গুজরাটের আন্তর্জাতিক শিল্প প্রদর্শনীতে বাংলাদেশ

বাংলাদেশের স্টল
বাংলাদেশের স্টল

ভারতের দক্ষিণ গুজরাটের আন্তর্জাতিক মেগা শিল্প প্রদর্শনীতে প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণ করেছে বাংলাদেশ। প্রদর্শনীতে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে মুম্বাইয়ের বাংলাদেশ উপহাইকমিশন। পাঁচ দিনব্যাপী (১৮-২২ জানুয়ারি) এই প্রদর্শনী সুরাটে অনুষ্ঠিত হয়। এর আয়োজন করে সুরাটের চেম্বার অ্যান্ড কমার্স।

মুম্বাইয়ের বাইরে কোনো আন্তর্জাতিক শিল্প প্রদর্শনীতে এটাই মুম্বাইয়ের বাংলাদেশ উপহাইকমিশনের প্রথম অংশগ্রহণ। এ প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে আগত অতিথিদের মাঝে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশি পণ্য তুলে ধরার সুযোগ সৃষ্টি হয়। সুরাটের আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী ও কনভেনশন সেন্টারে (এসআইইসিসি) অনুষ্ঠিত এ ইভেন্টে ৬টি দেশ এবং ভারত ও আন্তর্জাতিক প্রায় ২৫০টি শিল্প ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে।
গুজরাটের প্রাদেশিক সরকারের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রুপানি গত ১৭ জানুয়ারি প্রদর্শনীটি উদ্বোধন করেন। বিভিন্ন ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর প্রতিনিধি, প্রাদেশিক সরকারের একাধিক মন্ত্রী, পার্লামেন্ট সদস্য ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিজয় রুপানি বাংলাদেশে রপ্তানি বাণিজ্য বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্পের উন্নতির ভূয়সী প্রশংসা করেন। বিষয়টি গুজরাটের গণমাধ্যমে যথাযথ স্থান পায়। এ সময় তিনি ভারতীয় ব্যবসায়ীদের এ অগ্রগতিকে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হিসেবে গ্রহণ করার অনুরোধ জানান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের অন্যতম গেস্ট অব অনার মুম্বাইয়ে বাংলাদেশের উপহাইকমিশনার মোহাম্মদ লুৎফর রহমান-তাঁর বক্তব্যে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের মাধ্যমে লাভবান হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেন। এ সময় উপহাইকমিশনের পক্ষ থেকে সম্ভব সব ধরনের সহযোগিতা এবং দ্রুততম সময়ে ভিসা ইস্যুর যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে তা অবহিত করা হয়।
বাংলাদেশে বিদেশি বিশেষত ভারতীয় বিনিয়োগ আকর্ষণ ছাড়াও ভারতে বাংলাদেশে উৎপাদিত পণ্যের বাজার সম্প্রসারণ এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যে উপহাইকমিশন এই এক্সপোতে অংশগ্রহণ করে। প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের দীর্ঘদিনের কূটনৈতিক, বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে। এ সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে প্রধানত ভারতীয় ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা, বিনিয়োগকারী এবং মিডিয়াকর্মীদের নিকট বাংলাদেশের অপার বিনিয়োগ সম্ভাবনা, বাংলাদেশের রপ্তানিযোগ্য পণ্য ও বাংলাদেশের পর্যটনশিল্প সম্পর্কে অধিকতর ধারণা প্রদানের লক্ষ্যে এই এক্সপোতে অংশগ্রহণ করা হয়।

বাংলাদেশের স্টল
বাংলাদেশের স্টল

‘বাংলাদেশ: ইয়োর নেক্সট বিজনেস ডেসটিনেশন’ শীর্ষক নিজস্ব স্টলের মাধ্যমে পাঁচ দিনব্যাপী এ প্রদর্শনীতে আগত হাজার হাজার দর্শনার্থী ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে উপহাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সফলভাবে প্রচার-প্রচারণা চালানোর পাশাপাশি তাঁদের অসংখ্য প্রশ্নের উত্তর দেন। এক্সপোতে আমন্ত্রিত বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, শিল্পোদ্যোক্তা, বিনিয়োগকারী, বিশিষ্ট ব্যক্তি ও গুরুত্বপূর্ণ অতিথিদের উপস্থিতিতে মো. লুৎফর রহমান একটি কান্ট্রি প্রেজেন্টেশন করেন। প্রেজেন্টেশন শেষে তিনি উপস্থিত আগ্রহী শ্রোতাদের তাৎক্ষণিক প্রশ্নের জবাব প্রদান করেন। এ ধরনের অংশগ্রহণ ও মতবিনিময়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের অপার বাণিজ্যিক সম্ভাবনা, আর্থসামাজিক সূচকের উন্নতি ভারতীয়দের মাঝে তুলে ধরা সম্ভব হয়। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ: স্কুল অব লাইফ’ শীর্ষক ডকুমেন্টারি উপস্থিত সকলের জন্য প্রদর্শিত হয়।
আগত সকল দর্শনার্থীদের মধ্যে বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো থেকে প্রাপ্ত বাংলাদেশের ব্যবসা, বিনিয়োগ ও পর্যটনের ওপর প্রকাশিত বিভিন্ন ধরনের প্রচারপত্র, ভিসা প্রদানের যাবতীয় তথ্যাদিসহ বিভিন্ন লিফলেট বিতরণ করা হয়। এক্সপোতে বাংলাদেশ স্টলটি বাংলাদেশের সম্পর্কে দর্শকদের নানা কৌতূহল মেটাতে সমর্থ হয় এবং এতে করে আগত ব্যবসায়ীগণ বাংলাদেশ সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা লাভ করেন। এক্সপোর আরও উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো গুজরাটের বস্ত্র খাতের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশের পোশাক শিল্প খাতে কাঁচামাল সরবরাহে অধিক আগ্রহ প্রকাশ করেন। বিজ্ঞপ্তি