সাস্কাতুনের একাল সেকাল: প্রবাসীর ডায়েরি থেকে

সাস্কাতুন ফোকফেস্ট বোর্ড মেম্বারদের সঙ্গে লেখক
সাস্কাতুন ফোকফেস্ট বোর্ড মেম্বারদের সঙ্গে লেখক

জাপানের শিক্ষাজীবন শেষ। দেশে ফেরার প্রস্তুতি চলছে। এমন সময় কানাডায় অভিবাসনের অনুমতি পেয়ে যাই। এটা ২০০৫ সালের প্রথম দিকের কথা। মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহে দেশে ফেরার কিছুদিনের মধ্যে আমদের একটা পুরোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার সুযোগ এবং এর কিছুদিন পর আমেরিকা ও ফ্রান্সে উচ্চতর গবেষণার বেশ কিছু লোভনীয় অফারও সেই সঙ্গে চলে আসে। এ অবস্থায় কানাডায় আসব নাকি আসব না, এমনি এক দোদুল্যমান অবস্থায় আত্মীয় পরিজনদের পীড়াপীড়িতে ও অদূর ভবিষ্যতে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছায়, এই সব লোভনীয় অফার ত্যাগ করে সেপ্টেম্বরের (২০০৫) দ্বিতীয় সপ্তাহে সপরিবারে টরন্টো শহরে চলে আসি।

নতুন অভিবাসী হিসেবে নতুন দেশ ও নতুন পরিবেশে খাপ খাইয়ে নেওয়ার সংগ্রাম যখন কেবলমাত্র শুরু হবে, ঠিক ওই সময়ে বিধাতার অপার কৃপায় মাসখানেকের মধ্যে সাস্কাচেওয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজের সুযোগ পেয়ে যাই। সেই সঙ্গে শুভাকাঙ্ক্ষী অধ্যাপকের সহযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক হিসেবে (Souris Hall) থাকারও ব্যবস্থা হয়ে যায়। সেই সুবাদে ১৫ অক্টোবর রমজানের রোজা রেখে সাস্কাতুনের উদ্দেশে রওনা হই।

টরন্টো শহর থেকে সাস্কাতুন ডিফেনবেকার বিমানবন্দরে অবতরণ করে এর পারিপার্শ্বিক সার্বিক অবস্থা দেখে এই প্রদেশের আর্থসামাজিক অবস্থা সম্পর্কে একটা ধারণাও পাই। আমার সহকর্মী ড. Selvakumar (বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে বসবাসরত) বিমানবন্দরে আমাদের স্বাগত জানান এবং তাঁর গাড়িতে করে Souris Hall-এ নামিয়ে দেন।

যত দূর মনে পড়ে, সেই সময় দুই থেকে তিনজন বাংলাদেশি ছাত্র পরিবারসহ Souris Hall–এ বাস করতেন। খবর পেয়ে ড. হাছীবুল মজিদ (বর্তমানে সৌদি আরবের Tabuk বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক) দেখা করতে আসেন ও তাঁর বাসায় ইফতারের দাওয়াত দেন। সেই থেকে একাধারে ৫৯ মাস Souris Hall-এ বসবাসের সুযোগ পাই। এই সুদীর্ঘ ৫৯ মাসের Souris Hall জীবনের অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। এই Souris Hall–এ থাকার সময়ে ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে আমার কন্যা সুহার জন্ম হয়। তখন আমার ছেলে স্বচ্ছ ছিল ৭-৮ বছরের বালক। আজ সে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ২০ বছরের যুবক। একাধারে দীর্ঘ নয় বছরের কিছু বেশি সময় কাজ করার সুবাদে সাস্কাচেওয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত বাংলাদেশিসহ অন্য সহকর্মীদের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সময় সাস্কাচেওয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীরা আমাকে ভাই বলতেন। কিন্তু এখন আংকেল বলে সম্বোধন করেন, কারণ আমার ছেলে ওদের সহপাঠী।

ফোকফেস্টে অতিথিদের সঙ্গে লেখক
ফোকফেস্টে অতিথিদের সঙ্গে লেখক

সাস্কাচেওয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক ও অন্যরা মিলে সেই সময় ৫০-১০০ জনের এক ছোট্ট বাংলাদেশি কমিউনিটি ছিল এই শহরে। যেখানে সবাই সবাইকে চিনতাম ও আন্তরিকতার কোনো অভাব ছিল না। দাওয়াত-আড্ডা থেকে শুরু করে, Terri farm–এ গরু–ছাগল জবাই, Souris Hall পার্শ্ববর্তী McEown পার্কে ফুটবল খেলা, বার্ষিক বনভোজন সব মিলিয়ে এক কথায় বলতে গেলে দারুণ সময় কেটেছে। পুরোনোদের অনেকেই এখনো আছেন। আবার অনেকেই কর্মের সন্ধানে বা ব্যক্তিগত সুবিধার্থে অন্য জায়গায় চলে গেছেন।

