সবুজ মেঘের ছায়া-চার

অলংকরণ: মাসুক হেলাল
অলংকরণ: মাসুক হেলাল

ডেকে দাঁড়িয়ে নদীর প্রথমেই মনে হলো, আহা! এ মুহূর্ত রাকিব ভাই যদি এখানে থাকতেন, তিনি এই পরিবেশটা কী পছন্দই না করতেন। কাঠের ডেক। ডেকের কাছাকাছি ক্যাবেজ গাছ। বাড়ির পেছনের ঝরনা। ঝরনার দুই পাশে বড় বড় গাছ। ঝরনার ওপাশে পার্ক। পার্কের দিঘল সবুজ প্রান্তর।

নাবিদ তখনই পাশে এসে দাঁড়াল। জিজ্ঞেস করল, কী দেখছ নদী?

নদী মুগ্ধ গলায় বলল, ভাইয়া, আপনার বাড়ির পেছনটা এত সুন্দর!

নাবিদ বলল, হ্যাঁ, এই বাড়িটা যখন প্রথম কিনতে আসি, বাড়ির পেছনের পার্ক, ঝরনা, গাছগাছালি এসব দেখেই আমার পছন্দ হয়। তোমার ভাবি পছন্দ করে বাসার ভেতরের কাঠের ফ্লোরটা। এ ছাড়া বাড়িটায় বেশ প্রাইভেসি আছে।

: কত দিন হয়েছে এই বাড়িটা কিনেছেন?

: প্রায় তিন বছরের ওপরে হয়ে গেল।

: এর আগে কি হ্যামিল্টনেই থাকতেন?

: হ্যাঁ হ্যাঁ, ডিন্সডেল সাবার্বে থাকতাম। ভাড়া দিয়ে দিয়েছি। ডিন্সডেলের বাড়িটায় থেকেছি প্রায় নয় বছর। ওই বাড়িটা একটু পুরোনো ছিল।

: এর আগে কোথায় থাকতেন?

: মাউন্ট মাঙ্গানুই। তোমাকে তো আমার মেজ চাচার কথা বলেছি, ওই যে আরমান চাচা?

: জি, আপনি ফোনে বলেছিলেন। তিনি সিডনিতে থাকেন।

: হ্যাঁ, সেই আরমান চাচা। তিনি তখন মাউন্ট মাঙ্গানুইতে থাকতেন।

: কত বছর আগে থাকতেন?

: এই ধরো প্রায় বারো বছর আগে। ওখান থেকেই তিনি সরাসরি সিডনিতে চলে যান। আর আমরা হ্যামিল্টনে চলে আসি। হ্যামিল্টনে প্রায় বারো বছর হয়ে গেল।

: বারো বছর!

: হ্যাঁ, নদী। সময় খুব তাড়াতাড়ি চলে যায়। এই দেখ, আমি নিউজিল্যান্ডে এসেছি এতগুলো বছর হয়ে গেছে। অথচ আমার মনে হচ্ছে, আরে এই তো সেদিন এলাম!

নদী হাসল। বলল, জি, হ্যামিল্টনে আমারই প্রায় সোয়া দুই বছর হয়ে গেছে।

নাবিদ মাথা ঝাঁকিয়ে বলল, কী অবাক ব্যাপার দেখ, একই শহরে দুই ভাইবোন বসবাস করি, অথচ জানাশোনা নেই বলে সোয়া দুই বছর পর দেখা হলো।

নদী বলল, তাও তো ভাগ্য ভালো যে গত রোববারে মাউন্ট পিরংগিয়াতে গিয়েছিলাম। নয়তো এখনো আমাদের জানাশোনা হতো না।

নাবিদ বলল, তুমি ঠিকই বলেছ।

নদী জিজ্ঞেস করল, আপনারা কি হ্যামিল্টনে বাংলাদেশি কমিউনিটি প্রোগ্রামে যান না?

