অ্যারিজোনায় ফ্যামিলি ক্যাম্পিংয়ে একদিন

তাঁবুতে রাত কাটানোর পর সকালে ক্যাম্পাররা
তাঁবুতে রাত কাটানোর পর সকালে ক্যাম্পাররা

আরিজোনায় থাকি এক যুগের বেশি সময় ধরে। আমাদের এই যাযাবর জীবনে এর আগে উত্তর আমেরিকার বেশ কয়েকটি শহরে থাকার সুযোগ হয়েছিল। চাকরির সুবাদেই এখানে আসা। কিন্তু আমরা কেউ জানি না, এক শহরে কত দিন থাকব। বিশেষ করে এই দীর্ঘ প্রবাস জীবনে আমরা যারা হাইটেক সেক্টরে কাজ করি, তাদের অবস্থা সবচেয়ে অনিশ্চিত। এত অনিশ্চয়তার দোলাচলের মাঝেও কেমন করে যেন আমরা অ্যারিজোনার Chandler শহরে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে বাস করছি। মরু এলাকা হলেও কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের এই অঙ্গরাজ্যটি বৈচিত্র্যে ভরপুর। এক লাখ তেরো হাজার নয় শ আটানব্বই বর্গমাইলের বিশাল অ্যারিজোনার এক অংশে যখন শীতে বরফে ঢেকে থাকে, আরেক অংশ তখন কড়কড়ে শুকনো। এক অংশ ধু ধু বালুময়, আরেক অংশ গহিন জঙ্গল।

বৈচিত্র্যময় এই প্রকৃতিতে বিচরণে মূলস্রোতের আমেরিকানদের মতো অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় কিছু বাঙালিরা এখানে বাংলাদেশের পার্বত্য এলাকার পর্বত চূড়া নীলগিরির নামকরণে একটি হাইকিং দল গড়ে তুলেছে। আমরা অনেকেই সেই হাইকিং দলের নিয়মিত-অনিয়মিত সদস্য। তাদের মধ্যে কেউ কেউ আবার পাহাড় ও বন-জঙ্গলে ক্যাম্পিং (তাঁবু বাস) করেন। তেমনি এক জোড়া ক্যাম্পিং প্রিয় দম্পতি হলেন ঊর্মি-কামরুল। তারা একটি গ্রুপ হাইকিংয়ের প্রস্তাব করলেন। মনে পড়ে কলেজজীবনে ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ থেকে আমরা মধুপুরের বনে শীতকালে ক্যাম্পিংয়ে যেতাম। সেই স্মৃতিটুকু কিন্তু অনেক মধুর। অনেক বছর পরে এসে তেমনি একটি অ্যাডভেঞ্চার প্রস্তাবে খুবই ভালো লাগল। সানন্দে সপরিবারে যাওয়ার পরিকল্পনা করলাম।

