সোনালি ডানায় ওড়ে ভালোবাসা

অলংকরণ: মাসুক হেলাল
অলংকরণ: মাসুক হেলাল

আমার পাশের খালি বালিশটার দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস বের হয়ে এল। আমার পায়ের পাতা কেমন ঠান্ডা ঠান্ডা লাগছে। আমি সাধারণত আমার পায়ের পাতা দিয়ে রিয়াজের পা স্পর্শ করে ঘুমাই। অদ্ভুত অভ্যাস। আমি কম্বলটা টেনে শুয়ে বাতি নিভিয়ে দিলাম। পঁচিশ বছর ধরে আমরা একসঙ্গে আছি। অনেক দীর্ঘ সময়। আজ রিয়াজ বিছানায় পাশে ঘুমিয়ে নেই দেখে ঘুম আসছে না। কেমন এক অদ্ভুত মন খারাপ করা অনুভূতি হচ্ছে। অস্বস্তিকর এক অনুভূতি।

আমি ভালোবেসে বিয়ে করেছিলাম নাকি আমার শৈশব আর কৈশোরের ওপর বিরক্ত হয়ে বিয়ে করেছিলাম বলা শক্ত। আমি বাবা–মায়ের একমাত্র সন্তান হওয়ায় আমার মায়ের অখণ্ড মনোযোগ ছিল আমার ওপর। আমার জন্মের আগে আমার মায়ের তিনবার গর্ভপাত হয়। আমি আর আমার যমজ বোন জন্মাই আট মাসে। ধিকি ধিকি জান নিয়ে আমি বেঁচে যাই। কিন্তু বোনটা বাঁচেনি। মা আমাকে জন্মের পর থেকে পুরো শৈশব, কৈশোর এত আগলে রাখতেন যে মাঝেমধ্যে আমার দম বন্ধ লাগত। স্কুল, টিচারের বাসা, গানের স্কুল সব জায়গায় মা সঙ্গে করে নিয়ে যেতেন। শীত গ্রীষ্ম বর্ষা আমি গরম পানি দিয়ে গোসল করতাম। একটু হাঁচি দিলে মা দৌড়ে আসতেন। একবার কলেজ থেকে আমাদের পিকনিকে নিয়ে যাওয়া হলো। মা কলেজের পিকনিক বাসের পেছন পেছন স্কুটার নিয়ে জয়দেবপুর পর্যন্ত গেলেন। আমার বান্ধবীরা সব মুখে টিপে হাসছে। আমার এত বিরক্ত লাগছিল।

পিকনিক স্পটে সেই সময় এক লোক খেজুরের রস বিক্রি করতে এল। এক বান্ধবী আমার কানে ফিসফিস করে বলল, সোনালি, জানিস এখন তো দুপুর হয়ে গেছে। এই রস খেলে না নেশা হবে।

আমি দেখলাম মা দূরে এক বেঞ্চে বসে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। আমি এক গ্লাস খেজুরের রস ঢকঢক করে খেয়ে ফেললাম। সেদিন বাসে ঘুমাতে ঘুমাতে বাসায় ফিরলাম। তখন একটু একটু তসলিমা নাসরিন পড়ি। সমাজ, ধর্ম, পুরুষ, পরিবার—সবার ওপর একটু ক্ষিপ্ত আর একটু স্বাধীনতা পাওয়ার আশায় ব্যাকুল। সবকিছুতেই আমার ইচ্ছা হতো উল্টো পথে হাঁটি।

আমার ছাদে যেতে খুব ভালো লাগত। আকাশের তারাগুলো আমাকে হাত ইশারায় ডাকত। সন্ধ্যায় পাখিরা যখন মুক্ত বিহঙ্গের মতো ওড়ে, আমারও ওদের মতো উড়ে দূরে কোথাও চলে যেতে ইচ্ছা হতো। আমি পাটি পেতে শুয়ে শুয়ে তারা দেখতাম। কী বিশাল এক বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের জানালা এই আকাশ। দূরে বহু দূরে কত নক্ষত্র ঝিকমিক করে। ওখানে কোথাও হয়তো আমার বোনটাও আছে। মা সিঁড়ি দিয়ে উঠে এসে একটু পর পর তাড়া দিতেন।

: এই সোনালি, নিচে যা ঠান্ডা লাগবে, অসুখ করবে। এত বড় চুলগুলো খোলা, ঠিক ভূতে ধরবে।

ভূত মনে হয় আসলেই ধরেছিল। কৈশোর ছাড়িয়ে যৌবনের ভূত। একদিন পাশের ছাদে রিয়াজ আমাকে দেখে কথা শুরু করল। রিয়াজদের বাসাটা বেশ বনেদি গোছের ছিল। অনেক পুরোনো গাছপালায় ঘেরা। বাগানে একটা ফোয়ারা মতন ছিল। আমরা বান্ধবীরা স্কুল থেকে হেঁটে আসার পথে ওই বাসার বাগানে ঢুকে পড়তাম। একটা শিউলিগাছ ছিল। শরৎকালে আমরা ফুল কুড়াতাম। একটা আমগাছ ছিল ওটাতেও আমরা বাইরে থেকে ঢিল ছুড়তাম। ওই বাড়ির ছেলেদের বড় গাড়িতে চড়ে স্কুলে যেতে দেখতাম। আমার বেশ কৌতূহল হতো এদের নিয়ে। আমিও এগিয়ে গিয়ে শ্যামলা সুদর্শন রিয়াজের সঙ্গে কথা শুরু করলাম। সে জিজ্ঞেস করল, কালকে গানটা তুমি শুনছিলে?

ঢাকা শহরে বাড়িগুলো এত কাছাকাছি, এক বাসায় গান বাজলে পাশের বাসায় দিব্যি শোনা যায়।

: কোন গানটা?

: ওই যে জন ডেনভারের, ‘ইউ ফিল আপ মাই সেন্সেস লাইক এ নাইট ইন এ ফরেস্ট’।

: হুম।

: ওই গানটা শুনেছ?

: কোনটা?

এভাবেই কথায় কথায় বেশ একটা ভাব জমল। সে দেখি বিভিন্ন ইংরেজি গানের লিরিক জানে। বন্ধুত্ব হয়ে গেল দুজন সমবয়সী বলে। বন্ধুর থেকে বেশি তাকে কিছু ভাবার উপায় ছিল না। সে বনেদি ঘরের নাতি, যার ধ্যান সংগীত। পড়ালেখায় তার মন নেই আর আমরা মধ্যবিত্ত, আমাদের ধ্যানজ্ঞান লেখাপড়া।

একদিন মা দেখে ফেললেন। নিচে নামার পর বললেন, ছাদে দাঁড়িয়ে অন্য ছাদে কথা বলো, দেখতে কেমন লাগে? বড় হচ্ছো আর বেয়াড়া, বেয়াদব হচ্ছো।

আমি গায়েও মাখলাম না। এইচএসসির রেজাল্ট দিল। আমি মেধাতালিকায় জায়গা পেলাম আর রিয়াজ সেকেন্ড ডিভিশন পেল। আমাকে নিয়ে ব্যাপক হইচই। সাংবাদিকেরা বললেন, কী হতে চাও বড় হয়ে? আমি বললাম, আমি লেখক হব। শুনে আমার মা-বাবা আঁতকে উঠলেন।

এরপর আরেক দিন রিয়াজকে ছাদে দেখলাম। সে বেশ হতাশাগ্রস্ত ছিল। বলল, এই শহর থেকে নাকি সে পালিয়ে যাবে।

: কোথায় যাবা?