তখন Real Canadian Superstore সন্ধ্যা ৫–৬টা নাগাদ বন্ধ হয়ে যেত। রাস্তা ঘাটে কোনো বাংলাদেশি লোকের দেখা মিলত না, যা আজকের বাস্তবতার সঙ্গে একেবারেই উল্টো। সেই সময় Kopland cresent mosque (আজকে যেটাকে ইস্ট মসজিদ বলা হয়, কারণ ওয়েস্ট মসজিদ তখনো তৈরি হয়নি) হালাল মাংস ক্রয়ের প্রধান জায়গা ছিল। কোনো বাংলাদেশি গ্রোসারি না থাকায় তেলাপিয়া ও হুয়াইট ফিশ ছিল আমার মতো মৎস্যপ্রেমীদের একমাত্র ভরসা। তাই তেলাপিয়া ও হুয়াইট ফিশ খেতে খেতে যখন হাঁপিয়ে উঠতাম, তখন রসনা পরিতৃপ্ত করবার নিমিত্তে কেউ ক্যালগেরি, ভ্যানকুভার বা টরন্টো গেলে বাংলাদেশি মাছ কিনে আনার সবিনয় অনুরোধ করতাম। এমনি এক পরিস্থিতিতে যত দূর মনে পড়ে ২০০৭ সালে ‘আমহেদ গ্রোসারি’ নামে একটি পাক-ভারতীয় গ্রোসারি চালু হয়। এটা চালু হওয়ার পর আমার মতো মৎস্যপ্রেমীদের মহাসমস্যার আপাতত অবসান ঘটে। এখানে বলে রাখা দরকার, আমাদের মুরুব্বিদের অনেকেই যারা ৩০–৪০ বছরেরও বেশি সময় থেকে এই শহরে বাস করেন তাদের অভিজ্ঞতা কতই না বৈচিত্র্যময়।

যেহেতু এই শহরে নতুন আর তা ছাড়া প্রথম শীতকাল শুরু হচ্ছে, তাই পত্রপত্রিকা ও টিভিতে আবহাওয়ার খবর দেখার আগ্রহ ছিল। হঠাৎ নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় স্টার ফনিক্স পত্রিকায় একটা আর্টিকেল দেখতে পেলাম। শিরোনাম হলো সাস্কাচেওয়ান গভর্নমেন্ট এই প্রদেশে বসবাসরত অভিবাসীদের ওভারসিতে অবস্থিত তাদের আত্মীয়স্বজনদের এই প্রদেশে আনার জন্য আইন পাস করেছে। যার নাম হলো SINP (Saskatchewan Immigration nominee program)। এই আইন পাসের পর ২০০৬–০৭ সাল থেকে অসংখ্য মানুষ অন্য প্রদেশ থেকে এই প্রদেশে আসা শুরু করেন। যত দূর জেনেছি এই খবর পুরো কানাডাসহ উত্তর আমেরিকার অনেক জায়গাতেও ছড়িয়ে পড়ে। এসআইএনপির সুবাদে অসংখ্য পরিবার এই প্রদেশে আসা শুরু করে।

এখানে বলে রাখা দরকার, এসআইএনপি ও ২০০৭ সালে সরকার পরিবর্তনকে এই প্রদেশের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নতির প্রভাবক বলে ধারণা করা হয়। এর পরবর্তী ইতিহাস অনেক বৈচিত্র্যময়। পরবর্তীতে যখন এসআইএনপির মাধ্যমে লোক আসা সংকোচন করা হয় তখন ২০১২ সালে আমরা বাংলাদেশিরাই সর্বপ্রথম এসআইএনপির সংকোচনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলাম। যা হোক, লোক মুখে শুনেছি এই বিশাল জনসংখ্যার আগমনের ফলে বর্তমানে তিন–চার হাজার বাংলাদেশি এই শহরে এবং প্রায় সাত–আট হাজার বাংলাদেশি এই প্রদেশে বাস করেন। এটা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অনেক আশাব্যাঞ্জক বলে আমি মনে করি। উল্লেখ্য, সাস্কাতুন তথা সাস্কাচেওয়ান প্রেইরি অঞ্চল শীতকাল অনেক প্রতিকূল। প্রায় ছয় মাস বরফে ঢাকা থাকে। তাপমাত্রা কখনো কখনো মাইনাস ৪০–৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যায়। কিন্তু মজার বিষয় হলো, এ রকম প্রতিকূল আবহাওয়া সত্ত্বেও সাস্কাতুনে যারা একবার আসেন তারা প্রায় সবাই এখানে থেকে যেতে চান।

