ঝরা পাতার তুষার সমাধি

প্রতীকী ছবি। সংগৃহীত
প্রতীকী ছবি। সংগৃহীত

সূর্যের তেজ কমে এলে ছোট হয় যে বেলা

গাছে গাছে শুরু হয় রঙিন পাতার মেলা।
লাল কমলা হলদে বরণ কোনটি আবার মেরুন
আগুনে পোড়া রঙের সে বন দেখায় বড় দারুণ।
ঠান্ডা হাওয়া ঘোরে ফেরে উদাস বনের পাখি
ম্যাপল গাছ দুঃখে বলে কেমনে পাতা রাখি।
একটি দুইটি তিনটি করে ঝরছে পাতা ধরায়
বাকিরাও সব ঝরবে নিচে খেলতে মনোহরায়।
উত্তরের জোর ঘূর্ণি হাওয়া ওড়ায় তাদের দূরে
সবাই মিলে গান ধরে তাই মর মরে এক সুরে।
শুকনো পাতা উড়ে উড়ে সকল বনে ঘোরে
এই সুযোগে জগৎ তারা দেখবে নয়ন ভরে।
দিনের শেষে সাঁঝের মায়ায় সন্ধ্যা এল বনে
ঝরা পাতার হারিয়ে যাওয়ার ভয় ধরে না মনে।
পাতার দল তাকিয়ে দেখে পাইন বনের ফাঁকে
দল বেঁধে সব খ্যাঁকশিয়ালেরা হুক্কা হুয়া হাঁকে।
বনের ভেতর গহিন রাতে ভীষণ আঁধার কালো
হঠাৎ মেলে পুব আকাশে পূর্ণিমা চাঁদের আলো।
নিঝুম রাতের জ্যোৎস্নারা সব খিলখিলিয়ে হাসে
আঁকা বাঁকা হ্রদের ঢেউয়ে ওকের পাতা ভাসে।
বলে সবাই, ওক পাতা ভাই, ভাসছ কেন জলে?
মনের সুখে ঘুরব যে আজ, এসো না এই দলে।
ওকের পাতাও দলের সাথে চলছে পাশে পাশে
উইলো গাছের হুতোম প্যাঁচা তাই না দেখে কাশে।
ভোর আকাশে জমাট বাধা ধূসর মেঘের ছায়া
পাতারা ভাবে এবার বুঝি ছাড়তে হবে মায়া।
হিমাঙ্কের নিচে তাপমাত্রায় মেঘের কণাগুলো
একটু করে ঝরছে যেন নরম সাদা তুলো।
শুভ্র তুষার ঝরছে নিচে ঝরা পাতায় পড়ে
শুকনো পাতার সমাধি হয় চিরদিনের তরে।
...

রানা টাইগেরিনা: টরন্টো, কানাডা। ইমেইল: <[email protected]>

প্রতীকী ছবি। সংগৃহীত
প্রতীকী ছবি। সংগৃহীত