নারী ক্যাম্পারদের একটি দল
নারী ক্যাম্পারদের একটি দল

শুরু হলো ক্যাম্পিংয়ের প্রস্তুতি। ক্যাম্পিং হবে আমাদের শহরের অদূরে উসারি মাউন্টেনে। অনেকের জন্যই যেহেতু এটা সপরিবারে প্রথম ক্যাম্পিং, খুব বেশি দূরে আমরা যাচ্ছি না। সিদ্ধান্ত হলো ক্যাম্পিং হবে ডিসেম্বর মাসের এক তারিখে। উত্তর আমেরিকায় তখন শীত জেঁকে বসেছে। রাতে তাপমাত্রা শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি নামতে পারে। এত শীতের কথা চিন্তা করে অনেকে রাতে শহরে চলে আসার পরিকল্পনা করে রেখেছেন। কিন্তু আমরা কতিপয় নাছোড়বান্দা রাতে থাকার প্রস্তুতি নিতে থাকি। ক্যাম্পিংয়ের সামগ্রী কেনার সবচেয়ে সাশ্রয়ী জায়গা ওয়ালমার্টের দ্বারস্থ হলাম। তাঁবু, তারপুলিন, স্লিপিং ব্যাগ, ইনফ্লাটেবল এয়ার ম্যাট্রেস, ব্যাটারি অপারেটেড লাইটস, চাকু, রশি কী নেই সেখানে? একটি লিস্ট তৈরি করে একে একে সবই কিনলাম। আমাদের মডেল কলেজের সিনিয়র ভাই মামুন ভাইকে দেখলাম শীতের অতিরিক্ত প্রস্তুতি হিসেবে প্রোপেন হিটার কিনেছেন। আমার ছয় বছর বয়সী মেয়েটি আবার রাতে কম্বল থেকে বের হয়ে যায়। তার কথা চিন্তা করে মামুন ভাইয়ের বুদ্ধিটি কাজে লাগলাম। আমিও একটি প্রোপেন হিটার কিনলাম। এর পাশাপাশি গরম পরিধেয় সামগ্রী যেমন; কয়েক স্তরে পরিধেয় কাপড়, গরম হাত-পায়ের মোজা, মাথা ঢাকার টুপি, গলার মাফলারের ব্যবস্থা করতে হলো আমাদের।

আমাদের আরেকজন ক্যাম্পিং সংগঠক বুয়েটের ছোট ভাই মানস সবাইকে Mesa শহরের থাই প্লেট কুইজিন রেস্টুরেন্টে সমবেত হওয়ার জন্য অনুরোধ করল। উদ্দেশ্য সবাই যেন একত্র হয়ে একসঙ্গে পাহাড়ে ক্যাম্পিং সাইটে প্রবেশ করি। ডিসেম্বরের ১ তারিখ দুপুরের দিকে আমরা গাড়িতে মালামাল তুলে মহা উৎসাহে রেস্টুরেন্ট হয়ে ক্যাম্পিংয়ের উদ্দেশে রওনা দিলাম। থাই প্লেট কুইজিনে সবাই সমবেত হয়ে পাহাড়ের আঁকাবাঁকা পথ ধরে এক সময়ে আমরা ক্যাম্পিং সাইটে পৌঁছে গেলাম। প্রবেশ পথে গার্ডদের নীলগিরি কোড দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা প্রবেশ পাস, এলাকার একটি ম্যাপ ও ক্যাম্পিং স্পটের তথ্য দিলেন। দেখলাম দুটো ক্যাম্পিং স্পট (এ ও বি) নীলগিরির নামে বুকিং দেওয়া আছে।

পুরুষ ক্যাম্পারদের একটি দল
পুরুষ ক্যাম্পারদের একটি দল

স্পটে এসে মনটা জুড়িয়ে গেল। এত সুন্দর একটি স্পট নির্ধারণের জন্য ঊর্মি-কামরুলকে মনে মনে ধন্যবাদ দিলাম। জনপদের বাইরে এই পাহাড়েও ক্যাম্পারদের জন্য পানি, বিদ্যুৎ, শৌচাগারের ব্যবস্থা আছে। প্রথমবারের মতো ক্যাম্পিংয়ে আসা মানুষদের কথা বিবেচনা করে এই স্থান নির্ধারণের জন্য আয়োজক ঊর্মি-কামরুলের বিবেচনা সত্যিই প্রশংসাযোগ্য। ধীরে ধীরে ক্যাম্পিং স্পট প্রাণোচ্ছল মানুষদের পদচারণায় মুখরিত হলো। প্রাণোচ্ছল এই মেলায় বিকেল থেকে রাত অবধি সব বয়সী মানুষের জন্য অনেক রকম আনন্দের আয়োজন ছিল। এক গ্রুপ যখন তাঁবু খাঁটিয়ে বসতি গড়তে ব্যস্ত, আরেক গ্রুপ তখন ক্যাম্পফায়ারে আগুন জ্বালাচ্ছে, অন্য আরেক গ্রুপ তখন খাবারের দায়িত্বে। এক অভূতপূর্ব ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সহযোগিতায় সবাই যখন যার যার কাজের অংশটুকু শেষ করলেন তখন রাতের খাবারের পালা।