এক সময় এখানে কোনো বাংলাদেশি গ্রোসারি ছিল না। এখন সেখানে বাংলাদেশি মালিকানাধীন অন্তত তিন–চারটি গ্রোসারি দোকান এই শহরে। এ ছাড়া, আরও অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে ও ক্রমশ তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। শুনেছি, নরসুন্দর থেকে শুরু করে চিকিৎসক, অধ্যাপক, প্রকৌশলী, কৃষিবিদ, বিমানের পাইলট, গবেষক, ব্যবসায়ী, হিসাবরক্ষক, রিয়েলটর, বিভিন্ন যানবাহনের চালক, প্রশিক্ষক ও মেরামতকারী, বাড়িঘর মেরামতকারী, বিউটিশিয়ান ও শ্রমজীবীসহ প্রায় সব পেশার লোকই রয়েছেন আমাদের কমিউনিটিতে। অনেকে হয়তো জেনে খুশি হবেন, সম্প্রতি আমাদের কমিউনিটিতে আরবি শিক্ষায় পারদর্শী এক মাওলানা সাহেবও এসেছেন। শুনেছি তিনি আমাদের ছেলেমেয়েদের কোরআন তিলাওয়াত শেখানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।

ইতিমধ্যে সাস্কাচেওয়ানে বসবাসরত বাংলাদেশিদের স্বার্থ রক্ষা, দেশীয় সংস্কৃতির বিস্তার, নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানো ও বৃহত্তর কানাডীয় সমাজে সম্পৃক্ততার জন্য ‘বিকাশ’ (BCAS) নামে একটি কমিউনিটি অ্যাসোসিয়েশনের জন্ম হয়েছে। এমনকি আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি পৌঁছে দেওয়ার জন্য বাংলা হেরিটেজ স্কুলের জন্ম হয়েছে। এখানে উল্লেখ্য, এই দুটি সংগঠনের গঠন প্রক্রিয়া নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের সুযোগ আমার হয়েছে। এই মহতী উদ্যোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। সেই সঙ্গে সম্প্রতি কিছু এলাকাভিত্তিক কিছু সংগঠনেরও জন্ম হয়েছে এবং তাদের কার্যক্রমও আমরা লক্ষ্য করছি, যা খুবই উৎসাহব্যঞ্জক।

যত দূর মনে পড়ে, অল্প কয়েকটি হিন্দু পরিবারের বসবাস ছিল এই শহরে। আর আজ তা বৃদ্ধি পেয়ে এত বড় হয়েছে যে সর্বজনীন পূজা পরিষদের উদ্যোগে বিভিন্ন পূজা পার্বণে আমরা সবাই নিমন্ত্রণ পাচ্ছি। ভূরিভোজের পাশাপাশি দেশীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও উপভোগ করছি। এই জন্য সাস্কাতুন সর্বজনীন পূজা পরিষদকে আমি ব্যক্তিগতভাবে সাধুবাদ জানাই। এক সময় যেখানে কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হতো না আজ সেখানে বিকাশের উদ্যোগে প্রায় সবগুলো জাতীয় অনুষ্ঠান উদ্‌যাপিত হচ্ছে। বিশেষ করে ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে সাস্কাতুনে বসবাসরত কানাডার আদিবাসীসহ অন্যান্য কমিউনিটির অংশগ্রহণ বিশেষভাবে লক্ষণীয়।

স্বেচ্ছাশ্রম কাজের সনদপত্র
স্বেচ্ছাশ্রম কাজের সনদপত্র

এ ছাড়া, কমিউনিটি রেডিওর ‘বাংলার গান ও কথা’ অনুষ্ঠান একটি সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশি সংস্কৃতিসহ আমাদের অন্যান্য খবরাখবর সাস্কাতুনবাসীরা জানতে পারছে। কমিউনিটি রেডিওর বাংলার গান ও কথার উদ্যোক্তা ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক মোবারকবাদ জানাচ্ছি। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশ থেকে আগত অনেক গুণী ও নামীদামি শিল্পীদের (যেমন আইয়ুব বাচ্চু, জেমস, এস আই টুটুল, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, আগুন প্রমুখ) পদচারণায় সাস্কাতুন বাংলাদেশ কমিউনিটি মুখরিত হয়েছে।

