বেইজিংয়ে বাঙালির বর্ষবরণ
চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে বরণ করা হয়েছে বাংলা নববর্ষ। চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. ফজলুল করিমের দিকনির্দেশনায় বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে প্রবাসী বাঙালিদের নিয়ে উদ্যাপিত হয় বাঙালির সেই মিলনমেলা বাংলা বর্ষবরণ। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার প্রবাসী বাঙালি ও চীনা নাগরিকসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকেরা উপস্থিত ছিলেন।
এবারের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান আরও প্রাণবন্ত হয় বাংলাদেশ সরকারের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের উপস্থিতির কারণে। তিনি ২০ সদস্যের একটি দল নিয়ে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বেইজিংয়ের বাংলাদেশ দূতাবাসে গত শনিবার (২২ এপ্রিল) বর্ষবরণের এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের আগমনের পর র্যালির মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর আ ক ম মোজাম্মেল হক ও মো. ফজলুল করিমের বক্তব্য, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বাঙালি খাবার, দেশীয় খেলাধুলা ও পুরস্কার বিতরণের মাধ্যমে বিকেলে অনুষ্ঠানটি শেষ হয়।মো. ফজলুল করিম তার বক্তব্যে বাংলা নববর্ষের উৎপত্তি ও বিকাশ নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি গুরুত্ব দেন মেধা ও মননের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টির করে দেশের অর্থনীতিকে আরও সুদৃঢ় করার ওপর।
আ ক ম মোজাম্মেল হক বর্তমানে আমরা যে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের পতাকাতলে দাঁড়িয়ে নববর্ষ পালন করি, সেই পতাকা অর্জনের জন্য যে সংগ্রাম এবং সেই সংগ্রামের পুরোধা ব্যক্তিত্ব জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বিনম্রচিত্তে স্মরণ করেন।
তাদের দুজনের বক্তব্যের পর কবিগুরুর ‘এসো হে বৈশাখ’ সমবেত সংগীত দিয়ে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বাঙালিদের পাশাপাশি বেইজিং বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের চীনা শিক্ষার্থীরাও একটি রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করেন। আরও কিছু গানের পাশাপাশি ছিল দেশীয় নৃত্য, দেশাত্মবোধক গানের যন্ত্রসংগীত এবং চীনে প্রশিক্ষণরত বাংলাদেশি খুদে অ্যাক্রোবেটিক দলের পরিবেশনা।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি বাংলাদেশি ফুচকার মতো জনপ্রিয় খাবার থেকে শুরু করে বিভিন্ন পিঠা, মিষ্টির একটি পসরা সাজানো ছিল মঞ্চের কাছাকাছি। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে দুপুরের খাবার হিসেবে ছিল বিভিন্ন প্রকারের ভর্তা, ডাল ভুনা, ছোট ও বড় মাছের তরকারিসহ বাহারী খাদ্যদ্রব্য।
পরবর্তীতে শিশুদের বিস্কুট দৌড়, কিশোরী ও নারীদের চেয়ার খেলা, কিশোরদের ক্রিকেট, বিবাহিত যুগলসহ অন্যান্যদের জন্য বিভিন্ন খেলার ব্যবস্থা ছিল।
দুপুর গড়িয়ে মাঝ বিকেলে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণার আগে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। সারা দিনের অনুষ্ঠান শেষে আয়োজক কমিটির তৃপ্তির হাসি দেখে আমরাও আনন্দিত হয়ে সবাই নিজেদের অস্থায়ী নীড়ের উদ্দেশে পা বাড়াই।
*কৃষ্ণ প্রসাদ মণ্ডল: শিক্ষার্থী, বেইহাঙ বিশ্ববিদ্যালয়, বেইজিং, চীন। ইমেইল: [email protected]