জাপানে বাংলাদেশ ওমেনস অ্যাসোসিয়েশনের বর্ষপূর্তি

বর্ষপূর্তি উপলক্ষে অনুষ্ঠানে কেকে কাটা হয়
বর্ষপূর্তি উপলক্ষে অনুষ্ঠানে কেকে কাটা হয়

জাপানে প্রবাসী বাংলাদেশি নারীদের সংগঠন বাংলাদেশ ওমেনস অ্যাসোসিয়েশন গঠনের পর এক বছর পূর্ণ করেছে। প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে গত রোববার (১৩ মে) টোকিওর কিতা সিটির আকাবানে কিতা কুমিন সেন্টারে স্থানীয় সময় দুপুরে সংগঠনটি আয়োজন করে এক অনুষ্ঠানের।

রোববার টোকিওতে ছিল বৈরী আবহাওয়া। তা উপেক্ষা করে সংগঠনের সদস্যরাসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা সমবেত হন অনুষ্ঠানস্থলে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা রাবাব ফাতিমা। বিশেষ অতিথি ছিলেন নারা আকিকো। বিশেষ আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ দূতাবাসের ইকোনমিক মিনিস্টার ও সংগঠনের উপদেষ্টা ড. সাহিদা আকতার। এ ছাড়া বাংলাদেশ কমিউনিটির অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

মঞ্চে অতিথিরা
মঞ্চে অতিথিরা

মধ্যাহ্নভোজের পর বিকেল সাড়ে ৩টায় তনুশ্রী গোলদার বিশ্বাসের পরিচালনায় সূচনা সংগীত ‘আনন্দলোকে’ পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা। সংগঠনের সভানেত্রী জেসমিন সুলতানা ঠাকুর (কাকলি) সূচনা বক্তব্যে জানান, অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে তাদের এক বছরের পথচলা শেষ হয়েছে|। তাঁর বক্তব্য শেষে প্রজেক্টরের মাধ্যমে এক বছরের পথযাত্রা এবং উল্লেখযোগ্য কর্মসূচিসহ বাংলাদেশের কুড়িগ্রামে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পাঁচ পরিবারকে পাঁচটি ঘর এবং এক শ পরিবারকে শীতবস্ত্র প্রদানের ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়।

প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনের পর প্রধান অতিথি রাবাব ফাতিমাকে ফুল দিয়ে বরণ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদিকা সুবর্ণা নন্দী। এরপর রাবাব ফাতিমা শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন | তিনি বাংলাদেশ ওমেনস অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকাণ্ডকে সাধুবাদ ও অভিনন্দন জানান।

অনুষ্ঠানে নারা আকিকোকে ‘দ্য স্পিরিট অব ওমেনস অ্যাওয়ার্ড’ দেওয়া হয়। তাঁর হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন সংগঠনের সভানেত্রী জেসমিন সুলতানা ঠাকুর ও সহসভানেত্রী রুমানা রউফ সোমা | নারা আকিকো তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশে অবস্থানকালীন সময়ের কিছু স্মৃতিচারণ করেন।
এরপর সৌজন্য বক্তব্য দেন সংগঠনের উপদেষ্টা মুনশি রোকেয়া সুলতানা, উপদেষ্টা সাহিদা আকতার, খাজুমি চাকলাদার, জেনিফার আলম, ফেরদৌস কাদেরী ও টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের প্রধান তাবাসসুম হক প্রমুখ |

অনুষ্ঠানে নারা আকিকোকে দ্য স্পিরিট অব ওমেনস অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়
অনুষ্ঠানে নারা আকিকোকে দ্য স্পিরিট অব ওমেনস অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়

যুগ্ম সাধারণ সম্পাদিকা আসমা আখতার পারভিন বহ্নি ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান জাপানি বধূ তোমোকো খন্দকারকে। তিনি উপস্থিত অতিথিদের উদ্দেশ্ে বাংলায় ‘এই পদ্মা, এই মেঘনা’ গানটি গেয়ে শোনান।
সৌজন্য বক্তব্য শেষে প্রথম বর্ষপূর্তির কেক কাটার মাধ্যমে শুরু হয় স্ন্যাক্স অ্যান্ড ডেজার্ট প্রতিযোগিতা। এতে সংগঠনের সদস্যরাসহ অতিথিরা অংশগ্রহণ করেন। প্রতিযোগিতায় সুস্বাদু চন্দ্রপুলি বানিয়ে বিজয়ী হন সৈয়দা লায়লা পারভিন। দ্বিতীয় হন মুক্তা জেপি তার রসমালাই নিয়ে। আর তৃতীয় স্থান অধিকার করেন উষা হাবিব ভেলপুরি বানিয়ে।
এরপর শুরু হয় রুমানা রউফ সোমা ও আসমা আখতার পারভিন বহ্নির পরিচালনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মাচিইয়ামা মুনা ইব্রাহিমের ‘গানের খাতায় স্বরলিপি লিখে’ গানটি দিয়ে সূচনা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। একে একে সালমা আক্তার লাকির আবৃত্তি, পিঙ্কির নৃত্য, সুমি চৌধুরীর সংগীত, রোকেয়া পারভিন তানিয়ার আবৃত্তি, রেইন রহমান করিমের আধুনিক গান, শিলা আফরোজের আবৃত্তি, আসমা আখতার পারভিন বহ্নি ও রওনক জাহানের কণ্ঠ অতিথিদের হৃদয় কেড়ে নেয়। উপস্থিত অতিথিরা মুগ্ধ হয়ে অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন।
সর্বশেষে র‍্যাফেল ড্র ও পুরস্কার বিতরণীর মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন জেসমিন সুলতানা ঠাকুর। পুরস্কার বিতরণ করেন মুনশি রোকেয়া সুলতানা।
জাপানপ্রবাসী নারীদের উদ্যোগে এই আয়োজনটি অতিথিদের কাছে অত্যন্ত সফল একটি অনুষ্ঠান বলে মনে হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি

অতিথিদের সঙ্গে সংগঠনের সদস্যরা
অতিথিদের সঙ্গে সংগঠনের সদস্যরা