: যাই তো।

: না মানে, আমি বাংলাদেশি কমিউনিটির পিকনিকে কারাপিরো লেকে গিয়েছিলাম। ওখানে অনেক বাঙালির সঙ্গে পরিচয় হয়েছে। কিন্তু আপনাদেরকে তো দেখিনি?

: হ্যামিল্টনে বাংলাদেশি কমিউনিটির বেশির ভাগ প্রোগ্রাম শনিবারে হয়, তাই যাওয়া হয় না। শনিবারে আমার দোকান খোলা থাকে।

নদী মাথা ঝাঁকিয়ে বলল, ও।

নাবিদ জিজ্ঞেস করল, নদী, লেখাপড়া শেষ করে কি তোমার এখানে সেটেল্ড হওয়ার ইচ্ছে আছে?

: জানি না ভাইয়া। নির্ভর করে পরিস্থিতির ওপর। তবে মার ইচ্ছে, লেখাপড়া শেষ করে আমি যেন বাংলাদেশ ফিরে যাই।

: একবার দেশ ছাড়লে কেউ কি দেশে ফিরে যায়?

: অনেকে যায় তো।

: সেই সংখ্যাটা অনেক কম। দুই-চারজন যারা যায়, তারা বাধ্য হয়ে যায়। এমনিতে কেউ যেতে চায় না।

নদী বলল, আপনি ঠিকই বলছেন। বাধ্য হয়ে যায়। এমনিতে কেউ যেতে চায় না।

নাবিদ বলল, এমন অজস্র উদাহরণ আছে। তোমাকে একটা কথা বলি, এই যে বাংলাদেশের বিভিন্ন ইউনিভার্সিটির শিক্ষকেরা এসে নিউজিল্যান্ডে পিএইচডি করে, তারা কি ফিরে যায়? যায় না। তারা নিউজিল্যান্ডে থেকে পিএইচডি শেষ করে এখানকার কোনো ইউনিভার্সিটিতে ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করবে। তারপরও এখানে থেকে যাবে। অথচ তারা জানে, বাংলাদেশ ফিরে গেলে তারা নিশ্চিত কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর বা ফুল প্রফেসর হয়ে যাবে। ওটা তাদের কাছে সম্মানের নয়। এখানকার ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্টের চাকরিটা এদের কাছে মূল্যবান।

: এটা আসলেই দুঃখজনক।

: অবশ্যই দুঃখজনক। এখানকার স্থানীয়রা ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্টের কাজ করে আন্ডার গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা করে। কোথায় আন্ডার গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা আর কোথায় পিএইচডি ডিগ্রি হোল্ডার...!

: তবে ভাইয়া, অনেকে লেকচারার, সিনিয়র লেকচারার হয়ে ভবিষ্যতে অ্যাসোসিয়েট বা ফুল প্রফেসরও হচ্ছে।

: হ্যাঁ হচ্ছে। তবে আমি মেজরটির কথা বলছি।

: আমি এ ধরনের পরিস্থিতি হলে বিদেশ থাকব না। অবশ্য আমি এমনিতেই বিদেশ থাকতে পারি কিনা সন্দেহ। মা মোটেও চান না যে আমি বিদেশ থাকি।

: সে-ও ভালো, তোমরা হলে দেশের হিরে। তোমরা দেশে না গেলে দেশ তো শূন্য হয়ে যাবে। আমরা সাধারণ মানের ছাত্র ছিলাম। আমাদের কথা আলাদা।

: জি ভাইয়া, আপনি মূল্যবান কথা বলেছে। আমি হিরা কিনা জানি না। তবে যারা এসব দেশে এসে পিএইচডি করে, তারা বাংলাদেশে ফিরে যাওয়া উচিত। নয়তো বাংলাদেশ ক্রমাগত মেধা শূন্য হয়ে যাবে।

: বাংলাদেশ অলরেডি মেধা শূন্য হয়ে গেছে। এ জন্যই বাংলাদেশটা যত দূর এগিয়ে যাওয়ার কথা, তত দূর এগোচ্ছে না। ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। যাক ওসব কথা। কী কথা থেকে কী কথায় চলে গেলাম। আচ্ছা, চাচির সঙ্গে তোমার কথা হয়েছে?

