টোকিওতে প্রথমবারের মতো বাংলা বইমেলা

টোকিও বাংলা বইমেলার পোস্টার
টোকিও বাংলা বইমেলার পোস্টার

জাপানে এর আগে বইপত্রের প্রদর্শনী ও বিক্রির আয়োজন বসলেও সেগুলো ছিল বিক্ষিপ্ত ঘটনা। অনেক ক্ষেত্রেই বইপত্রের একক আয়োজনও ছিল না। টোকিওতে সেই ঘাটতি পুষিয়ে নিতে এগিয়ে এসেছে— বাংলাদেশ সাংবাদিক-লেখক ফোরাম, জাপান। ফোরামের উদ্যোগে সেপ্টেম্বর মাসের ২ তারিখ রোববার টোকিওর ইতাবাশি গ্রিন হলে বসছে দিনব্যাপী বাংলা বইমেলা। 

টোকিওর এই বইমেলার একটি বিশেষত্ব হলো জাপান প্রবাসী লেখকদের বইয়ের ওপর প্রাধান্য দিয়ে লেখালেখিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের উৎসাহিত করা। জাপান প্রবাসী লেখকদের মধ্যে অল্প কয়েকজন ছাড়া বাকি সবাই অংশ নিচ্ছেন বইমেলায়। এদের কারও বই থাকছে শুধুমাত্র প্রদর্শনীর জন্য, কারও বই আবার প্রদর্শনীর বাইরে বিক্রির জন্যও রাখা হচ্ছে। বইপত্রের প্রদর্শনী ও বিক্রির বাইরে সারা দিন চলা মেলায় বাংলাদেশের সাহিত্য, সমাজ ও প্রকাশনা শিল্পের ওপর আলোকপাত করা বেশ কিছু সেমিনারের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। বক্তারা সেখানে তাঁদের নিজেদের জীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে এসব বিষয়ের সঙ্গে জড়িত সমস্যাগুলো নিয়ে দর্শক-শ্রোতাদের সঙ্গে মত বিনিময় করবেন।

টোকিও বইমেলার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে জাপানের লেখক, গবেষক ও শিক্ষাবিদদের জাপানি ভাষায় প্রকাশিত বাংলাদেশ ও বাংলার সমাজ ও সাহিত্য নিয়ে লেখা বিভিন্ন বইয়ের প্রদর্শনী। ফলে মেলা দেখতে আসা দর্শকেরা বাংলাদেশের বইয়ের পাশাপাশি বাংলার সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়াবলি নিয়ে জাপানে কেমন লেখালেখি হচ্ছে, সে সম্পর্কেও ধারণা পেতে সক্ষম হবেন। মেলার একটি শিক্ষামূলক দিক একই সঙ্গে থেকে যাওয়ায় এটাকে সার্বিকভাবে একরকম পূর্ণাঙ্গ বইমেলা আখ্যায়িত করা যায়। এমন আয়োজন জাপানে প্রবাসীদের জন্য কখনো হয়নি।

২ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে দশটায় মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাপানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা ছাড়াও জাপানের সাবেক মন্ত্রী হাজিমে ইশিই এবং বাংলাদেশে জাপানের সাবেক রাষ্ট্রদূত মাৎসুশিরো হোরিগুচিও উপস্থিত থাকবেন। উল্লেখ্য, এই দুই বিশিষ্ট জাপানি নাগরিক একই সঙ্গে লেখালেখির সঙ্গেও জড়িত আছেন। হাজিমে ইশিইর ১৯৭৭ সালে বাংলাদেশে জাপানি যাত্রীবাহী বিমান হাইজ্যাক হওয়া নিয়ে লেখা বইয়ের বাংলা অনুবাদ মাত্র কয়েক দিন আগে ঢাকায় প্রকাশিত হয়েছে। ২ সেপ্টেম্বর তাঁর সেই বইয়ের মোড়ক উন্মোচনের মধ্যে দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে প্রথম টোকিও বাংলা বইমেলা।