ইস্তাম্বুলে বাংলাদেশের নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে আলোচনা

ইস্তাম্বুলে বাংলাদেশের নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে আলোচনা সভা
ইস্তাম্বুলে বাংলাদেশের নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে আলোচনা সভা

বাংলাদেশের নারীর ক্ষমতায়নের প্রেক্ষাপট ও বর্তমান অবস্থা নিয়ে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় ইস্তাম্বুলের বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল ড. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বাংলাদেশের নারীর ক্ষমতায়নের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। গতকাল বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় বিকেলে গেদিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এ সভা আয়োজন করা হয়। গেদিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ ইস্তাম্বুলের সুশীল সমাজ ও এনজিও কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।

বক্তব্য দিচ্ছেন মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম
বক্তব্য দিচ্ছেন মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম

বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে আজ অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নতির ক্ষেত্রে যে বিপ্লব ঘটেছে তার পেছনে রয়েছে নারীদের বলিষ্ঠ ভূমিকা ও সক্রিয় অংশগ্রহণ। বাংলাদেশে নারীর বর্তমান অবস্থা অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন বেশি উজ্জ্বল। নারীরা এখন তাঁদের মায়েদের চেয়ে অধিকতর শিক্ষিত ও অর্থনৈতিকভাবে সক্ষম। পোশাকশিল্পের পাশাপাশি বিপুলসংখ্যক নারী নিয়োজিত রয়েছেন অনানুষ্ঠানিক অর্থনৈতিক খাতে। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত আসনসহ নির্বাচিত আসন মিলিয়ে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী সংসদ সদস্য রয়েছেন। বাংলাদেশের নারীরা এখন জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনের মাধ্যমে বিশ্ব শান্তি রক্ষায় অবদান রেখে চলেছেন। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশের ওপর। নিম্ন আয়ের দেশ থেকে মধ্য আয়ের দেশে রূপান্তরের পথে অন্যতম প্রধান চালিকা শক্তি হচ্ছে সর্বক্ষেত্রে স্বতঃস্ফূর্তভাবে নারীর অংশগ্রহণ। নারীকে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মূল ধারায় সম্পৃক্ত করার ফলে বাংলাদেশ আজ এ সুফল ভোগ করছে।

সভায় অংশগ্রহণকারীদের একাংশ
সভায় অংশগ্রহণকারীদের একাংশ

নারীর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে কনসাল জেনারেল সরকারের গৃহীত বিভিন্ন নীতি ও কার্যক্রমের কথা বিশদভাবে বর্ণনা করেন। ১২ গ্রেড পর্যন্ত মেয়েদের বিনা বেতনে পাঠদান, শিক্ষা উপবৃত্তিসহ বিভিন্ন স্কিমের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এসব উদ্যোগ জ্ঞাননির্ভর সমাজ গঠনে কার্যকর ভূমিকা রাখছে। স্বাস্থ্যক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ শিশু-ও মাতৃমৃত্যুর হার কমাতে সক্ষম হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, নারীর জন্য সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী আরও বিস্তৃত করেছে সরকার। বিধবা, বয়স্ক ও দুস্থ নারীদের জন্য ভাতার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাংলাদেশ মানব পাচার, গৃহ নির্যাতনসহ নারীর বিরুদ্ধে অন্যান্য নির্যাতন ও নিপীড়ন রোধে রয়েছে উপযুক্ত প্রশাসনিক ও আইনানুগ ব্যবস্থা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মোহাম্মদ মনিরুল ইসলামকে স্মারক উপহার দেওয়া হয়
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মোহাম্মদ মনিরুল ইসলামকে স্মারক উপহার দেওয়া হয়

মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ নারীর ক্ষমতায়নে আন্তর্জাতিক মহলে এখন এক অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত। দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের নারীর ক্ষমতায়নের তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, লিঙ্গ সমতার ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ প্রথম স্থানে রয়েছে।

বাংলাদেশের নারীর ব্যাপক অগ্রগতি ও সাফল্যের গল্প জানতে পেরে তুর্কি নাগরিকেরা উচ্ছ্বসিত প্রশংসা এবং ভবিষ্যতে এ বিষয়ে আরও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বিজ্ঞপ্তি