গ্রিক শিশুদের কাছে বাংলাদেশকে উপস্থাপন

অনুষ্ঠানের একটি দৃশ্য
অনুষ্ঠানের একটি দৃশ্য

প্রবাসী বাংলাদেশি নতুন প্রজন্মের শিশু-কিশোরেরা বিদেশের শিশু-কিশোরদের মধ্যে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি ছড়িয়ে দিতে পারে। বাংলাদেশ ও গ্রিসের নতুন প্রজন্ম হতে পারে দুই দেশের সংস্কৃতির সেতু। এই উদ্দেশ্য সামনে রেখে গ্রিসের বাংলাদেশ দূতাবাসে দুই দেশের শিশু-কিশোরদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিশেষ বাংলাদেশ ব্র্যান্ডিং কর্মসূচি। দেশটির রাজধানী এথেন্সের হালান্দ্রি সিটি করপোরেশনের সহায়তায় বাংলাদেশ দূতাবাস গতকাল শুক্রবার (১৫ মার্চ) হালান্দ্রি এলাকার একটি উচ্চবিদ্যালয়ে এই কর্মসূচির আয়োজন করে। গ্রিসের শিশু-কিশোরদের কাছে বাংলাদেশকে তুলে ধরতে প্রবাসী বাংলাদেশি শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এই কর্মসূচির নাম দেওয়া হয় ‘বাংলাদেশ: আ কান্ট্রি অব ভাইব্র্যান্ট কালচার অ্যান্ড হেরিটেজ, রিচিং আউট প্রোগ্রাম ফর দ্য ইয়ং ফ্রেন্ডস ইন গ্রিস’।

অনুষ্ঠানের একটি দৃশ্য
অনুষ্ঠানের একটি দৃশ্য

বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে গ্রিক ছাত্রছাত্রী ও প্রবাসী বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীরা দুই দেশের জাতীয় পতাকা বিনিময় করে কর্মসূচির সূচনা করে। আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. জসীম উদ্দিন। উপস্থিত ছিলেন হালান্দ্রি সিটি করপোরেশনের শিক্ষাবিষয়ক ভাইস মেয়র মি. কুরাসিস, সংস্কৃতি ও ক্রীড়াবিষয়ক ভাইস মেয়র সার্জিও গাকাস, হালান্দ্রি স্কুলের পরিচালক কস্তানতিনোস কালিয়ারোস, বাংলাদেশিদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাংলা-গ্রিক এডুকেশন সেন্টারের পরিচালক, শিক্ষক-শিক্ষিকা, অভিভাবক ও ছাত্রছাত্রীরা।

বক্তব্য দিচ্ছেন মো. জসীম উদ্দিন
বক্তব্য দিচ্ছেন মো. জসীম উদ্দিন

রাষ্ট্রদূত জসীম উদ্দিন বলেন, নতুন প্রজন্মের শিশু-কিশোরদের নিয়ে এই আয়োজনের মাধ্যমে দুই দেশের নতুন প্রজন্ম একে অপরের দেশকে জানতে পারছে এবং সংস্কৃতির আদান প্রদানও হচ্ছে। তিনি এই আয়োজনের জন্য হালান্দ্রি সিটি করপোরেশন, হালান্দ্রি স্কুল ও গ্রিক-বাংলা এডুকেশন সেন্টারের কর্তৃপক্ষকে বিশেষ ধন্যবাদ জানান। বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করে তিনি শিশুদের প্রতি তাঁর বিশেষ স্নেহের কথা উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম সম্পর্কে আলোকপাত করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটও তিনি সবার কাছে তুলে ধরেন। ভাইস মেয়র ও হালান্দ্রি স্কুলের পরিচালক তাঁদের বক্তব্যে এই আয়োজনের জন্য দূতাবাসকে ধন্যবাদ জানিয়ে দুই দেশের সংস্কৃতি বিনিময়ের জন্য এ ধরনের কর্মসূচি অব্যাহত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে ভাইস মেয়র ও হালান্দ্রি স্কুলের পরিচালককে বিশেষ সম্প্রীতি উপহার তুলে দেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত।

দুই দেশের পতাকা হাতে অতিথি ও শিশু-কিশোরেরা
দুই দেশের পতাকা হাতে অতিথি ও শিশু-কিশোরেরা

এরপর বাংলাদেশকে তুলে ধরে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন করে প্রবাসী বাংলাদেশি শিশু-কিশোরেরা। প্রেজেন্টেশনের সার্বিক সমন্বয় ও পরিচালনা করেন দূতাবাসের প্রথম সচিব সুজন দেবনাথ। বাংলা-গ্রিক এডুকেশন সেন্টারের চারজন শিক্ষার্থী গ্রিক শিক্ষার্থীদের সামনে গ্রিক ভাষায় বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, পর্যটনসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে।

বঙ্গবন্ধুর ৯৯তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবসকে সামনে রেখে এই উপস্থাপনায় বঙ্গবন্ধু ও তাঁর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের তথ্য তুলে ধরা হয়। প্রবাসী বাংলাদেশি শিশুরা সহজবোধ্য ভাষায় গ্রিক শিশু-কিশোরদের কাছে বাংলাদেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও উন্নয়নের কথা উপস্থাপন করে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত গ্রিক শিক্ষক ও অভিভাবকেরা বাংলাদেশের ওপর শিশু-কিশোরদের উপস্থাপনার প্রশংসা করেন।

দুই দেশের পতাকা হাতে অতিথি ও শিশু-কিশোরেরা
দুই দেশের পতাকা হাতে অতিথি ও শিশু-কিশোরেরা

অনুষ্ঠানে শিশুমনে সম্প্রীতি ও বন্ধুত্বকে দৃঢ় করতে বাংলাদেশ ও গ্রিসের জাতীয় পতাকা উপহার দেওয়া হয়। দুই দেশের শিশুরা নিজ নিজ দেশের ঐতিহ্যবাহী পোশাকে তাদের দেশকে তুলে ধরে বিশেষ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করে। বাংলাদেশি শিশুরা বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী নৃত্য আর গ্রিক শিশুরা গ্রিক নৃত্য পরিবেশন করে। এরপর গ্রিক স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের অভিনীত বিখ্যাত নাট্যকার ইস্কিলাস রচিত ‘প্রমিথিউস বাউন্ড’ ট্র্যাজেডির ভিডিও প্রদর্শিত হয়। অনুষ্ঠান শেষে বাংলাদেশ ও গ্রিসের শিশু-কিশোররা দুই দেশের ঐতিহ্যবাহী খাবার বিনিময় করে। বিজ্ঞপ্তি