: টাকা জোগাড় করেছি। কলকাতা চলে যাব। বাড়ির লোকজন এমন ব্যবহার করছে, বাকি দুই ভাই স্টার পেয়েছে আর আমার এই অবস্থা।

বুঝলাম আমাদের দুজনের সমস্যা দুই রকম। একজন অতি আদরে অতিষ্ঠ আর আরেকজন অবহেলায় ব্যথিত। আমি বন্ধুর মতো পরামর্শ দিই, এবার রেজাল্ট খারাপ হয়েছে তাতে কী? এখন থেকে ভালো করে লেখাপড়া করো। পরেরবার ভালো হবে।

: লেখাপড়া করে মিডিওকার লোকজন। সত্যিকারের জিনিয়াস লোকজন স্কুলে যায় না।

: তাই নাকি?

: হ্যাঁ, আমি মিউজিক কম্পোজ করব, আমার লেখাপড়ার দরকার কী? এই বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার আগে তোমাকে একদিন খাওয়াব। তুমি কত ভালো রেজাল্ট করেছ, একটা ট্রিট তোমার প্রাপ্য।

আমি রাজি হয়ে গেলাম। তারপর বেশ উৎকণ্ঠা নিয়ে ওই দিন পরিকল্পনামতো বান্ধবীর বাসা থেকে আমি চলে গেলাম। একজন বন্ধুর সঙ্গে খেতে যেতে পারব না? আমার বয়স আঠারো, আমি তো পূর্ণবয়স্ক। ফিরে আসার সময় দেখি আমার বান্ধবীর বাসার সামনে মা দাঁড়িয়ে আছেন। দেখেই আমার আত্মা শুকিয়ে গেল। সেদিন জীবনের প্রথম মার খেলাম। বেশ জোরে একটা চপেটাঘাত। ফল হলো উল্টো। আমি প্রতিজ্ঞা করলাম, আমি এই ছেলের সঙ্গে বন্ধুত্ব রাখব। কিছুদিন সে সত্যি উধাও হয়ে গেল। শুধু আমি জানতাম সে কোথায়। আমার বান্ধবীর বাসার ঠিকানায় সে আমাকে চিঠি পাঠাত। সেসব চিঠি ছিল বিশাল বিনোদন, যা পড়লে বোঝা যেত সে বুদ্ধিমান কিন্তু লেখাপড়া করে না একরকম গোঁয়ার্তুমি থেকে। সেই সময় দুজনের বন্ধুত্ব পোক্ত হলো। ইউনিভার্সিটিতে যখন সে আসত আমার ভারী ব্যাগ নিজেই বহন করত। মাঝেমধ্যে তার কথায় আমার প্রতি দুর্বলতা প্রকাশ পেত কিন্তু আমি কিছুই বলতাম না। আমার খারাপ লাগত না শুনতে, ভালোই লাগত।

ইউনিভার্সিটির শেষ বর্ষে মা-বাবা ভালো ভালো বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আমার কাছে আসতেন। আমার অচেনা মানুষদের ভয় লাগত। আমি রিয়াজকে ছেলেদের ছবিগুলো দেখাতাম। সে খুব হাসত আর বলত, তোমার বাবা-মা কোত্থেকে যেন দুনিয়ার বোকা বোকা দেখতে লোকজন নিয়ে আসছে। একজনকে দেখে বলল, এ তো তোমার হিউমার বুঝবে না। আরেকজনকে দেখে বলল, একে দেখলেই বোঝা যায় এ নাকি স্বরে কথা বলে। এসব রহিম–করিমের সঙ্গে তোমাকে মানাচ্ছে না।

একদিন এসে বলল, কাল রাতে ঠিক করেছিলাম, আজ সকালে যেই মেয়েকে প্রথম নীল জামা পরা দেখব, তাকে পরের সোমবার বিয়ে করব।

: আচ্ছা, ওই মেয়ে কেন করবে?

