আমার ঘুম

প্রতীকী ছবি। সংগৃহীত
প্রতীকী ছবি। সংগৃহীত

কয়েক দিন আগের কথা। সেদিন সকাল এগারোটায় আমি ঘুম থেকে উঠেছি। চোখ মেলে আমি নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারিনি। কারণ, তখন দুপুর হওয়ার পথে আর সকাল দশটায় আমার পরীক্ষা শুরু। মনে হয়েছিল আমি হয়তো স্বপ্নের মধ্যে আছি, তবে দুর্ভাগ্যবশত সেটাই ছিল বাস্তব। যেহেতু সেদিন তিনটি পরীক্ষা ছিল, সে জন্য আমি রাত সাড়ে তিনটা পর্যন্ত পড়াশোনা করেছি। তারপর ক্লান্ত হয়ে বিশ্রাম নিতে ঘুমাতে গেলাম। ঘুমানোর আগে নিশ্চয়ই ঘুম ভাঙানোর জন্য ঘড়িতে অ্যালার্ম দিয়ে রেখেছিলাম। তবু সকালে আমি সেই শব্দ একদম শুনতে পাইনি। কখনো কখনো আমি সকালে ঘুম থেকে উঠতে পারি না। বিশেষ করে শীতের ঠান্ডা দিনে গরম বিছানা থেকে উঠতে চাই না।
ঘুম আসলেই আমি ভালোবাসি। ছুটির দিনে আমি প্রায়ই সারা দিন ঘুমাই। অনেকক্ষণ ঘুমানো আমার সুখ। খাওয়া ও ঘুমানো তো আমাদের জীবনের অপরিহার্য অংশ। এই দুটিতেই আমার আনন্দ। সুস্বাদু খাবার খাওয়ার জন্য অনেক টাকা দরকার, কিন্তু ভালো ঘুমানোর জন্য কোনো টাকার দরকার নেই। শুধু বিছানা থাকলেই সুখের স্বপ্নরাজ্যে চলে যাওয়া যায়।
মানুষের জন্য ঘুম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রোজ যথেষ্ট ঘুম ছাড়া মানুষের পক্ষে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। যখন আমরা ঘুমাই, তখন শরীর আর মস্তিষ্ক বিশ্রাম নেয়। গবেষকেরা বলেন, মানুষের তিন মহান ইচ্ছার মধ্যে ঘুম হচ্ছে সবচেয়ে জরুরি। যদি আমরা দুই-তিন দিন কিছুই না খাই, তাহলে আমরা মারা যাব না। কিন্তু দুই-তিন দিন একদম না ঘুমালে আমাদের শরীরে নানারকম বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে। শুধু শরীরে নয়, মাথাও কাজ করবে না, যেমন হয়েছিল আমার বেলায়।

প্রতীকী ছবি। সংগৃহীত
প্রতীকী ছবি। সংগৃহীত

জাপানিরা অন্য দেশের মানুষের চাইতে সবচেয়ে কম সময় ঘুমান। অনেক কর্মী সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করেন। কারও আবার পর্যাপ্ত বিশ্রামের সময় একদম নেই। আমার সন্দেহ হয় জীবনে তারা সুখী কিনা। জাপানে ট্রেনের ভেতরে প্রচুর লোকজনকে ঘুমাতে দেখা যায়। মনে হয়ে সমাজ সামগ্রিকভাবে ক্লান্ত হয়ে পড়ছে। জাপানের সমাজে এখন কাজের সেরকম অস্বাভাবিক পরিবেশ কীভাবে বদলে নেওয়া যায় সেদিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। মনে হয় সুখী জীবনের জন্য বিশ্রাম আর ঘুম নিয়ে জাপানের নতুন করে ভেবে দেখা উচিত।
ইয়ুতো মোরিইয়ামা: তৃতীয় বর্ষ, বাংলা বিভাগ, টোকিও বিদেশ চর্চা বিশ্ববিদ্যালয়, জাপান।