নেদারল্যান্ডসে বড় আকারে একুশের অনুষ্ঠান

অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা
অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা

বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য বিস্তারে এবং শান্তি ও বহু ভাষাতত্ত্বের সংস্কৃতি ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে নেদারল্যান্ডসে বড় আকারে পালন করা হয়েছে অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ দূতাবাস আরও সাতটি দেশের দূতাবাসকে সঙ্গে নিয়ে গতকাল (২৩ ফেব্রুয়ারি) শনিবার এই অনুষ্ঠান আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা
অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা

এতে দেশটিতে নিযুক্ত রাশিয়ান ফেডারেশন, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া, ক্রোয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, রোমানিয়ার রাষ্ট্রদূত, বিভিন্ন দূতাবাসের কূটনৈতিক প্রতিনিধি, দ্য হেগের সাবেক ডেপুটি মেয়র, প্রবাসী বাংলাদেশি, শিক্ষার্থী, ডাচ নাগরিক, গণমাধ্যমকর্মী ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিসহ তিন শ অতিথি অংশ নেন।

অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা
অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা

অনুষ্ঠানের শুরুতেই ১৯৫২ সালের ভাষাশহীদদের স্মৃতির উদ্দেশে এবং ঢাকার সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত শেখ মুহম্মদ বেলাল তাঁর স্বাগত বক্তব্যে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের গুরুত্ব তুলে ধরেন। দ্য হেগের জাউদার পার্কে শহীদ মিনার উদ্বোধনের বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, দ্য হেগে স্থায়ীভাবে নির্মিত এই শহীদ মিনার আমাদের মা, মাতৃভূমি ও মাতৃভাষার প্রতি ভালোবাসার নিদর্শন বহন করবে। এ শহীদ মিনার নির্মাণে সার্বিক সহায়তার জন্য বাংলাদেশ সরকার ও দ্য হেগ মিউনিসিপ্যাল কর্তৃপক্ষের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা
অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা

আয়োজনে রাষ্ট্রদূতদের জন্য নির্ধারিত অংশে রাশিয়ান ফেডারেশন, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া, ক্রোয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, রোমানিয়ার রাষ্ট্রদূত, অন্য কূটনীতিক ও দ্য হেগের সাবেক ডেপুটি মেয়র অংশ নেন। রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিকেরা তাঁদের নিজ নিজ ভাষায় শান্তির বার্তা ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য–সংবলিত পরিবেশনা উপস্থাপন করেন। এ অংশে সব রাষ্ট্রদূতকে অমর একুশ এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা বিষয়ে সম্যক ধারণা নিয়ে অংশ নিতে দেখা যায়। তাঁরা বাংলাদেশ সফর করে বাংলাদেশের উৎসব, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে বিশদ ধারণা অর্জনের আগ্রহ প্রকাশ করেন। ‘শান্তির ভাষা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের এই অংশটি বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের সহধর্মিণী ড. দিলরুবা নাসরিন পরিচালনা করেন।

বক্তব্য দিচ্ছেন শেখ মুহম্মদ বেলাল
বক্তব্য দিচ্ছেন শেখ মুহম্মদ বেলাল

অনুষ্ঠানে শান্তির সংস্কৃতি তুলে ধরার জন্য বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভিয়েতনাম, উরুগুয়ে, ইন্দোনেশিয়া, আফ্রিকান দেশসমূহ এবং রাশিয়ান ফেডারেশনের শিল্পীরা রঙিন ও বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক উপস্থাপনা পরিবেশন করেন। বাংলাদেশের শিশু-কিশোরেরা ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত বাংলাদেশের গৌরবময় ইতিহাসকে কেন্দ্র করে ‘আমার পরিচয়’ শীর্ষক একটি ছোট নাটিকা উপস্থাপন করে। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে পর্যায়ক্রমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে কীভাবে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জন করা হয়, সেসব কিছুই নাটকে তুলে ধরা হয়।

অতিথিরা
অতিথিরা

উপস্থিত অতিথিরা সাংস্কৃতিক সম্প্রীতি ও মেলবন্ধনকে জোরদার করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতিকে তুলে ধরার প্রয়াসে বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃক আয়োজিত এ ধরনের অনুষ্ঠানের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

অতিথিরা
অতিথিরা

উল্লেখ্য, ২১ ফেব্রুয়ারি নেদারল্যান্ডসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শেখ মুহম্মদ বেলাল ও দ্য হেগের ডেপুটি মেয়র সাসকিয়া ব্রুয়েন্স দ্য হেগে নির্মিত প্রধম শহীদ মিনার উদ্বোধন করেন। বিজ্ঞপ্তি