মরিশাসে শিশুদের কলকাকলিতে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী

বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ
বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস যথাযথ মর্যাদা ও উৎসবমুখর পরিবেশে উদ্‌যাপন করেছে মরিশাসের বাংলাদেশ হাইকমিশন। আজ দেশটির রাজধানী পোর্ট লুইসে এ উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রবাসী বাংলাদেশি শিশু–কিশোরদের পাশাপাশি প্রথমবারের মতো দেশটির সোসাইটি ফর দ্য ওয়েলফেয়ার অব দ্য ডেফ প্রতিষ্ঠানের চল্লিশের বেশি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুরা অংশ নেয়।

বক্তব্য দিচ্ছেন সুলেখা জেপল রাডহোয়া
বক্তব্য দিচ্ছেন সুলেখা জেপল রাডহোয়া

বর্ণিল এই অনুষ্ঠানে আয়োজন করা হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের ওপর ভিত্তি করে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, শিশুদের নিয়ে কেককাটা ও শিশুদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কার্টারবন মিউনিসিপ্যালটির মেয়র হার ওরশিপ মিসেস সুলেখা জেপল রাডহোয়া। শুরুতে প্রধান অতিথিকে নিয়ে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার রেজিনা আহমেদ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। এরপর রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীর বাণীসমূহ পাঠ করা হয়।

বক্তব্য দিচ্ছেন রেজিনা আহমেদ
বক্তব্য দিচ্ছেন রেজিনা আহমেদ

অনুষ্ঠানে সুলেখা জেপল রাডহোয়া বলেন, বাঙালি জাতির মানবাধিকার রক্ষায় বঙ্গবন্ধু ছিলেন আপসহীন এক সংগ্রামী নেতা। বাঙালি জাতির জন্য তিনি ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ। শুধু তাই নয়, শিশুদের জন্যও ছিল তাঁর সমান দৃষ্টিভঙ্গি। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সরকার শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ সব অধিকার উন্নত করতে বদ্ধপরিকর।

আরও বক্তব্য দেন মুহাম্মদ আলী জকুন। তিনি দেশটিতে প্রতিবন্ধী অধিকার ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছেন। তিনি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের প্রতি বাংলাদেশ সরকারের আন্তরিক মনোভাবের বিশেষ প্রশংসা করেন।

চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা
চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা

সমাপনী বক্তব্যে হাইকমিশনার রেজিনা আহমেদ বলেন, ‘গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ১৯২০ সালের এই দিনে যে শিশু জন্ম নিয়েছিলেন, পরিণত বয়সে তাঁর নেতৃত্বে, প্রজ্ঞা ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে তিনি হয়ে ওঠেন বাঙালি জাতির গর্বের মূর্ত প্রতীক। তিনিই জাতিকে মুক্ত করেন পাকিস্তানের শোষণ ও বঞ্চনা থেকে। প্রতিষ্ঠা করেন স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের। হয়ে ওঠেন বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা।

আঁকা ছবি হাতে শিশুরা
আঁকা ছবি হাতে শিশুরা

বাঙালি জাতির স্বাধীন আবাসভূমির স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেন বঙ্গবন্ধু। তিনি শিশুদের অত্যন্ত ভালোবাসতেন ও বিশ্বাস করতেন, শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। সে জন্যই তাঁর জন্মদিনটি শিশুদের জন্য উৎসর্গ করা হয়েছে। আমরা অত্যন্ত আনন্দিত, এ আয়োজনে আমরা মরিশাসের শিশুদের অন্তর্ভুক্ত করতে পেরেছি।’ হাইকমিশনার উপস্থিত শিশুদের বঙ্গবন্ধুর মতো আলোকিত মানুষ হওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করেন।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

পরে হাইকমিশনার উপস্থিত অতিথিসহ শিশু–কিশোরদের সঙ্গে নিয়ে কেক কাটেন এবং চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে পুরস্কার ও সনদপত্র বিতরণ করেন। অনুষ্ঠানের শেষ প্রান্তে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর ওপর রচিত গান ছাড়াও নৃত্য, কবিতা আবৃত্তি ও জাদু প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানের উল্লেখযোগ্য আকর্ষণ ছিল, প্রবাসী বাংলাদেশি নাজমুল বাসারের আঁকা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি–সংবলিত চিত্রকর্ম হাইকমিশনকে উপহার হিসেবে প্রদান।

অনুষ্ঠানে প্রবাসী বাংলাদেশি ছাড়াও মরিশাসের বিভিন্ন স্তরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি