ভিয়েনায় ঈদুল আজহা উদ্যাপিত

অস্ট্রিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিরা উৎসাহ উদ্দীপনার সঙ্গে ঈদ উদ্‌যাপন করেছেন
অস্ট্রিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিরা উৎসাহ উদ্দীপনার সঙ্গে ঈদ উদ্‌যাপন করেছেন

মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদায় অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় আজ মঙ্গলবার উদ্‌যাপিত হয়েছে। অস্ট্রিয়াপ্রবাসী বাংলাদেশি মুসলিমরা উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ঈদ উদ্‌যাপন করেছেন।

প্রবাসী বাংলাদেশি মুসলিম ধর্মাবলম্বী কর্তৃক পরিচালিত পাঁচটি মসজিদ রয়েছে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায়। এই মসজিদগুলোতে প্রতিবারের মতো এবারও তিনটি করে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় সময় সকাল আটটা, সাড়ে নয়টা ও এগারোটায় অনুষ্ঠিত জামাতে ভিড় ছিল উপচে পড়া। এর মধ্যে বেশ কিছু মুসল্লি ছিলেন অন্য মুসলিম কমিউনিটির।

ভিয়েনার কেন্দ্রস্থলে বাংলাদেশিদের অর্থে ক্রয় করা জমির ওপর নির্মিত বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার বায়তুল মোকাররমে সকাল আটটায় ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। ইমামতি করেন মাওলানা সাইদুর রহমান। দ্বিতীয় জামাতে ইমামতি করেন মাওলানা গোলামুর রহমান আল আজাহারী। তৃতীয় জামাতে ইমামতি করেন মাওলানা হাফেজ আবু জাফর।

দ্বিতীয় জামাতে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও ভিয়েনার জাতিসংঘ দপ্তরে বাংলাদেশ মিশনের প্রতিনিধি মোহাম্মদ আবু জাফর, কাউন্সেলর ও চ্যান্সারি প্রধান রাহাত বিন জামান, আওয়ামী লীগের সর্ব ইউরোপিয়ান শাখার সহসভাপতি, অস্ট্রিয়াপ্রবাসী এম নজরুল ইসলাম, অস্ট্রিয়া শাখার সভাপতি খন্দকার হাফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ অস্ট্রিয়া ইউনিট কমান্ডের কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা বায়েজিদ মীর, বিএনপি নেতা শান্ত খান, বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার বায়তুল মোকাররম মসজিদের কর্মকর্তা আবিদ হোসেন খান, জাহাঙ্গীর আলম, আহমেদ ফিরোজ, বাউল শিল্পী আবুল কালাম, শফিকুল ইসলাম, শাহ কামাল, নয়ন হোসেন, মাহাবুব খান, ইমরুল কায়েস ও আবদুর রব খানসহ বাংলাদেশি বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা অংশ নেন। তিনটি জামাতে অংশগ্রহণকারী বিপুলসংখ্যক মুসল্লিকে মিষ্টান্ন দিয়ে আপ্যায়ন করে মসজিদ পরিচালনা কমিটি।

অস্ট্রিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিরা উৎসাহ উদ্দীপনার সঙ্গে ঈদ উদ্‌যাপন করেছেন
অস্ট্রিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিরা উৎসাহ উদ্দীপনার সঙ্গে ঈদ উদ্‌যাপন করেছেন

অস্ট্রিয়ায় সবগুলো ঈদের জামাতে মানবকল্যাণ ও বিশ্বময় শান্তি কামনা করে মোনাজাত করা হয়। বাংলাদেশিদের মসজিদগুলোতে প্রতিটি জামাতে বাংলাদেশ ও দেশের মানুষের এবং মুসলিম উম্মাহর মঙ্গল কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়। প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী ঈদের জামাতের পর একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি করে কুশল বিনিময়ের মাধ্যমে মুসল্লিরা ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করেন।

অন্য বছরের মতো এবারও ভিয়েনায় বসবাসকারী বাংলাদেশিদের অনেকেই কোরবানি দিয়েছেন। ভিয়েনা শহরের মধ্যে পশু জবাই করা নিষিদ্ধ থাকায় শহরের বাইরে কসাইখানায় কোরবানি দিতে হয়। আর এসব কসাইখানাগুলো ভিয়েনা থেকে বেশ দূরে। অনেকে ১০০ কিলোমিটার, কেউ ১৫০ কিলোমিটার দূরে গিয়ে তাঁদের পছন্দের পশু কোরবানি করেছেন। কোরবানির এক-দুই মাস আগে কসাইখানায় গিয়ে পশু নির্দিষ্ট করে বুকিং দিতে হয়। কোরবানির মাংস কেটে তা গুছিয়ে দেওয়ার জন্য এ সময়টায় কসাইখানা কর্তৃপক্ষ মুসলমান কর্মচারী নিয়োগ দেন। যার কারণে ইসলামিক নিয়ম মতো কোরবানি করতে কোনো রকম সমস্যা হয় না।

উল্লেখ্য অস্ট্রিয়াপ্রবাসী সিংহভাগ বাংলাদেশি ভিয়েনায় বাস করেন। রাজধানীর বাইরে অন্যান্য শহরেও ব্যাপক উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ঈদ উদ্‌যাপন করেছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

আনিসুল হক: ভিয়েনা, অস্ট্রিয়া।