পাহাড়ে মাঝে বহু ধরনের মজাদার খাবারের আইটেম দেখে আসলেই অভিভূত হলাম। সবগুলো আইটেমের কথা আমার মনে নেই। তবে পোলাও-মাংস, পরোটা, চিকেন, বিফ, ভেজিটেবল আর বেশ কয়েক ধরনের তরকারির কথা মনে আছে। আর চা-শিঙাড়া ও পুরি তো প্রথম থেকেই ছিল। রাতে খাবারের পরে ডেজার্ট হিসেবে ছিল ডজনখানেক নানা ধরনের মিষ্টি! মনে মনে ভাবলাম, কতটুকু আন্তরিকভাবে কাজ করলে ভাবিরা এতগুলো আইটেম রান্না করতে পারেন আর ভাইয়েরা সেই রান্না করা ভারী খাবারগুলো এত দূরে পাহাড়ে বহন করে নিয়ে আসতে পারেন!

তাঁবু খাটাতে ব্যস্ত লেখক
তাঁবু খাটাতে ব্যস্ত লেখক

রাতের বেলায় ক্যাম্প ফায়ার ছিল এই ক্যাম্পিংয়ের প্রধান আকর্ষণ। খাবারের পর আমরা সবাই ক্যাম্প ফায়ারের চারপাশে বসি। চলে আড্ডা, গল্প ও গানের আসর। বড়রা যখন ক্যাম্প ফায়ারে আড্ডায় ব্যস্ত ছোটরা তখন মনের সুখে মার্সমেলো পুড়িয়ে খাচ্ছে। তারা মনের সুখে বাঁশি বাজাচ্ছে, আকাশে ছুড়ছে আলোর তীর। বোঝাই যাচ্ছে আয়োজক ঊর্মি ছোট বাচ্চাদের আনন্দের কথা বিশেষভাবে চিন্তা করে পরিকল্পনায় তা ভালোভাবেই রেখেছেন। এর পাশাপাশি ক্যারাম বোর্ড, ভলিবলের আয়োজনও ছিল। চারদিকে অন্ধকার, কিন্তু আমাদের সমবেত হওয়ার জায়গাটায় বিদ্যুতের আলোর ব্যবস্থা ছিল। সেই বিদ্যুতের আলোয় কেউ বা খেলছে ক্যারাম বোর্ড, কেউ বা খেলছে ভলিবল।

বৃহত্তর গ্রুপের সঙ্গে আনন্দের যতি পরে রাত দশটার পর। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জনমানবহীন এই পাহাড় আরও নির্জন হতে থাকে। সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে শীতের তীব্রতা। এই সময় অংশগ্রহণকারীদের একটা বিরাট অংশ ক্যাম্পিং সাইট ছেড়ে শহরে ফিরে যান। শুধুমাত্র আমরা সাতটি পরিবার রাত কাটানোর জন্য ক্যাম্প সাইটে থেকে যাই। শুরু হয় তাঁবুবাসী এই পরিবারগুলোর রাতে থাকার প্রস্তুতি। তাঁবু দিনের আলোতেই বানানো ছিল। এখন বিছানা করার পালা। সহজ পরিবহনের জন্য ইনফ্লাটেবল ম্যাট্রেস এনেছি আমরা। তা এখন বাতাস দিয়ে ফোলাতে হবে। সবার ইনফ্লাটেবল ম্যাট্রেস পাম্প করার দায়িত্ব নিয়ে নিরলসভাবে এক অভাবিত সার্ভিস দিলেন হারুন ভাই। মামুন ভাইয়ের ইলেকট্রিক পাম্পের বদৌলতে পাম্পের কাজটা তবু কিছুটা সহনীয় হয়েছিল।

