বঙ্গবন্ধু শিশুদের ভালোবাসতেন। শিশুরাও বঙ্গবন্ধুকে আপন করে নিত। তাই এই মহান নেতার জন্মদিনকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালন করা হয়। জাপানের রাজধানী টোকিওতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবসের অনুষ্ঠানে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা শুভেচ্ছা বক্তব্যে এ কথা বলেন।
রাষ্ট্রদূত অনুষ্ঠানে সবাইকে স্বাগত জানিয়ে বঙ্গবন্ধুর কর্মময় জীবন সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করেন। তিনি শিশু-কিশোরদের উদ্দেশে আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশের সৃষ্টি হতো না। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বপ্নদ্রষ্টা ও মুক্তির দূত। রাষ্ট্রদূত শিশু-কিশোরদের বঙ্গবন্ধুর আদর্শে জীবন গড়ার ও বঙ্গবন্ধুর মতো মানবীয় গুণাবলিসম্পন্ন হয়ে দেশের উন্নয়নে আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানান।
বিনম্র শ্রদ্ধা আর অফুরন্ত ভালোবাসা নিয়ে প্রাণবন্ত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর ৯৯তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস ২০১৯ উদযাপন করেছে দেশটির বাংলাদেশ দূতাবাস। গতকাল রোববার (১৭ মার্চ) আয়োজিত বর্ণিল অনুষ্ঠানের শুরুতে আগত সব শিশু-কিশোর ও ছোট সোনামণিদের সঙ্গে নিয়ে রাষ্ট্রদূত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের আত্মার শান্তি ও মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়। পরে অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাই সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত গান। এ ছাড়া দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়।
পরে বঙ্গবন্ধুর কর্মজীবন, ত্যাগ ও সংগ্রামের ওপর উন্মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। জাপানপ্রবাসী কয়েকজন বাংলাদেশি এই আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। এ সময় তাঁরা জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার দৃপ্ত প্রত্যয়ে অনুপ্রাণিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তশালী করার আহ্বান জানান।
আলোচনার পর জাপানে বসবাসরত বাংলাদেশি শিশু-কিশোরদের কাছে বিতরণ করা জাপানি ভাষায় অনূদিত গ্রাফিক নভেল ‘মুজিব’ বইয়ের ওপর কুইজ এবং ‘বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ’ বিষয়ের ওপর যেমন খুশি তেমন সাজো প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। আনন্দঘন পরিবেশে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। বর্ণিল সাজে শিশুরা অনুষ্ঠানকে আকর্ষণীয় করে তোলে। এরপরই শুরু হয় শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
টোকিও ও আশপাশের অঞ্চল থেকে আসা প্রবাসী ও তাঁদের সন্তানদের উৎসাহ ও উদ্দীপনায় মুখর ও প্রাণোচ্ছল হয়ে উঠেছিল দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তন। জাপানে বসবাসরত শিশু-কিশোরদের জন্য আয়োজনটি প্রাণের মেলা হয়ে উঠেছিল। সেখানে গভীর শ্রদ্ধা ও পরম মমতায় তারা স্মরণ করেছে স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। শিক্ষা নিয়েছে বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শ সম্পর্কে।
অনুষ্ঠানের শেষে প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ ও র্যাফেল ড্রর আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে আসা সব শিশুকেই উপহার দেওয়া হয়। পরে রাষ্ট্রদূত বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনকে আরও আনন্দময় করতে উপস্থিত শিশুদের নিয়ে কেক কাটেন। এ সময় প্রবাসী ও দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি