তুরস্কে বাংলাদেশি সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক কর্মসূচি
তুরস্কের বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে দেশটির সামসুন প্রদেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে দুই দিনব্যাপী (৫-৬ মার্চ) এক বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক কর্মসূচি। দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম আল্লামা সিদ্দীকীর নেতৃত্বে দূতাবাসের একটি প্রতিনিধিদলের অংশগ্রহণে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মসূচির প্রথম দিন ৫ মার্চ সকালে কৃষ্ণসাগরীয় শহর সামসুনে অবস্থিত দেশটির অন্যতম বৃহৎ বিশ্ববিদ্যালয় Ondokuz Mayis-এ ‘মিট বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। দূতাবাসের সহায়তায় ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি ছাত্ররা এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূতসহ প্রতিনিধিদলের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সেমিনারে দূতাবাসের প্রথম সচিব ও দূতালয়প্রধান সবুজ আহমেদ বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ-তুরস্ক দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ওপর পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে সামগ্রিক উপস্থাপনা করেন। বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেক্টর অধ্যাপক ড. মেহেমেত কুরান। এ ছাড়া বাংলাদেশের ওপর নির্মিত চারটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে দেশি-বিদেশি শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বাংলাদেশি সংস্কৃতির প্রতিফলন ঘটিয়ে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শেষে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী রকমারি সুস্বাদু পিঠা উপস্থিত লোকজনের মধ্যে পরিবেশন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রায় ৪০০ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
ওই দিনের দ্বিতীয় ভাগে রাষ্ট্রদূত এম আল্লামা সিদ্দীকী সামসুন প্রদেশের গভর্নর ওসমান কায়মাকের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন। রাষ্ট্রদূত গভর্নরকে বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও অর্থনীতি এবং বাংলাদেশ-তুরস্কের মধ্যে বিদ্যমান ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্কের বিষয়ে অবহিত করেন। দেড় ঘণ্টাব্যাপী এই আলোচনায় দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করাসহ সামসুন প্রদেশের সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ সুনিবিড় করার উপায় নিয়েও আলোচনা হয়। আলোচনা শেষে রাষ্ট্রদূত গভর্নরকে বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃক তুর্কি ভাষায় অনূদিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত আত্মজীবনী ‘The Unfinished Memoirs’ উপহার দেন।
পরদিন ৬ মার্চ সামসুনের বাণিজ্য ও শিল্প চেম্বারে Trade and Investment Opportunities in Bangladesh শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে চেম্বারের ২১টি সদস্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সেমিনারের শুরুতে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক আর্থসামাজিক উন্নয়নের ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়। সূচনা বক্তব্য দেন চেম্বারের সভাপতি সালিহ জেকি মুরজিওলু। তিনি তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশের সঙ্গে তুরস্কের অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
রাষ্ট্রদূত এম আল্লামা সিদ্দীকী তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি প্রভৃতি বিষয়ের ওপর আলোকপাত করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বলিষ্ঠ ও দূরদর্শী নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার বিষয়ে বিস্তারিত উল্লেখ করেন। তিনি বাংলাদেশে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনার বিষয়ে আলোকপাত করে তুর্কি ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে সুযোগের অনুসন্ধানের জন্য আহ্বান জানান। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, আগামী দিনগুলোতে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক জোরদার হবে। উপস্থিত ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্ভাবনা অনুসন্ধানে তাঁদের আগ্রহের বিষয়টি ব্যক্ত করেন। বিজ্ঞপ্তি