জাপানের আশিকাগায় ঈদ পুনর্মিলনী

সমবেত কণ্ঠে সংগীত পরিবেশনা
সমবেত কণ্ঠে সংগীত পরিবেশনা

আমাদের বাঙালিদের জীবনে ধর্মীয় উৎসবের মধ্যে একটি ঈদুল আজহা। প্রবাসের কর্মময় ব্যস্ত জীবনে দেশের মতো সেই ভাবে পালন করার সুযোগ হয়ে ওঠে না। এই অতৃপ্তি কিছুটা দূর করতেই গত রোববার (১৬ সেপ্টেম্বর) জাপানের আশিকাগা সিটিতে আয়োজন করা হয় এক ঈদ পুনর্মিলনীর।

এর উদ্যোক্তা ছিলেন সুইয়ামা লুবনা। তাকে সার্বিকভাবে সাহায্য করেন সুমনা, চম্পা, ববি, নোমান সৈয়দ, সোহাগ রহমান, লুতফুর শোভন ও সাজ্জাদ। আশিকাগা সিটি ও এর আশপাশের বিভিন্ন শহরের ৫৫ পরিবারের প্রায় ২০০ জন সদস্য এই পুনর্মিলনীতে অংশগ্রহণ করেন। ঈদ পুনর্মিলনী উপলক্ষে জাপানের কানতো অঞ্চলের বাঙালির এক মিলনমেলায় পরিণত হয়। নারীদের পরনে ছিল রং বেরঙের শাড়ি আর পুরুষদের পরনে ছিল বাঙালির প্রিয় পোশাক পাঞ্জাবি।

বিচারকদের সঙ্গে ফ্যাশন শোর বিজয়ীরা
বিচারকদের সঙ্গে ফ্যাশন শোর বিজয়ীরা

মধ্যাহ্নভোজনে ছিল ভাবিদের হাতে তৈরি মজাদার বিভিন্ন খাবারের সমাহার। উল্লেখযোগ্য খাবারের মধ্যে ছিল গরু ভুনা, রোস্ট, চিকেন কোর্মা, মাছের চপ, সালাদ ও পোলাও। বিশেষ মেন্যুর মধ্যে ছিল বেগুন ভর্তা, খুরি ভর্তা ও চিংড়ি শুঁটকি ভর্তা। নাশতার মধ্যে ছিল শিঙারা, অন্তুন, চটপটি, কালোজাম, সন্দেশ, পুডিং, পাটিসাপটা পিঠা, ফুলঝুরি পিঠা ও সেমাই।

ভোজন পর্বের পর ছোট্ট সোনামণি মিমমুনের কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হয় দ্বিতীয় পর্বের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সুইয়ামা লুবনার উপস্থাপনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছিল শিশুদের বিভিন্ন ধরনের পারফরম্যান্স ও যেমন খুশি তেমন সাজো, একক সংগীত, দ্বৈত সংগীত, কৌতুক, আবৃতি ও নাটক।

শিশুশিল্পীর নৃত্য পরিবেশনা
শিশুশিল্পীর নৃত্য পরিবেশনা

শিশুদের পারফরম্যান্স মধ্যে দর্শকদের মন জয় করে নেয় শারমিনের ‘বাংলাদেশের মেয়ে’ গানের সঙ্গে নাচ, জেসিয়া বিনতে জালালের কবিতা আবৃতি (জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘সৃষ্টি সুখের উল্লাসে’), সায়ানের আরবি সুরা, মির্জা সাহাবির সুরা ফাতেহা পাঠ ও সুরা ফাতেহার ইংরেজিতে তরজমা, আলী জারিয়াত মো. জামিরে ছড়া (কাজী নজরুল ইসলামের ‘আমি যদি বাবা হতাম’) ও নিষাদ হায়দার লামিয়ার হিন্দি গান ‘ছাম ছাম ছামের’ সঙ্গে নাচ। তাদের জন্য ছিল বিশেষ পুরস্কার। শিশুদের হাতে পুরস্কারগুলো তুলে দেন জাপান আর্ট ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা, উপস্থাপক ও শিল্পী তানিয়া মিথুন এবং শান্তিনিকেতন থেকে রবীন্দ্র সংগীতের ওপর ডিপ্লোমা করা শাম্মি বাবলি।

অংশগ্রহণকারীদের একাংশ
অংশগ্রহণকারীদের একাংশ

পুনর্মিলনীর অন্যতম আকর্ষণ ছিল ঈদ ফ্যাশন শো প্রতিযোগিতা। ফ্যাশন শোয়ে ছিল চারটি বিভাগ। প্রতিটি বিভাগের জন্য ছিল আলাদা আলাদা নম্বর। ফ্যাশন শোর বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন টোকিও বৈশাখী মেলার সমন্বয়কারী মো. আসলাম খন্দকার হিরা, তানিয়া মিথুন ও শাম্মি বাবলি। প্রতিযোগিতায় বিচারকদের রায়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেন পূজা। প্রথম রানার আপ ও দ্বিতীয় রানার নির্বাচিত হন চম্পা ও সুমনা। সম্মানিত তিনজন বিচারক বিজয়ীদের মধ্যে মুকুট ও ট্রফি তুলে দেন।

জাপানের জনপ্রিয় বিংগো গেমের আকর্ষণীয় পাঁচটি পুরস্কার জিতে নেন দিপা, মৌ, মাসুমা, রোজিনা ও রেণু।

অংশগ্রহণকারীদের একাংশ
অংশগ্রহণকারীদের একাংশ

এত চমৎকার একটি আয়োজনের জন্য সুইয়ামা লুবনাকে সবার পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন জালাল জাবেদ।
...

এস এম নোমান: আশিকাগা, তোচিগি, জাপান।