ছিনতাই হওয়া ভালোবাসা

অলংকরণ: তুলি
অলংকরণ: তুলি

হিরণের এখন বিয়ে করতেও ভয় লাগে। যদিও সে এখন একত্রিশ বছরের যুবক। মাল্টিন্যাশনাল ওষুধ কোম্পানিতে ভালো বেতনের চাকরি করে। তা সত্ত্বেও বিয়ের পিঁড়িতে বসতে তার ভীতি। তার সমবয়সী বন্ধুরা সবাই দুই তিন সন্তানের জনক এখন। বাবা–মায়ের দুশ্চিন্তা, ছেলে আইবুড়ো হয়ে যাচ্ছে। অথচ বিয়ের কথা শুনলে মুখ ঘুরিয়ে নেয়।

জীবনে ঘটে যাওয়া তিন তিনটি ঘটনায় হিরণের ভয় হয়। ভীতি জাগে। সে ভাবে, বিয়ের পরেও শুধু ভালোবাসা নয়, যদি বউ ছিনতাই হয়ে যায়।

হিরণের বাবা–মা একে অপরকে খুবই ভালোবাসেন। তাঁদের দুজনের মধ্যে পুরোনো দিনের গভীর প্রেম আর ভালোবাসাবাসী। দুজনই উষ্ণ রোমান্স আর ভালোবাসার মধ্যে থাকেন সারাক্ষণ।

মা-বাবার সেই ভালোবাসার প্রতীক তাঁদের দেওয়া সপ্তম উপহার সর্বকনিষ্ঠ এই পুত্র হিরণ আনসারি। বাবার আর মায়ের জিন থেকে পাওয়া অজস্র ডোপামাইন, অক্সিটোসিন ও সেরোটোনিন ওর মস্তিষ্কে বাসা বাঁধে মায়ের গর্ভে থাকা অবস্থাতেই। তাই জন্মের পর থেকেই ডোপামাইন ও সেরোটোনিনের ক্রিয়া–বিক্রিয়ার ফলে তার দেহ–মন আন্দোলিত–উদ্বেলিত হয়।

সেই ছোট্টবেলা থেকেই হিরণ সহজ–সরল বন্ধুবৎসল, প্রেমসুলভ আচরণে অভ্যস্ত। বয়স যখন তিন কি চার, তখন থেকেই প্রেম–ভালোবাসার প্রতি অনুরাগী ছিল এবং সেই প্রেম ছিল বিপরীত লিঙ্গ–সম্পর্কিত। ছিল মেয়েঘটিত। সে সাধারণত ছেলেদের বন্ধু বানাত না। পড়শি কয়েকজন মেয়ে তার খেলার সাথি ছিল। তাদের সঙ্গে সব ধরনের মেয়েলি খেলায় অংশগ্রহণ করত। এই যেমন রান্নাবাটি খেলা, পুতুল খেলা, লুকোচুরি খেলা। মঞ্জুলি নামের মেয়েটি ছিল তার সবচেয়ে কাছের।

লুকোচুরি খেলা খেলতে গিয়ে আদর আদর খেলাও খেলত সে। সুন্দর ফ্রক পরা মুঞ্জুলি সব সময় ওর সঙ্গেই লুকোতে চাইত। ছোট কোনো পরিসরে যখন ওরা দুজন মিলে লুকাত, তখন মঞ্জুলি ওকে জড়িয়ে ধরত। আদর করত। হিরণও করত। ওর তুলতুলে গালে হাত দিত। চুমু দিত।

মঞ্জুলিদের বাড়ির গেটের কাছে শিউলি ফুলের বড় একটা গাছ ছিল। খুব ভোরে ঝরা ফুল কুড়ানোর ছলে ওদের গেটের কাছে গিয়ে মঞ্জু মঞ্জু বলে ডাকত। তারপর অনেক ফুল কুড়ানো হলে তা দিয়ে মালা গাঁথত। মঞ্জুলির গাঁথা মালা হিরণকে পরাত আর হিরণেরটা ওকে। হিরণের প্রথম ভালোবাসার মানুষ ছিল এই মঞ্জুলি। শিউলি ফুলের মালাবদল ছিল তারই সাক্ষ্য।

