে তাকে এত দিন বাংলাদেশি বা ভারতীয় (প্রথম সাক্ষাতে অনেকেই তা ভাবে) নয় বরং অন্য একটি দেশের নাগরিক ভেবেছিল, যে দেশের কয়েকজন সন্ত্রাসী তার ঠিক কিছুদিন আগে কোথাও একটি বড় সন্ত্রাসী হামলা করেছিল।
কাজেই যখনই কোথাও কোনো সন্ত্রাসী হামলা হয় আর মুসলমানদের নাম জড়িয়ে যায়, তখন আমাদের প্রতিবেশীরা যাদের সঙ্গে আমরা কখনোই যোগাযোগ করার চেষ্টা করিনি, কোনো আলাপ-পরিচয় নেই, তারা যদি ওই ঘটনার পর আমাদের মুসলমান হিসেবে ভয় পায়, সেটিতো খুবই স্বাভাবিক একটি ব্যাপার হবে, তাই না? আর যদি আমাদের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত পর্যায়ে হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক থাকত, তাহলে এ রকম কোনো সন্ত্রাসী ঘটনায় সে আমাদের মুসলমান হিসেবে সন্ত্রাসীদের থেকে অবশ্যই আলাদা করতে পারতো এবং আমাদের পাশে এসে দাঁড়াত, যেন আমরা সংখ্যালঘু হিসেবে ভয় না পাই। এই লেখাটি যখন লিখছি তখন পরপর তিন দিন বিশ্বের তিনটি ভিন্ন জায়গায় সন্ত্রাসী হামলা হলো। আর সবগুলোর সঙ্গেই মুসলমানদের নাম কোনো না কোনো ভাবে জড়িয়ে আছে। আর এ রকম চলছে বলেই আমাদের মতো শান্তিপ্রিয় জনগোষ্ঠী সংখ্যালঘু হিসেবে প্রবাসের বিভিন্ন জায়গায় সামাজিকভাবে অনেকের কাছে হেয় হচ্ছি যারা আমাদের সম্পর্কে কিছুই জানে না।
সেদিন ন্যাশনাল পাবলিক রেডিওতে বলছিল, ইহুদিরা যখন প্রথম যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিল, তাদেরও মূলস্রোতে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করতে অনেক বেগ পেতে হয়েছিল। ক্রিসমাসের বেশির ভাগ জনপ্রিয় গানই নাকি ইহুদিদের লেখা ও সুর করা। আর তখন সেটি তারা করেছিল মূলস্রোতে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্যই। এ রকম আরও অনেক কিছুই তারা করেছে। তারই ফলে এখন আমরা সবাই জানি যে যুক্তরাষ্ট্রে ইহুদিদের অবস্থান কোথায় গিয়ে পৌঁছেছে। তাদের প্রধান উৎসব ‘হানুকাহ’ সম্পর্কে এ দেশের প্রতিটি লোক অবগত। কিন্তু আমাদের মুসলমানদের ‘ঈদ’ বা হিন্দুদের ‘পূজা’ সম্পর্কে এখনো বেশির ভাগ মানুষই অজ্ঞ। উল্লেখ্য কিছুদিন আগে একটি সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ৬০ শতাংশ আমেরিকানদের জীবনে কোনো দিন কোনো মুসলমানদের সঙ্গে দেখা হয়নি এবং ৪৬ শতাংশের মুসলমানদের সম্পর্কে খারাপ ধারণা পোষণ করেন। আর এটি যদি আসলেই সত্যি হয়, সেটি হবে খুবই চিন্তার বিষয়।

কংগ্রেস প্রতিনিধি পদপ্রার্থী তালিয়া ফুয়েন্টেসের সঙ্গে শিশু-কিশোর স্বেচ্ছাসেবকেরা
কংগ্রেস প্রতিনিধি পদপ্রার্থী তালিয়া ফুয়েন্টেসের সঙ্গে শিশু-কিশোর স্বেচ্ছাসেবকেরা

