মরিশাসে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ ও খাদ্য মেলা

প্রীতি ফুটবল ম্যাচের সূচনা করেন অতিথিরা
প্রীতি ফুটবল ম্যাচের সূচনা করেন অতিথিরা

মরিশাসের বাংলাদেশ হাইকমিশনের উদ্যোগে দেশটির রাজধানী পোর্ট লুইসে এক প্রীতি ফুটবল ম্যাচ ও খাদ্য মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার (১৫ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় সকালে গ্র্যান্ড বে ফুটবল মাঠে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পোর্ট লুইসের ডেপুটি মেয়র এহসান ইসমায়ী মামুদ। এ ছাড়া, মরিশাসে নিয়োজিত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনার, কূটনীতিক, দেশটির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, বিভিন্ন পেশার মানুষ ও প্রবাসী বাংলাদেশিরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার রেজিনা আহমেদ বাংলাদেশের ক্রীড়ার ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ওপর আলোকপাত করে বলেন, বহু লোকজ ক্রীড়া এখনো বাংলাদেশের আনাচকানাচে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। যার মধ্যে লুকিয়ে আছে আমাদের পূর্ব পুরুষের আবহমানকালের সংস্কৃতি, প্রতিযোগী মনোভাব, রাজনৈতিক কৌশল ও সিদ্ধান্ত-গ্রহণের সক্ষমতা। বৈশ্বিক অঙ্গনে বাংলাদেশের কৃতিত্বপূর্ণ অর্জনের উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েদের মাঝেও ফুটবল খেলা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সাম্প্রতিককালে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক পরিমণ্ডলে মেয়েরা শিরোপা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

খাদ্য মেলায় বাংলাদেশি খাবার
খাদ্য মেলায় বাংলাদেশি খাবার

রেজিনা আহমেদ বলেন, ক্রিকেট খেলা এখন বাংলাদেশে শুধু জনপ্রিয়ই নয়, আগামীদিনে বাংলাদেশ বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্ন দেখে। তিনি ক্রীড়াক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগের বর্ণনা করে উল্লেখ করেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশের অন্য খাতের মতো ক্রীড়াঙ্গনেও সময়োচিত পদক্ষেপ নেওয়ার ফলে বাংলাদেশ ক্রীড়া জগৎ প্রতিনিয়ত ভালো করে চলেছে। তিনি বাংলাদেশ ও মরিশাসের মধ্যকার বিদ্যমান সম্পর্ককে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, বাংলাদেশ ও মরিশাসের মধ্যকার প্রীতি ফুটবল ম্যাচ দুই দেশের জনগণের মধ্যে দৃঢ় সেতুবন্ধ তৈরিতে সহায়তা করবে। দুই দেশ আগামী দিনগুলোতে ক্রীড়াঙ্গনে সহযোগিতার সম্ভাব্য নতুন উপায়সমূহ অনুসন্ধান ও তা জোরদার করবে।

খাদ্য মেলা প্রসঙ্গে রেজিনা আহমেদ বলেন, এটি মরিশাসে বাংলাদেশ হাইকমিশন কর্তৃক আয়োজিত প্রথম খাদ্য মেলা। তিনি বাংলাদেশের অতীতের উৎপাদন পদ্ধতি ও মানুষের জীবনাচরণের ওপর সংক্ষিপ্ত আলোকপাত করে বলেন, প্রাক-ঔপনিবেশিক কালের মাছে-ভাতে বাঙালি কালের পরিক্রমায় সাংস্কৃতিক মিথস্ক্রিয়ার মধ্য দিয়ে এক নিজস্ব কৃষি উৎপাদন পদ্ধতি ও খাদ্যাভ্যাস তৈরি করেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিচিত্র ফলমূল ও রান্না করা সুস্বাদু খাবারের প্রতি বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণ প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে। বাংলাদেশের মিষ্টি বিশেষ করে রসগোল্লার রয়েছে বিশ্বখ্যাতি। রেজিনা আহমেদ আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এ খাদ্য মেলার মাধ্যমে মরিশাসের জনগণ বাংলাদেশের খাদ্য সম্পর্কে পরিচিতি লাভ করবে এবং তাদের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হবে।

বিজয়ী বাংলাদেশ দলের হাতে ট্রফি তুলে দিচ্ছেন এহসান ইসমায়ী মামুদ ও রেজিনা আহমেদ
বিজয়ী বাংলাদেশ দলের হাতে ট্রফি তুলে দিচ্ছেন এহসান ইসমায়ী মামুদ ও রেজিনা আহমেদ

অনুষ্ঠানে আগত অতিথিরা বাংলাদেশ হাইকমিশন কর্তৃক প্রীতি ফুটবল ম্যাচ ও খাদ্য মেলার আয়োজন করায় হাইকমিশনারকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তারা বলেন, ক্রীড়া দুই দেশের মধ্যে দূরত্ব ঘোচায় ও সম্প্রীতি বাড়াতে সাহায্য করে। খাদ্য মেলায় বিভিন্ন স্টল ঘুরে বাংলাদেশের খাদ্য সম্পর্কে তারা নতুন ধারণা লাভ করেছেন। এ রকম উৎসবমুখর মেলা মরিশাসের জনগণের মধ্যে বাংলাদেশি খাবার সম্পর্কে আগ্রহী করে তোলার পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে এক সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন তৈরি করবে।

উল্লেখ্য, প্রীতি ফুটবল ম্যাচে প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিয়ে গঠিত বাংলাদেশ দল মরিশাসের স্থানীয় একটি ক্লাবকে ৫-০ গোলে হারিয়ে বিজয়ী হওয়ার গৌরব অর্জন করে। বিজ্ঞপ্তি

বিজয়ী বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়েরা
বিজয়ী বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়েরা