নদী জিজ্ঞেস করল, মার সঙ্গে?

নাবিদ মাথা ঝাঁকিয়ে বলল, হ্যাঁ।

: মার সঙ্গে তো সপ্তাহে তিন-চার দিন কথা হয়। কেন ভাইয়া?

: না মানে, চাচিকে আমাদের কথা বলেছিলে?

: জি ভাইয়া।

: চাচি কী বললেন?

নদী পুরোপুরি সত্য না বললেও মিথ্যেও বলল না। বলা যায় সত্যটাকেই অনেকটা পাশ কেটে গেল। বলল, মা খুব একটা কিছু বলেননি। বুঝতেই পারছেন, মা বিয়ের পরে পুরোপুরি একটা দিনও শ্বশুর বাড়িতে সংসার করতে পারেননি। সারাটা জীবন শ্বশুর বাড়ির সঙ্গে কোনো সংস্পর্শ ছিল না। তাই আপনাদের কথা শুনে তিনি চুপচাপ হয়ে গিয়েছিলেন।

নাবিদ বলল, ওটাই স্বাভাবিক। ও হ্যাঁ, আমি গতকাল আরমান চাচার সঙ্গে কথা বলেছি।

: আরমান চাচার সঙ্গে, কী কথা হয়েছে?

: তোমার ব্যাপারে কথা হয়েছে। তোমার কথা শুনে তিনি তো খুব খুশি হয়েছেন। আমার কাছ থেকে তোমার মোবাইল নম্বর নিয়েছেন। আজকালের মধ্যে তোমাকে ফোন দেবেন।

নদী খুশি হয়ে বলল, তাহলে তো দারুণ। আমিও আপনার কাছ থেকে আরমান চাচার নম্বরটা নিয়ে যাব।

নাবিদ বলল, অবশ্যই। দাঁড়াও, বাসায় ঢুকেই তোমার নম্বরে আরমান চাচার নম্বরটা এসএমএস করে দেব। তুমি তাকে ফেসবুকেও পেতে পার।

নদী বলল, আমি অবশ্য ফেসবুকে তেমন একটা অ্যাকটিভ না। তারপরও আমি তাকে ফেসবুকে খুঁজব।

নাবিদ মাথা ঝাঁকাল। মৃদু হাসলও।

নদীও মৃদু হেসে দূরে তাকাল। এমনিই। আকাশের পর আকাশ। মেঘের পর মেঘ। রৌদ্রের ঝলমলে দুপুরে বাতাসের মিষ্টি আমেজ। তার গায়ে যদিও ফতুয়ার ওপর একটা কার্ডিগান চাপানো। কিন্তু এই মিষ্টি রোদে তার এই কার্ডিগানটা না চাপালেও হতো।

নদী এই মেঘ, মেঘের ফাঁকের নীল আকাশ ও এই ঝলমলে রোদের দিকে তাকিয়ে থেকে ভাবল, মাত্র আট-নয় মাস আগেও এই পরবাসে সে ছিল আত্মীয়স্বজনহীন একা। বলা যায়, তার কোনো বাঙালির সঙ্গে পরিচয় ছিল না। ঠিক এমনই একপর্যায়ে রাকিবের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তারপর একের পর এক পরিচয় হয় নাজমুল আহসান, শিমুল ভাবি ও বাংলাদেশ কমিউনিটির কিছু ভালো মানুষের সঙ্গে। বেবুন ভাবির মতো জটিল মানুষের সঙ্গে যে পরিচয় হয়নি, তা নয়। আর আজ এত কাছের আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে জানাশোনা হলো!

মৌনতা কোথা থেকে ডেকে এসে তাদের কাছে দাঁড়াল। নাবিদের গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে কোনো ভণিতা না করেই জিজ্ঞেস করল, বাবা, বাবা, তুমি যে একা একা এভাবে একজন মেয়ের সঙ্গে দাঁড়িয়ে আছ?

