মা যে আমার সাত রাজার ধন

প্রতীকী ছবি। সংগৃহীত
প্রতীকী ছবি। সংগৃহীত

কিশোরী মায়ের আদরের দুলাল, হয়ে গেছি বুড়ো
মায়ের কাছে আজও আমি রয়ে গেলাম ছোট।

মা বলে ডাকি যখন, বাবা বলে বলে, খোকন
একটুখানি অসুখ হলে, আজও মায়ের অশ্রু ঝরে।

খেলার মাঠে যেতাম যখন, মা আড়ালে দেখত তখন
একটুখানি হোঁচট খেলে, মা বলত উফ।
পড়ার টেবিলে রাত জাগলে, মা বসে থাকত পাশে
ভোর সকালে আজান হলে, তুলত আদরের ডাকে।

প্রবাসে আসি আমি যখন, মা যে আমার কাঁদে তখন
ফিরে গেলে মায়ের কোলে, কপাল চোখে চুমু আঁকে।
হামাগুড়ি, শৈশব, কৈশোর কিংবা যৌবনকাল
মায়ের কাছে কচি খোকা, হোক সে বৃদ্ধকাল।

মায়ের এক ফোঁটা দুধের ঋণ, কেউ শোধিতে না পারে
মা থাকিতে মা ডাকতে পারে না, সে যে অভাগারে।
প্রথম ছেলের বউ এলে ঘরে, প্রথম খুশি সবাই
ভাই-ভাবিতে মিলের মেলা, মা কোলে সবাই।

দ্বিতীয় বউ আসলে পড়ে, মা পড়ে বিপাকে
তৃতীয় বউ আসলে ঘরে, মায়ের কষ্ট বাড়ে।
কাকে রেখে কাকে দেবে, ভালোবাসার চাবি
ছেলে বউদের আপন খায়েশ, স্বার্থ মতলবি।

ছেলেরা সব বউ সন্তানের, ভবিষ্যতের, ভাবনা শুধু ভাবে
মা যে আমার ছেলে হারিয়ে, আঁচলে চোখ মোছে।
মায়ের ভালোবাসা কম হয় না কভু, সন্তান নাহি বোঝে
মা চলে গেলে পরপারে, সে সন্তানেরা নিজের ভুলটা বোঝে!

মা থাকিতে মায়ের আঁচল, ছাড়িস না বন্ধু, ভাই-বোন
মা ছাড়া এই দুনিয়াটা শূন্য, মরুভূমি, মমতাহীন।
কিশোরী মায়ের আদরের দুলাল হয়ে গেছি বুড়ো
মায়ের কাছে আজও আমি রয়ে গেলাম ছোট।

মা-বাবা যেন যায় না ওরে বৃদ্ধাশ্রমে
শিশুকাল ফিরে আসে মা বাবার বৃদ্ধকালে,
তুমি আমি শিশু ছিলাম কি করেছেন মা-বাবা,
চোখ বন্ধ করে এখনই ওরে মা-বাবার পা ছুঁয়ে দেখ না।

সারা পৃথিবীর শান্তি আছে, মা-বাবার ছায়াতলে,
কেমন লাগবে বুকের ভেতর, ভেবে দেখ একবার,
তোমার সন্তান দূরে গেলে।

মায়ের পদতলে সন্তানের জান্নাত, এমনি কি বলে?
মা যে আমার সাত রাজার ধন, জন্ম যার জঠরে।
বউদের বলি, তোমরাও মা, মাকে মা ভেবো, শত্রু না।
মাদের বলি পত্রবধূকে কন্যা ভেবো, ছেলে কেড়ে নেওয়া ডাইনি, রাক্ষসী না।

মাগো আমি তোমার কোলে সারা জীবন থাকতে চাই
তোমার মমতার আঁচলে মাগো স্বর্গ সুখ খুঁজে পাই।

(জগতের সকল মায়ের প্রতি উৎসর্গ)

লেখক সিঙ্গাপুরপ্রবাসী।