নীরব কান্না

অলংকরণ: মাসুক হেলাল
অলংকরণ: মাসুক হেলাল

পেছন ফিরে আর তাকিয়ে দেখো না
জানো কী,
অভিশাপের অশ্রু কখনো শুকায় না
জমে থাকা অশ্রুর এক একটি করুণ বিন্দুকণা মাটিতে পরে অস্ফুট আর্তনাদে অভিশপ্ত করে দেবে তোমার অভিলাষী জীবন।
আজ চোখে নেমে আসে নৈসর্গিক আঁধার, আর এই আঁধার জন্ম দিয়েছে মনের গহিনে জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরি।
নীরব এই কান্না কখনো তোমার কান পর্যন্ত পৌঁছায়নি।
তোমার হৃদয় ছুঁয়ে দেখতে কখনো বাধ্য করেনি আমার অপূর্ণতাকে।
জীবনের অমূল্য সময়ে আপন সত্তাকে বিলীন করেও তোমার মনুষ্যত্বকে ফিরিয়ে পাওয়ার আশা ছিল সর্বদাই ক্ষীণ। 

আমাকে শূন্যতা দিয়ে
পূর্ণ করেছ তোমার চলার পথ।
তারপরও নিজ মনের গঠন সযত্নে
রেখেছি অপূর্ণতায় পরিপূর্ণ।

তুমি সর্বদাই এই নৈমিত্তিক আচরণে অভ্যস্ত।
আর আমি,
প্রতিটি মুহূর্তে বয়ে চলেছি তোমার নির্লজ্জতার আত্মগ্লানি!
নিজেকে ভাঙতে ভাঙতে আজ আমি এতটা পথ উত্তরণ করেছি মিথ্যে ক্ষমতায় পরিবেষ্টিত একটি তুচ্ছ পুতুল হয়ে!
তোমার লালসায় প্রণয়ন করা জ্বলন্ত দহনে পুড়তে পুড়তে নিজের অস্তিত্বের দেয়ালকে করেছি কঠিন।
তবুও নিঃস্বার্থ, নির্বিকার হয়ে আগুনের ছোঁয়া নিয়ে অনবরত আগুনের পাশ দিয়েই হেঁটে চলেছি।

লেখিকা
লেখিকা

হয়তো একদিন এই মনের অতৃপ্ত আত্মা উঁচু পাহাড়ের গভীর থেকে গভীরে স্খলিত হবে।
ওই সময়ের ব্যবধানে
পথের সঙ্গে হবে পাথরের ঘর্ষণ
শূন্যতার সঙ্গে হবে গভীরতার ক্রন্দন
শরীরের সমাধি মিশে যাবে স্রোতের মোহনায়
শুধু আত্মার আওয়াজ রয়ে যাবে যা কখনো মরবে না।
অতৃপ্ত আত্মার আত্মচিৎকার তোমার কানে বাজবে অবিরত
ভেঙে যাবে বিকট শব্দে চারদিকের নীরবতা।

এক এক করে সবাই চলে যাবে
নিজ নিজ গন্তব্যে
দেখতে পাবে শুধু নিজেরই প্রতিচ্ছবি।
তোমার দীনতার আহাজারি
কানে পৌঁছাবে ঠিক কিন্তু দেওয়ার ক্ষমতা তখন আমার দখলে আর থাকবে না।
সেদিন তুমি পাহাড় সমান নিঃসঙ্গতা
নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে বিরান পথে।
আশ্রয়হীন হয়ে প্রহর গুনবে
শেষ পরিণতির বিবর্ণ মর্মপীড়ায়।
...

উইলি মুক্তি: নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র।