ব্যাংককে বিনম্র শ্রদ্ধায় জাতীয় শোক দিবস পালন

বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা নিবেদন
বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা নিবেদন

থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে বিনম্র শ্রদ্ধায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৩তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে গত বুধবার (১৫ আগস্ট) বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত অনুষ্ঠানে কম্বোডিয়ায় অনাবাসিক ও দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং ইউনেসক্যাপের স্থায়ী প্রতিনিধি সাইদা মুনা তাসনিম বলেন, আসুন আমরা বঙ্গবন্ধুর বাঙালি জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধে অনুপ্রাণিত হয়ে সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই।

দিনটিকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত প্যানেল আলোচনার পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা নিবেদন এবং মিলাদ মাহফিল ও বিশেষ প্রার্থনা আয়োজন করা হয়।

বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা নিবেদন
বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা নিবেদন

রাষ্ট্রদূত তাসনিম তাঁর বক্তব্যে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে সংঘটিত বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে অশোধিত ও অমানবিক হত্যার একক উদাহরণ হিসেবে অভিহিত করে জঘন্যতম এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানান। তিনি বাংলাদেশের স্বাধিকার আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অসীম সাহসের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং ১৯৭২-৭৫ সালের মধ্যে জাতিসংঘসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার স্বীকৃতি ও সদস্যপদ লাভে বঙ্গবন্ধুর কূটনৈতিক সাফল্যের জন্য তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।

সাইদা মুনা তাসনিম থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়াতে বঙ্গবন্ধুকে চিরস্মরণীয় করার জন্য চার বছর ধরে দূতাবাস কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগ প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছে তুলে ধরেন। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য থাইল্যান্ডের এআইটিতে পিএইচডি পর্যায়ে ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার প্রতিষ্ঠা’, কম্বোডিয়ার নমপেনে একটি বিশিষ্ট রাস্তা বঙ্গবন্ধুর নামে নামকরণ, চুলালংক্লর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়া ইনস্টিটিউট কর্তৃক থাই ভাষায় ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের অনুবাদ এবং বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী থাই ভাষাতে রূপান্তর। তিনি থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশিদের বঙ্গবন্ধুর মূল্যবোধ ধারণ করে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি সমুন্নত করার জন্য আহ্বান জানান।

আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সাইদা মুনা তাসনিম
আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সাইদা মুনা তাসনিম

অনুষ্ঠানে ইউনেসক্যাপ ও অন্য আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মরত বাংলাদেশি, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীসহ ব্যাংকক ও এর আশপাশ শহরে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা অংশগ্রহণ করেন। এ ছাড়া স্থানীয় একটি স্কুলের থাই ছাত্রছাত্রীরা জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচিতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে। থাই শিশু শিক্ষার্থীরা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা নিবেদন করে।

কর্মসূচির শুরুতে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে অর্ধনমিত করার পর বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টের শহীদদের রুহের মাগফেরাতের জন্য মিলাদ ও বিশেষ মোনাজাত করা হয়। আলোচনা অনুষ্ঠানে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রদত্ত বাণীসমূহ পাঠ করে শোনানো হয়। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম সম্পর্কে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচিতে থাই ছাত্রছাত্রীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে
জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচিতে থাই ছাত্রছাত্রীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে

আলোচনায় বক্তব্য দেন বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক ড. জয়সরি রায়, বাংলাদেশ সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আলম আরা বেগম, কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব মুস্তাফিজুর রহমান, নিয়ামত আলী তালুকদার, পীযূষ কান্তি সাহা, শাহিন চৌধুরী ও রফিকুল ইসলাম তালুকদার। বিজ্ঞপ্তি