আর একটি খুশির খবর হলো, সম্প্রতি আমাদের কমিউনিটির কিছু সম্মানিত সদস্য public representative তথা এমএলএ হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। বিষয়টি খুবই আশাব্যঞ্জক। এটা বৃহত্তর কানাডীয় সমাজে আমাদের কমিউনিটির ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে তাদের সফলতা কামনা করছি।

আমাদের অনেকের হয়তো মনে আছে, ২০১০ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় এক বাংলাদেশি তরুণ প্রকৌশলী ও তাঁর স্ত্রী মারা যান। আমরা McEown পার্কে একসঙ্গে ফুটবল খেলেছি। অথচ সেই সুঠামদেহী এক সুদর্শন টগবগে যুবক অকালে চলে গেলেন। এটা সাস্কাতুন বাংলাদেশ কমিউনিটির ইতিহাসে একটি আবেগঘন মুহূর্ত হয়ে থাকবে। সৌভাগ্যক্রমে তার শিশু কন্যা ও বাবা বেঁচে যান। বাবা–মাহীন সেই শিশু তার আপজনের আদরে এখন হয়তো কৈশোরে পা দিয়েছে। তার সুন্দর জীবন ও সাফল্য কামনা করি।

আমাদের কমিউনিটির মুরুব্বিদের অনেকেরই অনেক বয়স হয়েছে এবং অনেকেই (যেমন ড. ওয়ালি খান, ড. দিলরুবা দেওয়ানসহ আরও অনেকেই) ইতিমধ্যে আমাদের ছেড়ে পরপারে চলে গেছেন। যারা গত হয়েছেন তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি। আর আমাদের বয়োজ্যেষ্ঠদের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।

আমাদের বাংলা হেরিটেজ স্কুলের সূচনালগ্নের ছাত্র সপ্নিল এক দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়েছিল। আমাদের সবার আকুল আবেদন আর প্রার্থনার পরও স্বপ্নিল গত ১৯ নভেম্বর আমাদের ছেড়ে চলে গেছে না ফেরার দেশে। কানাডার মতো দেশে থেকেও আমরা নিয়তির কাছে অসহায়। স্বপ্নিলের পরিবারকে এই শোক কাটিয়ে ওঠার শক্তি দাও প্রভু।

সময় দ্রুত চলে যায়। তাই এই দীর্ঘ ১৩ বছর মনে হয় যেন সেদিন এলাম। এই ১৩ বছরের প্রাপ্তি অপ্রাপ্তির হিসাব মেলাতে গিয়ে মনে হয়, নিজের ক্যারিয়ারের জন্য কানাডা আসাটা সঠিক সিদ্ধান্ত না হলেও পরিবার ও আত্মীয়স্বজনদের জন্য কিছু করতে পেরেছি ভেবে আত্মতৃপ্তি অনুভব করি। আর কানাডায় নতুন অভিবাসীরা যে জীবনসংগ্রামের সম্মুখীন হন, স্রষ্টার অপার কৃপায় আমার ততটা হয়নি। সেই দিক থেকে আমি অনেকটা ভাগ্যবান। যদিও নিজ কমিউনিটিতে অনেকটা উপেক্ষিত হয়েছি, কিন্তু বৃহত্তর সাস্কাতুন ও কানাডীয় সমাজের বিভিন্ন পর্যায়ে স্বেচ্ছাসেবকের কাজকে উপভোগ করেছি ও সমাদৃতও হয়েছি।

গত বছর কানাডার ১৫০তম বছর পূর্তি উপলক্ষে আমাদের এলাকার (সাস্কাতুন-গ্রাসলেন্ড) এমপি মহোদয় কিছু লোককে কমিউনিটি সার্ভিসের জন্য সম্মানিত করেছেন। তার মধ্যে তিনি এই অধমকেও বেছে নিয়েছেন। বিষয়টি একটু অতিরঞ্জিত হলেও শেয়ার করলাম। যদিও আমাদের নিজেদের মধ্যে মতপার্থক্য আছে ও থাকবে। আমি আশা করি, সাস্কাতুন বাংলাদেশি কমিউনিটি সব সময়ই এক ও অবিভক্ত। যদিও কর্মক্ষেত্রে সাস্কাতুনে তথা সাস্কাচেওয়ানে বসবাসরত বাংলাদেশিরা অনেকেই নিজ নিজ পেশায় অত্যন্ত সফল আবার আমরা অনেকেই ততটা সফলকাম নই। কিন্তু আমি আশা করি, আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এই সমাজে সফলভাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। সেই শুভ কামনা রইল।