স্বাভাবিকভাবে আমরা সবাই আমাদের নিজেদের কমফোর্ট জোন নিয়ে থাকতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা বাংলাদেশি দাওয়াতেও বন্ধুদের বাইরে অন্য কারও সঙ্গে কথা বলে আরাম পান না, কাজেই কথাও বলেন না। মূলস্রোতের কারও সঙ্গে বন্ধুত্বে আবার অনেকেরই হয়তো ভাষাগত সমস্যা আছে বলে মনে করেন। কাজেই সেদিকে পা বাড়ান না। কিন্তু বিষয়টি ভেবে দেখবেন, মূলস্রোতের সাধারণ জনগণের থেকে ধীরে ধীরে আমরা অনেক দূরে সরে যাচ্ছি, যেটি আমাদের ও আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য খুবই ক্ষতিকারক একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
বিষয়টির সমাধানে আমি, আপনি অথবা এক বা দুজন কোনো পদক্ষেপ নিলে হবে না। সবাইকে নিতে হবে সম্মিলিতভাবে। আমাদের সম্পর্কে মূলস্রোতের সাধারণ জনগণের অজ্ঞতাই তৈরি করে অযাচিত ভয় ও অহেতুক সন্দেহ। সেটি দূর করতে হবে আমাদেরই। আমাদের নিজেদের বাংলাদেশি/বাঙালি সত্তা এবং ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়েই মূলস্রোতের জনগণের কাছে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। প্রতিষ্ঠিত করতে হবে মূলস্রোতের সাধারণ জনগণের কাছে।
এ প্রসঙ্গে আমরা আসলে কী কী করতে পারি:
প্রতিবেশীদের সঙ্গে ভাব গড়ে তুলুন। সম্পর্ক শুধুমাত্র ‘হাই’-‘হ্যালো’র মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখবেন না। তাদের নিজের বাসায় দাওয়াত করুন। তাদের বাসায় বেড়াতে যান। তাদের সন্তানদের সঙ্গে নিজের সন্তানদের খেলাধুলার ব্যবস্থা করুন। একসঙ্গে নেইবারহুড আউটিং, পিকনিক বা মুভি ডেট, প্লে ডেটের ব্যবস্থা করতে পারেন। বাগানের ফল, সবজি, রান্না আদান প্রদান করতে পারেন, যেমনটি আপনি বাংলাদেশে থাকতে প্রতিবেশীদের সঙ্গে করতেন।
সন্তানদের স্কুলের বন্ধু ও তাদের পরিবারদের বাসায় দাওয়াত দিন। বিভিন্ন অ্যাক্টিভিটি আয়োজন করুন।
প্রতিবেশী ও অন্যান্যদের বিশেষ দিবসে (নতুন বছর, ক্রিসমাস, ঈদ বা পূজায়) উপহার দিন।
মূল স্রোতের প্রতিবেশীদের সঙ্গে একসঙ্গে বসে ফুটবল ও বাস্কেটবল খেলা উপভোগ করুন।
সন্তানদের স্কুলে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করুন, ফিল্ড ট্রিপে শামিল হন। শিক্ষকদের সাহায্য করুন। স্কুলের শিক্ষক-অভিভাবক কমিটিতে (পিটিএ) যোগ দিন।
আপনার হোম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনে (এইচওএ) যোগ দিন।
যেকোনো মূলস্রোতের স্বেচ্ছাসেবা কাজে স্বতঃস্ফূর্তভাবে যোগ দিন। মূলস্রোতের কোনো স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনে যোগ দিতে পারেন।
সন্তানদের স্পোর্টস ক্লাবে কোচ, সহকারী কোচ বা ‘টিম মম’ বা ‘ড্যাড’ হিসেবে স্বেচ্ছাশ্রম দিন।
সন্তানদের স্কাউট ট্রুপে টিম লিডার হোন বা লিডারকে সহায়তা করুন।
ঈদ বা পুজোয় প্রতিবেশী ও সহকর্মীদের বাসায় দাওয়াত দিন।
আপনার কমিউনিটির বাংলাদেশি অনুষ্ঠানে আপনার পরিচিত মূলস্রোতের কাউকে (প্রতিবেশী, সন্তানের স্কুলের বন্ধু ও শিক্ষককে) দাওয়াত করুন। আয়োজকদের অনুরোধ করুন যেন অনুষ্ঠানটি মূলস্রোতের দর্শকরাও বুঝতে পারে।

হিলারি ক্লিনটনের নির্বাচনী প্রচারে অ্যারিজোনাতে সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্সের সঙ্গে সস্ত্রীক লেখক
হিলারি ক্লিনটনের নির্বাচনী প্রচারে অ্যারিজোনাতে সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্সের সঙ্গে সস্ত্রীক লেখক

ফেসবুকের বন্ধু তালিকায় মূলস্রোতের বন্ধু যুক্ত করুন। এটি সবচেয়ে সহজ উপায় অন্যদের নিজেদের সম্পর্কে জানানোর।
এর বাইরেও নিশ্চয়ই আপনার নিজেরও এ ব্যাপারে অনেক আইডিয়া থাকবে।
মূল কথা হলো, সবাই বিষয়টি নিয়ে একটু ভাবুন। নিজেদের কমফোর্ট জোন থেকে বা নিজেদের সীমিত গণ্ডি থেকে একটু বেরিয়ে আসুন। অভিবাসীদের সম্পর্কে মূলস্রোতের সাধারণ জনগণের অজ্ঞতা দূর করুন। তাদের কাছে নিজেদের অস্তিত্ব প্রতিষ্ঠিত করুন।

*লেখক যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা প্রবাসী। একজন সমাজকর্মী। পেশায় প্রকৌশলী।