লন্ডনের চট্টগ্রামবাসীর জমজমাট মেজবান

রোববার যুক্তরাজ্যের পূর্ব লন্ডনের রয়্যাল রিজেন্সি মিলনায়তনে চট্টগ্রামবাসীর মেজবানে ছিল সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। ছবি: সংগৃহীত
রোববার যুক্তরাজ্যের পূর্ব লন্ডনের রয়্যাল রিজেন্সি মিলনায়তনে চট্টগ্রামবাসীর মেজবানে ছিল সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। ছবি: সংগৃহীত

সাদা ভাত, গরুর মাংস, কলাই ডাল-এই তিনের গণভোজ উৎসব হলো মেজবান। চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবান যুক্তরাজ্যে এসে পেয়েছে ভিন্নমাত্রা। কেবল খাবারে বৈচিত্র নয়; আয়োজনের ভিন্নতা আর সাংস্কৃতিক পরিবেশনা মেজবানকে করে তুলেছে আরও উপভোগ্য। প্রবাসে প্রিয়জনদের নিয়ে আনন্দঘন একটি দিন কাটানোরও উপলক্ষ্য এটি।

গতকাল রোববার যুক্তরাজ্যে হয়ে গেল চট্টগ্রামবাসীর জমজমাট মেজবানির আয়োজন। যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহর থেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে চট্টগ্রামের লোকেরা ছুটে আসেন এ আয়োজনে। পূর্ব লন্ডনের রয়্যাল রিজেন্সি মিলনায়তনে স্থানীয় সময় বেলা ১১টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত চলে চট্টগ্রামবাসীর এই মিলনমেলা। যুক্তরাজ্যের গ্রেটার চিটাগং অ্যাসোসিয়েশন ইউকে এই মেজবান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজক। শুধু চট্টগ্রামবাসী নয়, সিলেট, নোয়াখালীসহ যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বিভিন্ন জেলার মানুষের আগমন ঘটে এ আয়োজনে।

রোববার যুক্তরাজ্যের পূর্ব লন্ডনের রয়্যাল রিজেন্সি মিলনায়তনে চট্টগ্রামবাসীর মেজবানে ছিল সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। ছবি: সংগৃহীত
রোববার যুক্তরাজ্যের পূর্ব লন্ডনের রয়্যাল রিজেন্সি মিলনায়তনে চট্টগ্রামবাসীর মেজবানে ছিল সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। ছবি: সংগৃহীত

গ্রেটার চিটাগং অ্যাসোসিয়েশন ইউকে-এর আগে দু’বার মেজবানীর আয়োজন করেছিল। তবে এবারের আয়োজনের ব্যাপ্তি সেসবকে ছাড়িয়ে গেছে। অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্য প্রবাসী চট্টগ্রামের বিভিন্ন গুণীজনদের হাতে সম্মননাও তুলে দেওয়া হয়।

শুরুতে আয়োজকদের পক্ষ থেকে স্বাগত বক্তব্য দেওয়া হয়। এরপরই ভোজ উৎসব শুরু। রয়্যাল রিজেন্সির সুবিশাল হলে চলতে থাকে একের পর এক খাবার পর্ব। একজন খেয়ে উঠছেন তো সঙ্গে সঙ্গে একই চেয়ারে বসে পড়ছেন আরেকজন। আগে আসলে আগে পাবেন, খাবার পুরালে দায় নেই কারও-এটাই মেজবানী খাবারের রীতি। খাবারের পাশাপাশি দিনব্যাপী মঞ্চে চলে সুরের মূর্ছনা। মেজবানে আসা অতিথিরাই নানা সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় মুগ্ধ করেন সবাইকে।

সন্ধ্যায় সবার মনোযোগ ছিল মঞ্চে। যুক্তরাজ্যে বেড়ে উঠা চট্টগ্রামের নতুন প্রজন্মের কিশোর-কিশোরীদের ব্যতিক্রমী ফ্যাশন শো দিয়ে শুরু। তারা বাংলার কৃষক, মাঝী, জেলে, ঢোলক, মালী, বাউল কিংবা মুক্তিযোদ্ধার সাজে মঞ্চ মাতায়।

রোববার যুক্তরাজ্যের পূর্ব লন্ডনের রয়্যাল রিজেন্সি মিলনায়তনে চট্টগ্রামবাসীর মেজবানে ছিল সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। ছবি: সংগৃহীত
রোববার যুক্তরাজ্যের পূর্ব লন্ডনের রয়্যাল রিজেন্সি মিলনায়তনে চট্টগ্রামবাসীর মেজবানে ছিল সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। ছবি: সংগৃহীত

এরপর মঞ্চে আসেন পাঞ্জাবীওয়ালাখ্যাত শিল্পী চট্টগ্রামের শিরিন জাওয়াত। একের পর এক নিজের পরিচিত গানগুলো গাইলেন তিনি। তারপর হাসির পালা। হাসির ঝুড়ি খুলে দেন বাংলাদেশ থেকে আগত স্ট্যান্ড কমিডিয়ান কমর উদ্দিন আরমান। সবশেষে ছিলেন বাউল শিল্পী ফকির শাহাব উদ্দিন। চট্টগ্রামের এই বাউল প্রায় দেড় ঘন্টা নাচালেন দর্শকদের।

গ্রেটার চিটাগং অ্যাসোসিয়েশন ইউকের প্রেসিডেন্ট মনোয়ার হোসেন বলেন, মেজবানির প্রতি মানুষের আগ্রহের দিকটি মাথায় রেখে এবার আয়োজনের পরিধি বেশ বাড়ানো হয়েছে। এবার প্রায় আড়াই হাজার মানুষ খেয়েছেন বলে জানান তিনি। ভবিষ্যতে আরও বড় ও সুন্দর আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।