বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে ইসলামাবাদে মেলা

বক্তব্য দিচ্ছেন তারিক আহসান
বক্তব্য দিচ্ছেন তারিক আহসান

পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাইকমিশনের উদ্যোগে আনন্দ-উদ্দীপনার সঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়েছে চতুর্থ উন্নয়ন মেলা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এক দশকে দেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে উন্নয়ন ও অগ্রগতি সাধিত হয়েছে তা প্রবাসী বাংলাদেশি, স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তি ও বিদেশি কূটনীতিকদের কাছে তুলে ধরার লক্ষ্যে গতকাল শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সেরিনা হোটেলে এ মেলার আয়োজন করা হয়। হোটেলে মেলার স্থানটি সুদৃশ্য ব্যানার, বাংলাদেশের আর্থসামাজিক ও অবকাঠামো উন্নয়নের ওপর ভিত্তি করে তোলা বেশ কয়েকটি বড় পোস্টার ও বিভিন্ন তথ্যসমৃদ্ধ প্রদর্শনী বোর্ড দিয়ে মনোরমভাবে সাজানো হয়।

অতিথিদের একাংশ
অতিথিদের একাংশ

মেলার শুরুতে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার তারিক আহসান স্বাগত বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শান্তিময় সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্নের কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বক্ষেত্রে উন্নয়ন সাধনের মাধ্যমে সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জাতিকে নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন। তিনি গত এক দশকে দেশে দারিদ্র্যের হার ২০ শতাংশে কমিয়ে আনা, সাক্ষরতার হার ৭২ দশমিক ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়া, মানুষের গড় আয়ু বেড়ে ৭২ বছরে উন্নীত হওয়া এবং জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশে উন্নীত হওয়ার কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, নারী-পুরুষের সমান অধিকারের ক্ষেত্রে এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। তিনি বলেন, বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ সন্তোষজনক ও দেশীয় মুদ্রা স্থিতিশীল থাকায় এবং জিডিপি অনুপাতে ঋণের পরিমাণ কম হওয়ায় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা বেশ ভালো। তিনি মন্তব্য করেন, আর্থসামাজিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অর্জনের পর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ এখন বৃহত্তর অবকাঠামো উন্নয়নের ওপর জোর দিচ্ছে। আগামী প্রজন্মের জন্য একটি উন্নত ভবিষ্যৎ রেখে যাওয়ার লক্ষ্যে রূপকল্প ২০২১ ও রূপকল্প ২০৪১ এবং ডেলটা প্ল্যান ২১০০-এর আওতায় সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচি ও পরিকল্পনার কথা তিনি অতিথিদের সামনে তুলে ধরেন।

বিভিন্ন মিশনের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারেরা
বিভিন্ন মিশনের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনারেরা

পাকিস্তান ও বাংলাদেশে নিযুক্ত তিউনিসিয়ার রাষ্ট্রদূত আদেল এলারবি এবং পাকিস্তানের বিশিষ্ট মানবাধিকার ও উন্নয়ন কর্মী তাহিরা আবদুল্লাহ অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। তাহিরা আবদুল্লাহ নারীর ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়ন সূচকে দক্ষিণ-এশিয়ার অনেক দেশকে পেছনে ফেলার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করেন। তারা বাংলাদেশের আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে অব্যাহত অগ্রগতি কামনা করেন। আলোচনার পর বাংলাদেশের আর্থসামাজিক ও অবকাঠামো উন্নয়নের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত বেশ কয়েকটি প্রামাণ্য ভিডিও চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়।

সাংস্কৃতিক পরিবেশনা
সাংস্কৃতিক পরিবেশনা

মেলায় বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্প সামগ্রী এবং বাংলাদেশের বই, পুস্তিকা, ম্যাগাজিন নিয়ে দুইটি পৃথক প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়। গ্রাম বাংলার নকশিকাঁথা, টেরাকোটা, পাটের তৈরি শিকা ও হাতব্যাগ, গয়নার বাক্স, পিতলের তৈরি নৌকা, রিকশা ও গরুর গাড়ি, বিভিন্ন ধরনের গৃহসজ্জা সামগ্রী এবং একতারা-বাঁশিসহ গ্রামীণ বাদ্যযন্ত্রসমূহ আগত দর্শকদের বিপুলভাবে আকৃষ্ট করে। এ ছাড়া মেলায় বাংলাদেশের আর্থসামাজিক ও অবকাঠামো উন্নয়নের ওপর ভিত্তি করে তোলা উল্লেখযোগ্যসংখ্যক আলোকচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

মেলায় স্টল
মেলায় স্টল

অনুষ্ঠান শেষে অতিথিদের নৈশভোজে আপ্যায়িত এবং হাইকমিশন কর্তৃক প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ: দ্য রাইজিং ডেলটা’ ম্যাগাজিনের একটি কপি প্রদান করা হয়।

মেলায় স্টল
মেলায় স্টল

ইসলামাবাদের বিভিন্ন মিশনের অনেক রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার, প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা, স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তি, ব্যবসায়ী নেতা, প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিক ও বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সপরিবারে অনুষ্ঠানে যোগদান করেন। বিজ্ঞপ্তি