শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় টোকিওতে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উদ্যাপন

শিশুদের সঙ্গে নিয়ে কেক কাটছেন রাবাব ফাতিমা
শিশুদের সঙ্গে নিয়ে কেক কাটছেন রাবাব ফাতিমা

টোকিওতে ছোট্ট শিশু-কিশোররা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সিক্ত করেছে ভক্তি ও ভালোবাসায়। স্মরণ করেছে গভীর শ্রদ্ধা ও মমতায়। বঙ্গবন্ধুর ৯৮তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ দূতাবাসে গত ১৯ মার্চ রোববার আয়োজন করা হয়েছিল শিশুমেলার। এই শিশুমেলা হয়ে উঠেছিল জাপানপ্রবাসী নতুন প্রজন্মের শিশু-কিশোরদের এক মিলনমেলা। টোকিও ও আশপাশের অঞ্চল থেকে আগত প্রবাসী বাংলাদেশি ও তাদের সন্তানদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি হয়ে উঠে যেন বাংলাদেশের বিমূর্ত এক প্রতিরূপ।

শিশুমেলায় বাংলাদেশ ও বাংলা ভাষার প্রতি প্রগাঢ় অনুরাগ ও ভালোবাসা প্রকাশ পেয়েছে শিশু-কিশোরদের প্রতিটি গানের স্বরলিপি, নাচের ছন্দ ও কুইজের উত্তরে। তাদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি রূপান্তরিত হয় যেন এক স্বপ্নের বাংলাদেশে। যেখানে প্রবাসে জন্মগ্রহণকারী নতুন প্রজন্মের বাংলাদেশিরা বুঝে উঠতে পেরেছে যে, তারাও হচ্ছে সমৃদ্ধ বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের গর্বিত অংশীদার।
এর আগে গত ১৭ মার্চ শুক্রবার টোকিওতে বঙ্গবন্ধুর ৯৮তম জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস যথাযথ মর্যাদায় উদ্‌যাপন করা হয়। মূল আনুষ্ঠানিকতায় ছিল জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বাণী পাঠ, মোনাজাত, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানানো ও আলোচনা সভা। তবে প্রবাসী বাংলাদেশি শিশু-কিশোরদের সর্বাধিক অংশগ্রহণের সুবিধার্থে ১৯ মার্চ বৃহত্তর পরিসরে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উদ্‌যাপনের অংশ হিসেবে দূতাবাস এই শিশুমেলার আয়োজন করে।

সাংস্কৃতিক পরিবেশনা
সাংস্কৃতিক পরিবেশনা

অনুষ্ঠানের শুরুতে জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বঙ্গবন্ধু ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে জাতির জনকের জীবন ও কর্মের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ছোটবেলা থেকেই বঙ্গবন্ধু যেভাবে অন্যের পাশে দাঁড়িয়ে ‘খোকা’ থেকে জাতির জনকে পরিণত হয়েছিলেন এবং শিশু-কিশোররা যেভাবে বঙ্গবন্ধুকে আপন করে নিয়েছিল, সেই উত্তরণ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে জাতির জনকের আদর্শকে আমাদের মননে ও কর্মে ধারণ করতে হবে।
অনুষ্ঠানের প্রধান আকর্ষণ ছিল নতুন প্রজন্মের শিশু-কিশোরদের প্রাণবন্ত অংশগ্রহণে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ওপর কুইজ প্রতিযোগিতা। বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধুর ওপর নতুন প্রজন্মের জ্ঞান উপস্থিত আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দকে মুগ্ধ করেছে। শিশুদের সাবলীল প্রশ্নোত্তর দেখে বোঝা যায় সুদূর প্রবাসে থেকেও বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে গভীর সম্পর্ক এরা অনুভব করে।

যেমন খুশি সাজোর প্রতিযোগীদের সঙ্গে রাবাব ফাতিমা
যেমন খুশি সাজোর প্রতিযোগীদের সঙ্গে রাবাব ফাতিমা

এ ছাড়া শিশুমেলার অন্যতম আকর্ষণ ছিল শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে যেমন খুশি তেমন সাজো প্রতিযোগিতা। উপস্থিত অতিথিরা তুমুল করতালির মধ্যে দিয়ে বিভিন্ন সাজসজ্জায় মঞ্চে উপস্থিত হওয়া ছোট্ট শিশুদের উৎসাহিত করেন। শিশুদের সাজসজ্জার মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ জননী, বীরাঙ্গনা, গৃহবধূ—এ রকম বিভিন্ন চরিত্র ফুটিয়ে তুলা হয়। ‘একটি বাংলাদেশ’ ও ‘সোহাগ চাঁদ বদনি’-এর সঙ্গে শিশু-কিশোরদের দলীয় নৃত্য এবং সমবেত কণ্ঠে ‘ঝিক ঝিক চলে রেলগাড়ি’ উপস্থিত আমন্ত্রিত অতিথিদের মুগ্ধ করেছে।
অনুষ্ঠান শেষে কুইজ, যেমন খুশি তেমন সাজো প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীসহ সকল শিশু-কিশোরকে সঙ্গে নিয়ে রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা জন্মদিনের কেক কাটেন ও প্রতিযোগীদের হাতে আকর্ষণীয় পুরস্কার তুলে দেন। সমবেত কণ্ঠে ‘শোন একটি মুজিব’ গানটি পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়। বিজ্ঞপ্তি।