বঙ্গবন্ধু ছিলেন পর্বতসম ব্যক্তিত্ব

চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শিশু–কিশোর
চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শিশু–কিশোর

সমগ্র জীবনব্যাপী বঙ্গবন্ধু তাঁর পর্বতসম ব্যক্তিত্ব, সাহসিকতা ও অপরিসীম ভালোবাসা নিয়ে সাধারণ জনগণের কাতারে জীবন কাটিয়েছিলেন। তাঁর স্বপ্ন ও পরিকল্পনাজুড়ে ছিল কেবল বাঙালি জাতির উন্নয়ন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে তিনি তা বাস্তবায়নে পর্যাপ্ত সময় পাননি। বঙ্গবন্ধুকে হারানো বাঙালি জাতির জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।

নেদারল্যান্ডসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকীর আলোচনা অনুষ্ঠানে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শেখ মুহম্মদ বেলাল এ কথা বলেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুর বলিষ্ঠ ও দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং বাঙালি জাতির প্রতি তাঁর অপরিসীম মমত্বের কথা তুলে ধরেন। তিনি উপস্থিত সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় শামিল হওয়ার আহ্বান এবং এর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে ভূমিকা রাখার অনুরোধ করেন। বঙ্গবন্ধুর নীতি ও আদর্শ পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্যও তিনি আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রদূত বেলাল অনুষ্ঠানে উপস্থিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরুণ কর্মকর্তাদের বঙ্গবন্ধুর জীবন ও দর্শন থেকে শিক্ষা নিয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি গ্রামগঞ্জে সাধারণ মানুষের কাছে যাওয়ার, তাদের জানার আহ্বান জানান। যাতে করে তারা সাধারণ জনগণের ভাবনাচিন্তাকে ধারণ করে দেশের উন্নয়নে নিজেদের প্রস্তুত করতে পারেন।

বক্তব্য দিচ্ছেন শেখ মুহম্মদ বেলাল
বক্তব্য দিচ্ছেন শেখ মুহম্মদ বেলাল

তিনি জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে শিশুদের শুভেচ্ছা জ্ঞাপন ও তাদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর অকৃত্রিম ভালোবাসার বিষয়টি অবহিত করেন। তিনি উপস্থিত শিশু–কিশোরদের বঙ্গবন্ধুর জীবনী পড়ার জন্য এবং বঙ্গবন্ধুকে তাদের জীবনে আদর্শ ব্যক্তিত্ব হিসেবে অনুসরণের উপদেশ দেন।

নেদারল্যান্ডসের বাংলাদেশ দূতাবাস বঙ্গবন্ধুর ৯৯তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস ২০১৯ যথাযথ মর্যাদায় উদ্‌যাপন করেছে। দিবসটি পালনের নিমিত্তে দ্য হেগে গতকাল (১৭ মার্চ) দূতাবাস কর্তৃক ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রবাসী বাংলাদেশিরা তাঁদের পরিবার ও সন্তানদের নিয়ে অংশ নেন।

ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরুর পর এ দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। পরে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর সঙ্গে শাহাদতবরণকারী পরিবারের সদস্যদের আত্মার মাগফিরাত, দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধি এবং সম্প্রতি ঢাকার চকবাজারে সংঘটিত মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডে নিহত ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

আলোচকেরা
আলোচকেরা

আলোচনাপর্বে জয়নাল আবেদীন ও মোস্তফা জামান এবং দেশটির Clingendael Institute-এ প্রশিক্ষণরত বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরুণ কর্মকর্তাদের মধ্যে মাহবুবুর রহমান প্রমুখ অংশ নেন। তাঁরা পাকিস্তানি অন্যায় নিপীড়ন, নির্যাতনের বিরুদ্ধে বাঙালি জনগোষ্ঠীকে একতাবদ্ধ করতে বঙ্গবন্ধুর গতিশীল নেতৃত্ব এবং এর ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালে ৯ মাসব্যাপী রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের কথা তুলে ধরেন। বক্তারা বাঙালি জাতির কঠিনতম সময়ে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব, তাঁর সময়োপযোগী দিকনির্দেশনা ও তাঁর ত্যাগের কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ভিশন ২০২১ ও ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়নে তাঁরা সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

দিবসটি উপলক্ষে শিশু–কিশোরদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। শিশু–কিশোরেরা বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের ওপর বিভিন্ন চিত্রাঙ্কন ও কুইজ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। রাষ্ট্রদূত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শিশু–কিশোরদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন। পরে তিনি উপস্থিত শিশু–কিশোরদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের কেক কাটেন।

পরবর্তী সময়ে সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। দূতাবাস পরিবার ও স্থানীয় বাংলাদেশি কমিউনিটির শিশুরা এ পরিবেশনায় অংশ নেয়। বিজ্ঞপ্তি