নাবিদ জিজ্ঞেস করল, তাতে কী হয়েছে?

মৌনতা বলল, মা কিন্তু এতে রাগ করবে, হ্যাঁ।

নাবিদ মৌনতার কথায় কিছুটা বিব্রতবোধ করলেও সহজ গলায় বলল, মৌনতা, তুমি এত পাকামো করবে না। তোমাকে কে বলেছে যে আমি কোনো মেয়ের সঙ্গে কথা বললে তোমার মা রাগ করে?

: হ্যাঁ, আমি জানি।

: তুমি কী জানো?

: তুমি কোনো মেয়ের সঙ্গে কথা বললে মা রাগ করে।

নাবিদ মৌনতার কথার জবাব না দিয়ে নদীর দিকে তাকিয়ে বলল, নদী দেখেছ, তোমার ভাতিজি কী পাকনা!

নদী হাসল। কিছু বলল না।

মৌনতা জোর গলায় বলল, হ্যাঁ বাবা, রাগ করেই তো। শুধু কথা বললেই না, তুমি তাকালেও মা রাগ করে। ওই যে আমরা র‌্যাগল্যান বিচে গিয়েছিলাম। তুমি সুইমিং কস্টিউম পরা একটা মেয়ের দিকে তাকিয়ে ছিলে বলে মা কী রাগ করল...!

নাবিদের এবার বিব্রত হওয়ার হাসিটা একটু বিস্তৃত হয়ে উঠল। নদীর দিকে আবার তাকিয়ে বলল, দেখছ নদী, তোমার ভাগনি কী পাজি!

মৌনতা বলল, বাবা, তুমি আমাকে পাজি ডাকবে না। আমি ঠিকই বলেছি। সেদিন তুমি বর্ষা আন্টির সঙ্গে একা একা কথা বলছিলে বলে মা পুরো একদিন তোমার সঙ্গে কথা বলেনি। তুমি পরে মাকে অনেক সরি বলেছ।

নাবিদ এবার মৌনতাকে ধমক দিয়ে উঠল। বলল, মৌনতা, চুপ কর। এত পাকামো কর না। এটা তোমার কে জানো, এটা তোমার আন্টি।

মৌনতা বলল, বর্ষা আন্টিও তো আমার আন্টি।

নাবিদ এবার সত্যি রেগে গেল। সে মৌনতাকে কিছু বলতে যাবে ঠিক তখনই জুঁই ডেকে এসে তাদের দিকে এগিয়ে আসতে আসতে জিজ্ঞেস করল, কী হয়েছে, তুমি মেয়েটার সঙ্গে রাগারাগি করছ কেন?

নাবিদ বলল, তোমার মেয়ে যে, পাকনার হাড্ডি।

জুঁই বলল, হয়েছে, হয়েছে, ভালো কিছু হলে নিজের মেয়ে। খারাপ কিছু হলে আমার মেয়ে।

মৌনতা বলল, মা, বাবা না এই আন্টির সঙ্গে এখানে একা একা গল্প করছে।

জুঁই জিজ্ঞেস করল, তাতে কী হয়েছে?

: কোনো আন্টির সঙ্গে বাবা একা একা গল্প করলে মা তুমি না রাগ কর?

: মৌনতা, চুপ কর। সে তোমার ফুপি।

: বাবা তো বলল, সে আমার আন্টি।

: ফুপি আর আন্টি এক কথাই।

মৌনতা এবার জেদ চাপিয়ে বলল, মা, তোমরা ভুল কথা বলছ। বাবা কোনো আন্টির সঙ্গে কথা বললে তুমি রাগ কর না?

জুঁই এবার ধমক দিয়ে বলল, মৌনতা, চুপ, একদম চুপ। তুমি ভেতরে যাও। বড়দের মধ্যে তোমার কথা বলতে নেই।

মৌনতা জুঁইয়ের এসব ভিন্ন আচরণ বুঝতে না পেরে চুপ হয়ে গেল।

জুঁই নাবিদকে উদ্দেশ করে বলল, কী, তুমি কী তোমার বোনের সঙ্গে এখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়েই গল্প করবে নাকি ভেতরে আসবে? কয়টা বাজে দেখেছ? দুপুরে লাঞ্চ কয়টায় করবে?