: করবে কারণ শ্যামলা মেয়েদের মন নরম হয় আর আমি বলব, আমি যখন গানের সুর দিতে চোখ বন্ধ করি, তখন তোমার মুখ দেখতে পাই।

বলাই বাহুল্য যে আমি সেদিন নীল জামা পরা ছিলাম। খুব বেশি পরিকল্পনা ছাড়াই আমি আর রিয়াজ পরের সোমবার হঠাৎ বিয়ে করে ফেললাম।

এখন পেছন ফিরে যখন তাকাই, তখন মনে হয় আমি মায়ের আদরে মানসিকভাবে পরনির্ভরশীল ছিলাম। মায়ের কাছ থেকে বিদ্রোহ করলেও আমি মানসিক আশ্রয় খুঁজতাম। সেই মানসিক আশ্রয় সে আমাকে দিতে পেরেছিল।

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

দুই.

দুজন একই রকম পাগলাটে, অপরিণত মানুষের নতুন সংসার শুরু হলো। কিন্তু পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়ে বিয়ে করা যে খুব সুখের বিষয় নয় তা হাড়ে হাড়ে টের পেলাম অল্প দিনেই। প্রাচীর দেওয়া অভিজাত বাড়িতে আমাদের ঠাঁই হয়নি। আমার বাবা-মাও বহু বছর আমার সঙ্গে সম্পর্ক রাখেননি। আমরা আমাদের মতো করে সংসার শুরু করলাম। সংগীতসাধনায় ইস্তফা দিয়ে সে টুকটাক ব্যবসা শুরু করল আর আমি শুরু করলাম চাকরি। প্রথম দিকে সেসব ব্যবসার লালবাতি জ্বলতে সময় লাগেনি। আমরা দুজনই কিছু হারিয়েছিলাম, আমি হারিয়েছিলাম বাবা-মার স্নেহ আর সে হারিয়েছিল সংগীত।

বিয়ের দশ বছর পরেও আত্মীয়স্বজনেরা খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে কথা শোনাতে ছাড়ত না।

: মা, এখন কী করে জামাই?

: এই তো ব্যবসা।

: কোথায় যেন অফিস?

: গুলশান।

: আগে তো বলেছিলে মতিঝিল।

: ওহ হ্যাঁ, আগে মতিঝিল ছিল।

: কীসের যেন ব্যবসা?

: এক্সপোর্ট আর ইমপোর্ট।

যদিও তার রোজগার কিছুই ছিল না, কিন্তু আমাদের জীবনে তা প্রভাবে ফেলেনি। আমি তাকে কাল্পনিক মতিঝিল অফিসে পাঠাতাম। নিজেই শাড়ি কিনে বন্ধুদের বলতাম ও কিনে দিয়েছে। তবে তার উত্তরাধিকার সূত্রে কিছু সম্পত্তি ছিল, সেগুলো ধীরে ধীরে বিক্রি করে ব্যবসার চেষ্টা করেছে। একদিন আমাকে অবাক করে দিয়ে তার সমস্ত সম্পত্তি আমার নামে করিয়ে দলিল নিয়ে এল। আমার হতবাক মুখের দিকে তাকিয়ে বলল, আমার মতো উড়নচণ্ডীর হাতে কিছু নিরাপদ নয়, একসময় কিছুই থাকবে না।

নিরবচ্ছিন্ন সুখের কোনো সম্পর্ক নেই। আমাদেরও টুকটাক মনোমালিন্য হতো। সে সিগারেট খেলে রাগ হতাম। সবচেয়ে বিরক্ত হতাম তার আর্থিক নির্বুদ্ধিতায়। সামান্য রোজগার বাড়লেই সে উল্টোপাল্টা খরচ করত। বনেদি রক্তের নানা হ্যাপা। কিন্তু সেগুলো তেমন বড় কোনো কারণ নয়। আজকাল মানুষের জীবনে সম্পর্কের যত জটিলতা, ভাঙন শুনি, সেসব কিছু আমাদের হয়নি। সারা দিন শেষে আমি যেন এক বটবৃক্ষের কাছে ফিরে আসতাম। সারা দিনে আমার জমে থাকা সব কথা তার কোলে মাথা দিয়ে আমার তাকে বলতেই হতো।

একদিন সে মজা করে বলল, তোমার নাম সোনালি না হয়ে স্বর্ণলতা হলে ভালো হতো। তুমি যেভাবে ঘুমাও, মনে হয় আমি হচ্ছি গাছ আর তুমি হচ্ছ প্যাঁচানো স্বর্ণলতা।

আমি ভ্রু কুঁচকে বললাম, এটা কেমন কথা?