এর কিছুদিন পর ওরা দুজনেই ক্লাস ওয়ানে ভর্তি হলো। একই স্কুলে। ক্লাসে অনেক ছেলের মধ্যে আক্তার নামে একজন ছিল। সে শুধু বলে বেড়াত, আমার নাম আক্তার, বড় হয়ে আমি হব ডাক্তার। ধীরে ধীরে সে মঞ্জুলির দিকে ঘেঁষতে লাগল। মঞ্জুলিও কেমন যেন নীরব আর উদাস হতে থাকল। হিরণের সঙ্গে কথা বলা মেলামেশা করা কমিয়ে দিয়ে আক্তারের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তুলল। আক্তার নামের এই ছেলে হিরণের ছেলেবেলার প্রথম ভালোবাসাকে এভাবেই ছিনতাই করে নিয়ে নিল।

বেশ কয়েক বছর পর বাবার বদলিযোগ্য চাকরির সুবাদে হিরণরা বদলি হয়ে মফস্বলে গেল। সেখানে গিয়ে হিরণ ক্লাস সিক্সে ভর্তি হলো।

হিরণদের সরকারি কোয়ার্টারের অন্য পাশেই থাকত ফাহমিদারা। ফাহমিদার বাবাও সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন।

ফাহমিদা হিরণের স্কুলেরই গ্রেড ফোরের ছাত্রী ছিল। স্কুলে যাওয়া–আসা থেকে শুরু করে দিনে দিনে দুজনের ঘনিষ্ঠ আলাপ-পরিচয় থেকে সম্পর্কটা একদিন ভালোবাসায় রূপ নিল দুজনেরই অজান্তে।

হিরণ যখন ক্লাস এইটে উঠল, সে বছরেই মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলো। হিরণরা দূরের এক গ্রামে আশ্রয় নিল। বাঁচার তাগিদে ফাহমিদার আব্বা–আম্মা পরিবারের সবাইকে নিয়ে ওই একই গ্রামে গেলেন। হিরণ আর ফাহমিদা খুবই খুশি হলো একই গ্রামে এই দুই পরিবার আসার জন্য।

স্কুল নেই, পড়ালেখা নেই। সারা দিন গ্রামের মেঠো পথে টই টই করে ঘুরে বেড়ানো আর গ্রামবাংলার রূপ দেখা ছাড়া আর কোনো কাজই যেন ওদের থাকল না। পুকুরপাড়ে বসে গল্প করা। আখখেত, পাটখেত চষে বেড়িয়ে চুটিয়ে অবাধ্য প্রেম–ভালোবাসা চলতে লাগল।

ওদের ধারণা ছিল, দেশ কখনো স্বাধীন হবে না। তাই জীবনটা এভাবেই হেসেখেলে কেটে যাবে এই গ্রামে। কিন্তু ডিসেম্বরে মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধে বিজয়ী হলে তাদের আবারও ফিরে আসতে হলো সরকারি বাসভবনে। এসে দেখল ভবনের সবকিছু ভাঙাচোরা। জিনিসপত্র সব লুটপাট হয়ে গেছে।

গ্রামে হিরণের সঙ্গে অবাধ মেলামেশার বিষয়টা ফাহমিদার বড় ভাইয়ের চোখে পড়েছিল। নিজেদের বাসায় ফিরে এলে ফাহমিদার ওপর অবরোধ বসল বাইরে যাওয়া–আসার ওপর। এমনকি স্কুলে যাওয়ার সময়ও কড়া নজরদারি শুরু হলো বড় ভাইয়ের। মেলামেশা বন্ধ হলেও চুপিসারে মাঝেমধ্যে দেখা হতো দুজনের। চোখের ইশারায় কথা হতো। ছোট ছোট চিরকুট লেখালেখি করে যোগাযোগ রক্ষা হতো। এভাবেই নীরবে নীরবে ভালোবাসা চলল দুই বছর।