নাবিদ জিজ্ঞেস করল, কয়টা বাজে?

জুঁই বলল, প্রায় পৌনে তিনটা বাজে।

নাবিদ বলল, বল কী!

জুঁই বলল, হ্যাঁ, আমি ডাইনিং টেবিল সাজিয়ে এসেছি। তোমরা খেতে আস। আমরা প্রয়োজনে লাঞ্চ শেষে এখানে বসে চা-বিস্কুট খেতে খেতে গল্প করব।

নাবিদ ব্যস্ত গলায় বলল, হ্যাঁ হ্যাঁ, চল।

ডাইনিং টেবিলের সাজানো খাবার দেখে তো নদী ভীষণ অবাক। লাউ-চিংড়ি, ছোট মাছের ঝোল, কচুর মুখীর ঘাটি, কাঁচা তেঁতুলের টক, লাল শাক ভাজি ও সরিষা ইলিশ। এ ছাড়া মুরগির রোস্ট, গরুর মাংসের ভুনা ও কিমার কাবাব তো আছেই।

নদী চেয়ার টেনে বসতে বসতে জিজ্ঞেস করল, ভাবি, এতসব আইটেম কি আমার জন্য করেছেন?

জুঁই বলল, হ্যাঁ।

: সব তো বাঙালি খাবারের আইটেম। এই সবকিছু সংগ্রহ করেছেন কোথায় থেকে?

: হ্যামিল্টনে ফিজি-ইন্ডিয়ান দোকানে সব পাওয়া যায়। তবে কয়েকটা ইলিশ মাছ গত মাসে অকল্যান্ড থেকে এনেছিলাম। আজ এর থেকে একটা রান্না করেছি।

: হ্যামিল্টনে ফিজি-ইন্ডিয়ান দোকানে এত কিছু পাওয়া যায় জানতাম না তো? আসলে আমার কখনো ফিজি-ইন্ডিয়ান দোকানে যাওয়াই হয়নি।

জুঁই বলল, আমি তোমাকে একদিন নিয়ে যাব।

নদী সায় দিয়ে হাসল। তার ভেতরে-ভেতরে বেশ আনন্দবোধ হচ্ছে এই ভেবে যে, শুধুমাত্র তার জন্য কেউ একজন এত আপন করে এত কিছু রান্না করে রেখেছে! গ্রিন্সবড়ো স্ট্রিটের বাসায় থাকতে সে ব্রেড-জ্যাম, নুডলস বা বার্গার, এসব খেয়েই দেড়টা বছর কাটিয়েছে। প্রথম কয়েক মাস একটা কিছু রান্না করার একটা পাত্র বা সসপেন ছিল না। পরে লিয়নির সঙ্গে একটা সেকেন্ডহ্যান্ড দোকানে গিয়ে সসপেন, ফ্রাইপ্যান, কিছু প্লেট-গ্লাস কিনে দিয়েছে। শিমুল ভাবি ও নাজমুল আহসানের বাসায় ওঠার পর আজকাল সে রান্না করে। কখনো কখনো এক সপ্তাহের জন্য রান্না করে ফ্রিজে রেখে দেয়। এই রান্নাটা সে রাকিবের কাছ থেকে শিখেছে।

নাবিদ ডাইনিং টেবিলের চেয়ার টেনে বসতে বসতে বলল, জুঁই, আমার বোনের জন্য আইটেম একটু কম হয়ে গেল না?

জুঁই কিছু বলার আগেই নদী বলে উঠল, ভাইয়া, আপনি কী যে বলেন! জানেন, কত দিন পর আমি এসব বাঙালি খাবার দেখছি? (ক্রমশ)

মহিবুল আলম: গোল্ড কোস্ট, কুইন্সল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া। ইমেইল: <[email protected]>