নাইজেরিয়ায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন

জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ
জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ

আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ায় যথাযথ মর্যাদায় মধ্য দিয়ে একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করেছে বাংলাদেশ দূতাবাস। এ উপলক্ষে ২১ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টায় রাজধানী আবুজায় দূতাবাস প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। প্রবাসী বাংলাদেশিসহ দূতাবাসের কর্মকর্তা মো. শাহ্ একরামুল হক ও কর্মচারীদের উপস্থিতিতে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ গানের সুরে সুরে পতাকা উত্তোলন ও অর্ধনমিত করেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. শামীম আহসান। এদিন হাইকমিশন প্রাঙ্গণে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়।

এরপর কোরআন তিলাওয়াত পাঠ শেষে ভাষাশহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত ও তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নীরবতা পালন করা হয়। দিনভর নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের পাশাপাশি শহীদদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা হয়। এতে সবৃস্তরের প্রবাসী বাংলাদেশি অংশগ্রহণ করেন। এ ছাড়া দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিদের অংশগ্রহণে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশিরা
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশিরা

আলোচনা সভায় রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে তাদের স্মরণ করেন। অন্য বক্তারা বলেন, ‘একুশ আমাদের শিখিয়েছে বাংলা আমার ভাষা, আমার অধিকার, আমাদের স্বাধীনতা, আমাদের সংস্কৃতি, মাতৃভাষা, শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সবকিছুকেই রক্ষার। নতুন নতুন ধারণা ও উদ্যোগ নিয়ে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে। ভবিষ্যতে দেশ পরিচালনার ভার যেহেতু তরুণ প্রজন্মকেই নিতে হবে, তাই তাদের মাঝে দেশাত্মবোধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগরূক করতে হবে।’

মো. হামিদুর রহমান বলেন, ‘সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা ভাষা অর্জন করেছি। ভাষা আন্দোলন দমন করতে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকার ঢাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে। ছাত্ররা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল করেন। সেই মিছিলে গুলি চলে। গুলিতে শহীদ হন সালাম, রফিক, বরকত ও জব্বার নাম না জানা অনেকে। ভাষাশহীদদের প্রতি হাজার সালাম। তাদের রক্ত দিয়ে কেনা এই বাংলা ভাষা। যে ভাষার শেকড় আরবি, ফারসি, ইংরেজি এমনকি হিব্রু ভাষায় থেকেও প্রাচীন।’

আলোচনা পর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রবাসী বাংলাদেশি ও দূতাবাস পরিবারের সদস্যরা অংশগ্রহণ করে দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন। এর মাধ্যমে মাতৃভাষা দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরা হয়।

অনুষ্ঠানে ২১ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের বাণী পড়ে শোনানো হয়। এ ছাড়া ঢাকার চকবাজারে সংঘটিত অগ্নিকাণ্ডে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।