সাত ভাষার শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

বাংলাদেশি ও ভারতীয় শিল্পীদের পরিবেশনা
বাংলাদেশি ও ভারতীয় শিল্পীদের পরিবেশনা

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে নাইজেরিয়ার রাজধানী আবুজায় অনুষ্ঠিত হয়েছে আলোচনা সভা ও বহু ভাষাভিত্তিক একটি বর্ণিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। গত বৃহস্পতিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় বাংলাদেশ হাইকমিশন মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই ভাষাশহীদ ও সম্প্রতি ঢাকার চকবাজারে সংগঠিত অগ্নিকাণ্ডে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এরপর দিবসটির ওপরে একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান তাঁর স্বাগত বক্তৃতায় বলেন, দিবসটি সারা বিশ্বে ভাষার বৈচিত্র্য উদ্‌যাপনের একটি প্রেক্ষাপট তৈরি করেছে।

নাইজেরিয়ার শিল্পীদের পরিবেশনা
নাইজেরিয়ার শিল্পীদের পরিবেশনা

এ প্রসঙ্গে তিনি মহান ভাষা আন্দোলনে ভাষাশহীদ ছাড়াও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকা তুলে ধরার সঙ্গে সঙ্গে ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তাঁর বাংলায় বক্তব্য প্রদানের বিষয়টি উল্লেখ করেন। ভাষা আন্দোলনের ঐতিহাসিক গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, এই আন্দোলনের ধারাবাহিক অর্জনই বাংলাদেশের স্বাধীনতা।

ভারতীয় শিল্পীদের পরিবেশনা
ভারতীয় শিল্পীদের পরিবেশনা

আবুজায় ইউনেসকোর ভারপ্রাপ্ত আঞ্চলিক প্রতিনিধি মিস আদেলে নিবুনা, নাইজেরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া ও প্রশান্ত বিভাগের পরিচালক নুরা আবা রিমি ও দেশটিতে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার আবেয় ঠাকুর অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

আদেলে নিবুনা দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরতে গিয়ে এ ক্ষেত্রে ইউনেসকোর ভূমিকার কথা উল্লেখ করার পাশাপাশি বাংলাদেশি তরুণদের আত্মত্যাগের কথাও তুলে ধরেন।

ভারতীয় শিল্পীদের পরিবেশনা
ভারতীয় শিল্পীদের পরিবেশনা

নুরা আবা রিমি দিবসটির মূল চেতনার উল্লেখ করে বিশ্বের বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষের মধ্যে শান্তি ও পারস্পরিক বোঝাপড়া সৃষ্টির ক্ষেত্রে ইউনেসকোর ঘোষণার তাৎপর্য তুলে ধরেন।

আবেয় ঠাকুর তার বক্তব্যে মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার মধ্য দিয়ে দিবসটির আন্তর্জাতিক মাত্রা পাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অনন্য অবদানের কথা উল্লেখ করে তিনি বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানান। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্‌যাপনের মধ্য দিয়ে বিশ্বসম্প্রদায়ের মধ্যে ভাষাগত বন্ধনের একটি অনন্য সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।

মালয়েশীয় শিল্পীদের পরিবেশনা
মালয়েশীয় শিল্পীদের পরিবেশনা

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ, চেক রিপাবলিক, ইরান, ভারত, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া (ইউরোবা ও ইংরেজি) এবং হাইকমিশনের পরিবার, স্থানীয় প্রবাসী বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যরা নাচ, গান ও কবিতা আবৃত্তির মাধ্যমে অংশগ্রহণ করেন। তাঁদের পরিবেশনা সবাইকে মুগ্ধ এবং একটি বহু ভাষা ও বহুজাতির সম্মিলনের বিরল পরিবেশের সৃষ্টি করে। অনুষ্ঠানে ইরান ও মালয়েশিয়ার কূটনীতিকদের পরিবেশনা নতুন একটি মাত্রা যোগ করে।

ইরানি শিল্পীদের পরিবেশনা
ইরানি শিল্পীদের পরিবেশনা

অনুষ্ঠানে নাইজেরিয়ার ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা, কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত, কেনিয়ার হাইকমিশনার ও ইরাকের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতসহ বিভিন্ন দেশের অনেক কূটনীতিক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধি, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বাঙালি কমিউনিটির সদস্য ও বাংলাদেশ কমিউনিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিতির একাংশ
অনুষ্ঠানে উপস্থিতির একাংশ

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে হাইকমিশনার ও তাঁর সহধর্মিণী প্যান্ডোরা চৌধুরী অংশগ্রহণকারী শিল্পীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন। সবশেষে ঐতিহ্যবাহী বাংলাদেশি খাবারে অতিথিদের আপ্যায়ন করা হয়।

অনুষ্ঠানে উপস্থিতির একাংশ
অনুষ্ঠানে উপস্থিতির একাংশ