মরিশাসের বাংলাদেশ হাইকমিশনে পরিচিতি সভা

রেজিনা আহমেদের সঙ্গে অতিথিরা
রেজিনা আহমেদের সঙ্গে অতিথিরা

মরিশাসের পোর্ট লুইসে বাংলাদেশ হাইকমিশনের উদ্যোগে এক পরিচিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় দেশটির বিভিন্ন কোম্পানির স্বত্বাধিকারী ও উদ্যোক্তাদের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার জন্য হাইকমিশনে আমন্ত্রণ জানানো হয়। হাইকমিশন প্রথমবারের মতো এ ধরনের উদ্যোগে নিয়েছে। গত বুধবার (৩১ অক্টোবর) হাইকমিশনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশের পর্যটনের ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ-ল্যান্ড অব স্টোরিজ’ প্রদর্শন করা হয়। এরপর দেশটিতে নিযুক্ত হাইকমিশনার রেজিনা আহমেদ তার বক্তব্যে দেশের সাম্প্রতিক অগ্রগতি, সম্ভাবনা, বিনিয়োগ ও মানবসম্পদ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য উপাত্ত অতিথিদের কাছে তুলে ধরেন। তার বক্তব্যের পর মানব সম্পদের ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘দ্য ওয়ার্ক হিরোজ অব বাংলাদেশ’ প্রদর্শন করা হয়।

রেজিনা আহমেদ তার বক্তব্যে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তাঁর রূপকল্প ২০২১ ও রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। গত দশ বছরে বাংলাদেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। যা কিনা মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার পথ সুগম করেছে। বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য একটি অন্যতম দেশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বিনিয়োগকে উৎসাহিত করতে ১০০টি বিশেষায়িত অর্থনৈতিক জোন তৈরি করা হচ্ছে। আগামী ২০২১ সালের মধ্যে গার্মেন্টস খাতে ৫০ বিলিয়ন ইউএস ডলার ও আইসিটি খাতে ৫ বিলিয়ন ইউএস ডলার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

মানবসম্পদ বিষয়ে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার গৃহীত যুগোপযোগী পদক্ষেপগুলো তুলে ধরে অতিথিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে রেজিনা আহমেদ বলেন, মরিশাস বাংলাদেশি পণ্য যেমন; রেডিমেড গার্মেন্টস, ওষুধ, চামড়াজাত দ্রব্য, পাটজাত পণ্য ও হিমায়িত মাছ আমদানিসহ হসপিটালিটি, কেয়ার গিভার, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইসিটি সেক্টরে বাংলাদেশিদের নিয়োগ করতে পারে। বিএমইটি আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ প্রদানের পাশাপাশি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সহযোগী হয়েও কাজ করছে।

সভায় অতিথিরা জানান, এ সভার মাধ্যমে বাংলাদেশ সম্পর্কে তারা অনেক অজানা তথ্য জেনে নিজেরা সমৃদ্ধ হয়েছেন। কেউ কেউ বাংলাদেশের এ অগ্রযাত্রার কথা শুনে বিস্ময় প্রকাশ করেন ও এ ধারা অব্যাহত রাখতে তারা বাংলাদেশের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তারা বলেন, এ ধরনের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে।

উল্লেখ্য, মরিশাসে বর্তমানে প্রায় ২৩ হাজার ৬০০ জন বৈধ বাংলাদেশি শ্রমিক বিভিন্ন সেক্টরে কর্মরত রয়েছেন। তার মধ্যে টেক্সটাইল সেক্টরে সবচেয়ে বেশি কর্মী কর্মরত রয়েছেন। শ্রমিকদের দেখাশোনা ও তাদের প্রতি যত্নবান হওয়ার জন্য হাইকমিশনার নিয়োগকর্তাদের প্রতি ধন্যবাদ জানান ও আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশ ও মরিশাসের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য অচিরেই বৃদ্ধি পাবে। এ লক্ষ্যে দুই দেশই একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

পরিচিতি সভায় ৭০ জনেরও বেশি বিভিন্ন কোম্পানির কর্ণধার, মানবসম্পদ বিভাগে কর্মরত কর্মকর্তা ও বিভিন্ন পর্যায়ের উদ্যোক্তারা উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে অনেকের কোম্পানিতে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বাংলাদেশি কর্মী কর্মরত রয়েছেন।

সভার শেষ পর্বে ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি খাবার দিয়ে উপস্থিত সকলকে আপ্যায়ন করা হয়। বিজ্ঞপ্তি