মাতৃভাষার জন্য জীবন উৎসর্গ বিরল ঘটনা

দূতাবাস প্রাঙ্গণে প্রত্যুষে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণের মধ্য দিয়ে কর্মসূচির সূচনা হয়
দূতাবাস প্রাঙ্গণে প্রত্যুষে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণের মধ্য দিয়ে কর্মসূচির সূচনা হয়

মাতৃভাষার জন্য জীবন উৎসর্গ বিশ্বে বিরল ঘটনা। একুশের চেতনা আমাদের আত্মমর্যাদাশীল করেছে। লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলিতে মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আলোচনায় সভাপতির বক্তব্যে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সেখ সেকেন্দার আলী এ কথা বলেন।

রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, ‘প্রবাসে আমাদের সন্তানদের বাংলা ভাষা শেখার প্রতি আগ্রহী করে তুলতে হবে ও বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশি স্কুলসমূহে বাংলা ভাষা শিক্ষার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করতে হবে।’ তিনি বলেন, বাংলা ভাষা একটি সমৃদ্ধ ভাষা, ‘এর নিজস্ব স্বকীয়তা যেমন রয়েছে, তেমনি এর শব্দ বৈচিত্র্য এই ভাষাকে বিশ্বজনীন রূপ দিয়েছে। ফলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির চর্চায়ও আমাদের মাতৃভাষা ব্যবহার করা প্রয়োজন।’ তিনি অমর একুশের চেতনা বাস্তবায়নে নিজ নিজ অবস্থান থেকে আরও বেশি অবদান রেখে দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নিয়ে সোনার বাংলা গড়ার জন্য প্রবাসে সবাইকে মিলেমিশে কাজ করার আহ্বান জানান।

বক্তব্য দিচ্ছেন সেখ সেকেন্দার আলী
বক্তব্য দিচ্ছেন সেখ সেকেন্দার আলী

যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে ত্রিপোলির বাংলাদেশ দূতাবাস ২১ ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন করেছে। দিবসটি পালন উপলক্ষে বাংলাদেশ দূতাবাস বিস্তারিত কর্মসূচির আয়োজন করে। দূতাবাস প্রাঙ্গণে প্রত্যুষে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণের মধ্য দিয়ে কর্মসূচির প্রথম পর্বের সূচনা হয়।

অনুষ্ঠানমালার দ্বিতীয় পর্বে দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) মো. আলম মোস্তফার পরিচালনায় ও রাষ্ট্রদূত সেখ সেকেন্দার আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা। এ পর্বে ত্রিপোলিতে বসবাসরত বাংলাদেশ কমিউনিটি স্কুল ও কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকা, ছাত্রছাত্রী ও সব স্তরের প্রবাসী নাগরিকেরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়।

আলোচনায় সভায় উপস্থিতি
আলোচনায় সভায় উপস্থিতি

আলোচনা সভায় বক্তারা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন মহান ভাষা আন্দোলনে আত্মোৎসর্গকারী ভাষাশহীদ রফিক, শফিক, জব্বার, সালাম, বরকত, শফিউদ্দিনসহ নাম না জানা শহীদদের। আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন প্রকৌশলী মো. দারুল ইসলাম, মো. আমির হোসাইন এফসিএমএ ও প্রকৌশলী মো. শাহজালাল।

আলোচনার পর মহান ভাষা আন্দোলনের পটভূমি ও প্রেক্ষাপটে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘মাই মাদার টাং’ প্রদর্শন করা হয়। এতে নতুন প্রজন্ম বিশেষ করে স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা ভাষা আন্দোলন ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সম্পর্কে বাস্তব ধারণা লাভ করে।