পাহাড়ে থাকার জন্য তাঁবু
পাহাড়ে থাকার জন্য তাঁবু

থেকে যাওয়া সাতটি পরিবারের ক্যাম্প ফায়ার আসর তবু জমেছিল রাত সাড়ে বারোটা পর্যন্ত। ঘুমের আগ মুহূর্তে হালকা স্ন্যাক্স দিয়ে আমাদের ক্ষুধা নিবারণ করল বুয়েটে আমার ছোট ভাই ইমনের সহধর্মিণী শিরিন। রাত বারোটার পর শীতের তীব্রতা আরও বাড়ল। ক্যাম্প ফায়ারের আগুনও নিভু নিভু। সুতরাং ক্যাম্প ফায়ারের আগুন সম্পূর্ণ নিভিয়ে আমরা চলে গেলাম যার যার তাঁবুতে। রাতে যখন আমরা সবাই তাঁবুতে ঢুকলাম, তখন রাতের নিস্তব্ধতা ভেদ করে দূর থেকে কয়োটিদের ডাকের শব্দ ভেসে আসছে। চারদিকের বাস্তবতা যেন আমরা এতক্ষণে উপলব্ধি করতে পারলাম। জনমানবহীন এই পাহাড়ি জঙ্গলে আমরা একা কয়েকটি প্রাণী। চারদিকে গভীর নিস্তব্ধতার মাঝে ঝিঁঝি পোকা জাতীয় কিছু একটা ডাকছে। মাঝে মাঝে আশপাশের ঝাড় থেকে খসখস শব্দ ভেসে আসছে। কে জানে, এটা কী বাতাসের শব্দ নাকি অন্য কিছু?

এই অস্বস্তিকর আধিভৌতিক পরিবেশের মধ্যেই হঠাৎ আমরা এক সুরেলা কণ্ঠের ভাটিয়ালি গান শুনতে পেলাম। হ্যাঁ, আমাদের জাহিদ, ভাটিয়ালি আর পল্লিগীতির সুর দিয়ে পরিবেশটা মধুর করে দিল। আমরা সবাই স্বস্তিতে ঘুমের প্রস্তুতি নিলাম। তাঁবুর জানালা খুলে একনজর আশপাশে দেখে নিলাম। শীতের গভীর রাত, ওপরে তারা ভরা খোলা আকাশ, পেঁজা তুলার মতো মেঘের আড়াল থেকে কৃষ্ণপক্ষের রুপালি চাঁদ মাঝে মাঝে উঁকি ঝুঁকি দিচ্ছে। কুয়াশা ভেদ করে দূরে শহরের আলোর বিন্দুগুলো তখনো দেখা যাচ্ছে। এ এক অন্যরকম ভালো লাগা! আলো আঁধারি ভরা এই মায়াবী রাতে আমরা সাতটি পরিবার প্রকৃতির কাছে আত্মসমর্পণ করে এক সময় ঘুমিয়ে পড়লাম!

রাতে ক্যাম্পফায়ারের আড্ডা
রাতে ক্যাম্পফায়ারের আড্ডা

খুব ভোরে ঘুমের মাঝেই একটা আওয়াজ শুনতে পেলাম, ‘বস্তিবাসী জাগো, ভোর হয়েছে সূর্যোদয়কে দেখো। তাড়াতাড়ি জাগো বস্তিবাসী, তোমাদের জন্য গরম কফি রেডি, গরম বেগল রেডি।’ ঘুমের ঘোরে ভাবলাম, তাঁবুতে থাকার কারণে হয়তো বাংলাদেশের বস্তিবাসী হয়ে কোনো স্বপ্ন দেখছি। কিন্তু বাংলাদেশের বস্তিবাসীরা তো কফি চেনে না, বেগল চেনে না। ভাবলাম, বাংলাদেশ আর আমেরিকা মিলিয়ে হয়তো শেষরাতের আবোলতাবোল কোনো স্বপ্ন দেখছি। কিন্তু একটু পরেই আবার সেই একই ডাক, বস্তিবাসী জাগো। বিরক্তিতে ঘুম এবার ভালোভাবেই ভাঙল।