সামনে হিরণের এসএসসি পরীক্ষা এসে হাজির হলো। পরীক্ষায় হিরণ প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হলো। সেই সঙ্গে বাবারও বদলির আদেশ এল রংপুরে। হিরণ ভর্তি হলো রংপুরের সরকারি কারমাইকেল কলেজে। রংপুরে যাওয়ার আগে ফাহমিদার সঙ্গে শেষ কথা হলো হিরণের। কথা হলো লেখাপড়া শেষ হলে ওরা বিয়েশাদি করবে। সুখের নীড় গড়বে।

কিন্তু ওই যে কথায় আছে, আউট অব সাইট আউট অব মাইন্ড। বড় ভাইয়ের ভয়ে ও দূরে চলে যাওয়ার কারণে হিরণের সঙ্গে যোগাযোগ করতে কষ্ট হতে লাগল ফাহমিদার। ফাহমিদার মন থেকে তাই হিরণও ধীরে ধীরে মুছে যেতে লাগল।

হিরণের বাবা চলে যাওয়ার পর ওই পজিশনে এলেন জব্বার সাহেব। তাঁর সুদর্শন এক ছেলে নাম আকতার হোসেন। তার নজরে পড়ল ফাহমিদা। ছলে, বলে, কৌশলে ফাহমিদাকে পটিয়ে আকতার হোসেন সম্পর্ক গড়ে তুলল। ছিনিয়ে নিল ফাহমিদাকে। ছিনতাই হলো হিরণের কয়েক বছরের ভালোবাসা। ফাহমিদার ভাই জানতে পারল বোনের এই অপকর্মের কথা। রেগে বাবার অনুমতি সাপেক্ষে দেশের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে তড়িঘড়ি করে এক প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকের সঙ্গে ফাহমিদার বিয়ে দিয়ে দিল। অপরিণত বয়সে বিয়ে হয়ে ফাহমিদার সংসার শুরু হলো।

ওদিকে হিরণ ভেঙে পড়ল এই সংবাদ জেনে। পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারল না। এইচএসসি পরীক্ষায় খারাপ রেজাল্ট হলো। কোনো রকমে সেকেন্ড ডিভিশনে পাস করল। কিন্তু কোথাও কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভালো প্রোগ্রামে ভর্তি হতে পারল না। শেষমেশ কারমাইকেল কলেজেই বিএসসি (পাস) কোর্সে ভর্তি হলো।

আর কাউকেই ভালোবাসবে না বলে প্রতিজ্ঞা করল। পড়াশোনায় মন দিল। অনেক খাটল। ফলাফল পেল ভালো। বিএসসিতেও সেকেন্ড ক্লাস পেল।

এর মধ্যে ওর ইমিডিয়েট বড় বোনের বিয়ে হলো। সেই বিয়ের অনুষ্ঠানে দুলাভাইয়ের দূর সম্পর্কের এক আত্মীয়া নার্গিসের সঙ্গে আলাপ-পরিচয় হলো হিরণের। মেয়েটির আগ্রহ ছিল হিরণের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ার। একদিন চিরকুটও পাঠিয়েছিল।

কিন্তু না। ভালোবাসায় অনেক কষ্ট। ভালোবাসার ছিনতাইকারীদের ভয়েও হিরণ আর ও পথে পা দেবে না বলে দৃঢ় শপথ নিজে নিজেই নিল।

