এডমন্টনের মাটিতে শহীদ মিনারের প্রতিশ্রুতি
কানাডার এডমন্টনে হয়ে গেল আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও স্বাধীনতা দিবসের মিলিত অনুষ্ঠান। ২১ ফেব্রুয়ারি ও ২৬ মার্চের মাঝামাঝি কোনো এক সাপ্তাহিক ছুটিতে এডমন্টনে এই মিলিত অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। বাংলাদেশ-কানাডা অ্যাসোসিয়েশন এডমন্টনের (বিসিএই) উদ্যোগে ৯ মার্চ সেজং কমিউনিটি সেন্টারে এ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
এ বছর বিসিএইর এ অনুষ্ঠানের একটু ভিন্নতা ছিল। তা হলো এ সংগঠনের ৪০ বছর পূর্তি। আর এই গুরুত্বকে সামনে রেখে অনুষ্ঠানসূচিতে ভিন্ন মাত্রার যোগ এনেছে এই সংগঠন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন এডমন্টন সিটি মেয়র ডন আইভিসন, আলবার্টার শ্রমমন্ত্রী ক্রিস্টিনা গ্রে ও কানাডার ন্যাচারাল রিসোর্সমন্ত্রী অমর্জিত সহি।
প্রতীকী প্রভাতফেরির মাধ্যমে মঞ্চে সজ্জিত শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে বিকেল সাড়ে পাঁচটায় অনুষ্ঠান শুরু হয়। অতিথিরা সবার সঙ্গে খালি পায়ে হেঁটে এই প্রভাতফেরিতে অংশ নেন। একুশ ও স্বাধীনতার সংমিশ্রণে একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা উপভোগ করেছেন উপস্থিত সবাই। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের গুরুত্বকে তুলে ধরে এডমন্টনের সিটি মেয়রের কাছে একটি প্রকৃত শহীদ মিনার স্থাপনের প্রস্তাব তুলে ধরা হয় এবং তিনি তাঁর বক্তব্যে এর পক্ষে মত দিয়েছেন। অতিথিরা দীর্ঘক্ষণ অনুষ্ঠান উপভোগ ও নৈশভোজে অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী স্বেচ্ছাসেবক, শিল্পী ও বিসিএইর কর্মকর্তারা একুশ ও স্বাধীনতা লেখা এবং শহীদ মিনারের প্রতীকখচিত শাড়ি, পাঞ্জাবি ও উত্তরীয় পরেন। সঙ্গে মন্ত্রী ক্রিস্টিনাকেও তা–ই পরিয়ে দেওয়া হয়। তিনি এটা বেশ উপভোগ করেন।
অনুষ্ঠানমালায় শিশুদের বিশেষ অংশগ্রহণ ছিল। উল্লেখ্য, কানাডায় জন্মগ্রহণকারী শিশুরা শুদ্ধ বাংলা উচ্চারণের মাধ্যমে নাটক ও সংগীত পরিবেশন করে। অনুষ্ঠানমালায় আরও ছিল বড়দের দেশের ও একুশের গান ও কবিতা। অনুষ্ঠান এতটাই মনোজ্ঞ ও উপভোগ্য ছিল যে প্রায় মধ্যরাত পর্যন্ত গড়িয়েছিল। বিদেশ-বিভুঁইয়ে থেকে সকলে দেশকে কতটা মিস করেন ও পলে পলে অনুভব করেন, সেটা বোঝা যায় এমন পরিবেশে। সেজং সেন্টার পরিণত হয়েছিল কেবলই বাংলাদেশ সেন্টার, একটি ছোট্ট পরিসরের বাংলাদেশ।