তাঁবুর জানালা খুলে দেখি সত্যি সত্যি অন্ধকার হালকা হয়ে এসেছে। কুয়াশা ভেদ করে ভোরের আলোর আভাস দেখা যাচ্ছে। ঘড়ির দিকে তাকালাম। হ্যাঁ, সকাল ছয়টা পার হয়ে গেছে। তাঁবুর জানালা দিয়ে শব্দের উৎস বোঝার চেষ্টা করলাম। কিন্তু যা দেখতে পেলাম তাতে চোখ ছানাবড়া হয়ে গেল। দেখি মিন্টু ভাই আর জুলেখা ভাবি কফি ও বেগল হাতে। সঙ্গে আবার হরেকরকম cheese spread. হালাপিনো, হানি সুইট, অরিজিনাল ফ্লেভার, কী নেই?

সদ্য ঘুম থেকে ওঠা আমার স্ত্রী নীপার সঙ্গে বিষয়টা আলোচনা করছিলাম। এই শহরে এমন মানুষও কিনা আছেন যারা কিনা আমাদের কথা চিন্তা করে নিজ গরজে এই শীতের সকালে দূর শহর থেকে কফি, বেগল কিনে বয়ে নিয়ে আসতে পারেন! আমরা কতটা সৌভাগ্যবান, এ রকম দেবতাসম আচরণ আমাদের আমাদের কোনো আমাদের কোনো বন্ধুই করছেন! দেখি, আমাদের দু-একজন বস্তিবাসী ততক্ষণে অ্যাঞ্জেল কর্তৃক আনা ওই খাবারের স্বাদ গ্রহণ করছেন। আর বিছানায় থাকা যায় না। তাড়াতাড়ি আমরা বিছানা ছেড়ে উঠে পড়লাম। খুব শীতের সকালে ক্যাম্প ফায়ারের আগুন ততক্ষণে আবার জ্বলে উঠেছে। ক্যাম্প ফায়ারের পাশে বসে গরম কফি আর বেগলের সেই স্বাদ অমৃতকেও যেন হার মানায়!

তাঁবুর সামনে লেখক ও তাঁর স্ত্রী
তাঁবুর সামনে লেখক ও তাঁর স্ত্রী

বিস্ময়ের কিন্তু এখানেই শেষ নয়। একটু পরেই তাঁবু গোছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি আমরা সবাই। তাঁবু de-assemble করে জিনিসপত্র গাড়িতে তোলার পর ক্ষুধা যখন আবার চাড়া দিয়ে উঠল, তখন তাকিয়ে দেখি গরম-গরম পরোটা, ডিম ভাজি আর লিপি ভাবির গরুর গোশত রেডি। সঙ্গে আবার গরম চা! নাশতার এই ব্যবস্থা নাকি জাহিদ-রোজি মনে মনে করেই রেখেছিল, সকালে শুধু আমাদের সারপ্রাইজ দেওয়ার পালা।

যা হোক, সবকিছু গুছিয়ে, সবকিছু পরিষ্কার করে আমরা যখন ক্যাম্প সাইট ছেড়ে আসব তখন বেলা প্রায় দুপুর। সবার মনে তখন খুবই খারাপ লাগছিল। এত সুন্দর সময় এত তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেল! ঊর্মি-কামরুলকে আমরা অনুরোধ করলাম এ রকম আরেকটি ক্যাম্পিং আবার অর্গানাইজ করতে। আশার কথা হলো তারাও আরেকটি আয়োজনে উৎসাহী। পরবর্তী প্রোগ্রামের জন্য হয়তো আমাদের আগামী বসন্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তবে এ রকম আরেকটি সুন্দর সময়ের জন্য বুক বেঁধে অপেক্ষা করব। তত দিন না হয় উসারি মাউন্টেনের মধুর স্মৃতিই মন ভরিয়ে রাখবে!

There is a pleasure in the pathless woods;
There is a rapture on the lonely shore;
There is a society, where non intrudes,
By the deep sea and music in it’s roar:
I love man not the less, but the Nature more...
—Lord Byron