বিএসসি পাস করে কয়েক মাস বসে থেকে চাকরির চেষ্টা করতে লাগল। বাংলাদেশ অক্সিজেন লিমিটেডসহ বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানিগুলোর রিপ্রেজেনটেটিভ পদে চাকরির ইন্টারভিউ দিতে লাগল। অবশেষে পেল একটা ভালো ওষুধ কোম্পানির চাকরি। ফাইজারের বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে যোগদান করল। ছয় মাসের মধ্যে জেলা প্রতিনিধি হিসেবে প্রমোশন মিলল। বদলি হলো ফরিদপুর জেলায়।

ফরিদপুর শহরের নীলটুলি এলাকায় একটা বাড়ি ভাড়া নিল। সুন্দর বড় একটা বাড়ি অথচ একা একজন মানুষ সেখানে থাকেন। বাইরে পার্ক করা থাকে লাল রঙের হান্ড্রেড এইচএস হোন্ডা মোটরবাইক।

ছিমছাম করে সাজানো বাসা বাইরে থেকেই বোঝা যায়। পাড়ার মেয়েদের নজর কাড়ে।

হিরণ লক্ষ করে, প্রতিদিন একটা সুন্দরী মেয়ে তাঁর ভাড়া বাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়া–আসা করে। মেয়েটি প্রতিদিনই চলার পথে একটিবার হলেও বাড়িটার জানালার দিকে তাকায়।

হিরণ বুঝতে পারে না মেয়েটা স্কুলে যায়, নাকি কলেজ পড়ে। বয়স দেখে বোঝাও যায় না।

তবে গড়ন দেখে মনে মনে ভাবে, মেয়েটি স্কুলের ছাত্রী নয়।

একদিন যাওয়ার পথে মেয়েটিকে জিজ্ঞাসা করে হিরণ—এই মেয়ে, তোমাকে এত ব্যস্ত ভীতসন্ত্রস্ত দেখাচ্ছে কেন?

মেয়েটি শুকনো গলায় বলে, আজ আমার এইচএসসি ফিজিকস পরীক্ষা। দেরি হয়ে গেছে। রিকশা পাচ্ছি না। ভয় পাচ্ছি তাই। সময় মতো পৌঁছাতে পারব কি না।

হিরণ সাহস দেয়। অফার করে তাকে মোটরবাইকে করে পৌঁছে দেবে কি না। মেয়েটি সম্মত হয়। হিরণের পেছনে বসে মেয়েটা। বাইক শাঁই শাঁই করে চলতে শুরু করে।

পথে কথা হয়। নাম জিজ্ঞাসা করলে বলে তানিয়া। সবাই তানু বলেই চেনে ও জানে তাকে।

হিরণ অভয় দেয়, ভয়ের কিছু নেই। ঠান্ডা মাথায় ধীরে ধীরে লেখা শুরু করবে। নিউটনের থার্ড ল পড়েছ তো, জিজ্ঞাসা করে।

পরীক্ষা শেষ হলে তানু হিরণের ঘরের জানালার পাশে এসে দাঁড়ায়। বলে, পরীক্ষা খুব ভালো হয়েছে। জিজ্ঞাসা করে, আপনি জানেন কেমন করে যে নিউটনের তৃতীয় সূত্র আসবে।

রাইড দেওয়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ জানিয়ে তানু বিদায় হয়।

হিরণের ভালো লাগে তানুকে। এই ভালো লাগা থেকে আবারও ভালোবাসা।

হিরণের মস্তিষ্কে আরও একবার ভালোবাসার স্ফুরণ ঘটে। ডোপামাইন, অক্সিটোসিন ও সেরোটোনিনের অণু–পরমাণুর ক্ষিপ্ত বিচ্ছুরণ হয়, যা পিটুইটারি গ্রন্থি দিয়ে ছড়িয়ে পড়ে সারা দেহ–মনে। অন্তরের অন্তঃস্থলে। হৃদয়ে। কে বলে ভালোবাসার জন্ম হয় হৃদয়ে? ভালোবাসার জন্ম দেয় মস্তিষ্কের ডোপামাইন আর তা হৃৎপিণ্ডে এসে অনুভূত হয়। অনুপ্রাণিত হয়। হৃদয় উতলা হয়। হার্টবিট বেড়ে যায়। দেহে রক্ত সঞ্চালিত হয় বহুগুণে। হিরণও নিজের হৃদয়ের লাভ ডাব লাভ ডাব শুনতে পায় পুনর্বার। খুব জোরে জোরে।