স্বর্ণলতা সুবিধার গাছ না। পরগাছা, তার ওপর আবার যেই গাছের ওপর জন্মে, তা মরে যায়। আচ্ছা আমার বোনটা কী এ জন্য মরে গেল?

বাবা-মাকে কষ্ট দিয়ে আমি ভীষণ অপরাধবোধে ভুগতাম। তাদের দেখার জন্য মন ছটফট করত। যেই মমতা–স্নেহের বিরুদ্ধে ছিল এত ক্ষোভ, তা হারিয়ে বুঝলাম কত দামি ছিল সেই ভালোবাসা। বহু বছর পর আমার ছেলেকে কোলে নিয়ে বাবার বাসার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। দেখলাম বাবা মসজিদ থেকে হেঁটে আসছেন। কত বুড়ো হয়ে গেছেন। সন্তান সামনে এসে দাঁড়ালে কে আর তাকে ফেরাতে পারে? আমাকে দেখে ‘মারে তুই কোথায় ছিলি?’ বলে জড়িয়ে ধরলেন।

একদিন রিয়াজ বলল, তুমি যে বলেছিলে তুমি লেখক হবে, কিন্তু কিছু লিখতে দেখলাম না।

: আমি মনে মনে সব সময় গল্প লিখি। আমার সবাইকে খুব বলতে ইচ্ছা হয়, পৃথিবীতে ভালোবাসা আছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য যে আমার গল্পটা শেষ হয় না।

: কেন?

আমি হাসতে হাসতে বলেছিলাম, আমি স্বর্ণলতা তো, নিজে নিজে সব পারি না। শেষটা মনে হয় তোমাকে লিখতে হবে।

কলিং বেল বাজছে। আমি জানি কে এসেছে। চার দিন আগে গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিল রিয়াজ। শেষ ট্রেনে চড়ে সে চলে এসেছে। আমি দরজাটা খুলতেই বলল, ঘুমাওনি?

: না।

: হুম। আমি জানতাম তোমার ঘুম হবে না। টিভি দেখবে?

: না তুমি দেখ।

রিয়াজ টিভি দেখছে আর আমি আমার পা দিয়ে তার পা স্পর্শ করে ঘুমিয়ে গেলাম। আহা কি গভীর ঘুম, যেন সোনালি ডানায় উড়ে গেলাম ভালোবাসার কাছে।

তিন.

ব্যাপারটা খবরের কাগজে এল। মাত্র চার দিনের ব্যবধানে স্বামী আর স্ত্রী মারা গেলেন। স্ত্রী ঘুমের মধ্যেই মারা গেছেন। ছেলের মুখ থেকে শোনা গিয়েছে মাত্র চার দিন আগে তার বাবা মারা গেলেও তার মা একধরনের ডিনায়েলে ছিলেন। কিছুতেই বিশ্বাস করছিলেন না। নিজের নিকটজন মারা গেলে মানুষ এটা করতে পারে আর এটা একধরনের আত্মরক্ষা। সহ্যের চেয়ে বেশি কষ্ট মানুষ নিতে পারে না। পরদিন সকাল থেকেই ছেলেকে নাকি বলছিলেন, তোর বাবা গ্রামের বাড়ি থেকে ট্রেনে করে ফিরে আসবে। সেদিন রাতে মায়ের ঘরে টিভি চালানোর শব্দ শুনে ছেলে অবাক হয়ে মাকে দেখতে যায় আর মাকে বিছানায় মৃত পায়। মুখটা পাশের বালিশের দিকে ঘোরানো ছিল।
...

ইশরাত মাহেরীন জয়া: ডালাস, টেক্সাস, যুক্তরাষ্ট্র।