এই ভালোবাসার খাতিরে নীলটুলি লোকালয়ের সব লোকচক্ষুর অন্তরালে হিরণ আর তানুর দুটি মন একাকার হয়ে যায়। দুজনে মোটরবাইকে করে ঘুরে বেড়ায় সময়–সুযোগ পেলেই।

চলে যায় নদীর ঘাট পর্যন্ত। পড়ন্ত বিকেল কাটায় সেখানে। সূর্যাস্ত দেখে।

হিরণের কাজের পারফরম্যান্স অনেক ভালো হওয়ায় কোম্পানি থেকে নতুন আদেশ আসে বিভাগীয় ম্যানেজার পদের। বদলি হয় খুলনা বিভাগে। বেতন বাড়ে অনেক।

খুলনা যাওয়ার আগে তানুকে বলে যায় খুলনা গিয়ে কাজে যোগদান করেই তার বাবা–মাকে বলে তানুর পরিবারের কাছে বিয়ের প্রস্তাব পাঠাবে। জাস্ট সময়ের ব্যাপার মাত্র। অপেক্ষা আর ধৈর্য ধরতে অনুরোধ করে তানুকে।

খুলনা গিয়ে সুবিধামতো অফিস কাম বাসা ঠিক করতে করতে হিরণের সময় লেগে যায়। অবশেষে শহরের সাউথ সেন্ট্রাল রোডে একটা বিশাল পরিসরের বাড়ি ঠিক হয়।

ইন্টারমিডিয়েটের রেজাল্ট বের হওয়ার পর তানুর বাবা মেয়ের বিয়ের জন্য ব্যস্ত হয়ে ওঠেন। তারই এক বন্ধুর ছেলে ঢাকায় অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত প্রবেশনারি অফিসারের সঙ্গে বিয়ে ঠিক করে ফেলেন। ছেলের নাম আক্তারুজ্জামান।

তানু মাকে হিরণের কথা সাহস করে বলে। জানায় তাঁদের গভীর ভালোবাসার কথা। ছেলেটা ওষুধ কোম্পানিতে ভালো চাকরি করে, সে কথাও বলে।

কিন্তু মা নিরুপায় হয়ে বলেন, তোর আব্বাকে তো জানিস। তিনি তো কারও কথাই শোনেন না। আর এ ছেলে তো সরকারি ব্যাংকে চাকরি করে। কোম্পানির চাকরি আজ আছে তো কাল নেই। তোর বাবা কি তা শুনবেন?

তানু নীরবে অনেক কাঁদে। মনে মনে প্রচণ্ড কষ্ট পায়। এ খবর হিরণকে জানাতেও পারে না।

হিরণের বাবা-মা বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে তানুদের ওখানে যাওয়ার প্রাক্কালেই তানুর বিয়ের খবর হিরণ জানতে পারে। দুঃখ পেলেও খুব একটা কষ্ট প্রকাশ করে না।

কিন্তু সে অবাক হয় এই জেনে যে তানুর ভাবি স্বামীর নাম আক্তারুজ্জামান।

শুনে হতবাক হয়। ধিক্কার দিতে লাগে নিজেকে। ভাবতে থাকে। কাকতালীয় হলেও এটাই সত্য, এই আক্তার নামের মানুষেরাই তাঁর জীবনের সব ভালোবাসা এক এক করে ছিনতাই করল।

এই নামের মানুষগুলোর প্রতি কেমন যেন একটা ঘৃণাবোধ হতে লাগল হিরণের।
...

রানা টাইগেরিনা: টরন্টো, কানাডা। ই–মেইল: <[email protected]>